Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

ওবায়দুল কাদেরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারির আবেদন

Obaydul Qader
[publishpress_authors_box]

জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অভিযোগে করা মামলায় পলাতক সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, হাছান মাহমুদসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “ইন্টারপোলের মাধ্যমে ১০ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করতে আইজিপি বরাবরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”

এর আগে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা আলাদা মামলায় গত ১৭ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারত যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।  

শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সাবেক মন্ত্রীদের ফেরত আনতে ইন্টারপোলের রেড নোটিসে আসলে কোনও কাজ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পুলিশের এই আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড নোটিস জারি করলেও কাউকে গ্রেপ্তার করায় সাহায্য করতে পেরেছে, তার নজির নেই।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামেও ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করিয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি, ওই রেড নোটিসও ইন্টারপোল বেশিদিন রাখেনি।

বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তাজুল ইসলাম জানান, ওবায়দুল কাদেরসহ আরও যাদের বিরুদ্ধে রেড এলার্ট জারির আবেদন জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।

চিফ প্রসিকিউটর আরও জানান, জুলাই-আগস্টে গণহত্যার ঘটনায় ২২টি মামলায় মোট ১৪১ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেসামরিক ব্যক্তি ৭০ জন, পুলিশ ৬২ জন এবং সামরিক ৯ জন। তাদের মধ্যে ৫৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ৮৭ জন পলাতক রয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি বিশেষায়িত সংস্থা উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, পুনর্গঠিত তদন্ত সংস্থা ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করে। তদন্ত সংস্থায় বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ২৪ জন, যারা সবাই পুলিশ বাহিনী থেকে প্রেষণে বা চুক্তিভিত্তিক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। আর প্রসিকিউশন টিমে চিফ প্রসিকিউটরসহ মোট ১৭ জন প্রসিকিউটর রয়েছেন।

মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ভিডিও ও ডিজিটাল সাক্ষ্য সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান আছে। তদন্ত শেষ বা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এমন মামলা রয়েছে চারটি। আর তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনানে গৃহীত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যদের প্রসিকিউটর আব্দুস সোবহান তরফদার, মিজানুল ইসলাম, গাজী এম এইচ তামিম, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাইমুম রেজা, আব্দুস সাত্তার পালোয়ান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারত যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা দেড় দশকের শাসনের অবসান ঘটে। তারপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।

তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাতিল করলেও দিল্লি তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধে সাড়া দেবে না বলে সে দেশের কূটনৈতিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত