কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে রড-সিমেন্ট নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদীর মোহনায় দুটি ট্রলারসহ ৬ মাঝি-মাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সাংবাদিকদের এই খবর দেন একটি ট্রলারের মালিক এবং টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ।
তিনি বলেন, তার মালিকানাধীন এসবি রাসেল এবং আব্দুর রবের মালিকানাধীন এসবি ফারুক নামে দুটি সার্ভিস ট্রলার রড ও সিমেন্ট নিয়ে সেন্টমার্টিন নেওয়ার সময় মঙ্গলবার দুপুরে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে ছিনতাই করে নিয়ে যায় আরকান আর্মির সদস্যরা। ট্রলার দুটিতে ছয়জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন।
বিজিবি, কোস্টগার্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে ঘটনাটি জানিয়েছেন রশিদ।
তবে টেকনাফ -২ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এবিষয়ে তাদের কিছু কেউ জানায়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তারা।
কোস্টগার্ডের সেন্টমার্টিন স্টেশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিষয়টি জানার পর আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
মিয়ানমারে কয়েক বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশ লাগোয়া রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি সরকারি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। বিদ্রোহীরা এখন সেখানে কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। সেই সঙ্গে সাগরে তাদের উৎপাতও বেড়েছে।
সম্প্রতি নাফ নদীতে মাছ ধরার সময় ২০ বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল আরাকান আর্মি। পরে বিজিবির মধ্যস্থতায় তারা ছাড়া পেয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নাফ নদী আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ এক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি।
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতে মো. নূর রশিদ (২৫) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা মৃত মো. সলিমুল্লাহর ছেলে।
আনোয়ার প্রজেক্ট এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে মাদকের বড় একটি চালান পাচারের খবর পেয়ে অভিযানে গিয়েছিল বিজিবি।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, “নাফ নদীর জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রম করে কাঠের নৌকা যোগে সন্দেহজনক তিন ব্যক্তিকে কূলের দিকে আসতে দেখে বিজিবির সদস্যরা থামার জন্য নির্দেশ দেন। এতে নৌকায় থাকা দুই ব্যক্তি লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে মিয়ানমার দিকে পালিয়ে যায়।
“পরে নৌকায় থাকা এক ব্যক্তিকে বিজিবির সদস্যরা আটক করতে সক্ষম হন। এসময় নৌকাটি তল্লাশি করে পাটাতনের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় প্লাস্টিকের একটি ব্যাগে ১ লাখ ইয়াবা পাওয়া যায়। এছাড়া দেশে তৈরি ১টি বন্দুক ও ১টি গুলিও উদ্ধার করা হয়।”
রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এপিবিএন।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ-৫ ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাদের ধরা হয় বলে জানান, ৮ এপিবিএন এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি ) মো. আমির জাফর।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-১ ব্লকের আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আজিজ (২২) এবং একই ক্যাম্পের এফ-১ ব্লকের মো. হোসেনের ছেলে ইকবাল হোসেন (২৫) ও সি-২ ব্লকের বক্তার আহমদের ছেলে মোহাম্মদ এনাম (১৯)।
এডিআইজি আমির জাফর বলেন, বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ-৫ ব্লকের লার্ণিং সেন্টারের সামনে কতিপয় দূর্বৃত্ত অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থানের খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ৪/৫ জন সন্দেহজনক লোক দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। আটকদের দেহ তল্লাশি করে পাওয়া যায় ম্যাগজিনসহ ১টি বিদেশি পিস্তল ও ৩টি গুলি।