মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের তিন উপকূলীয় শহর- মংডু, রামরি ও রাথেডংয়ে সামরিক জান্তার বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা জোরদার করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। এতে রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। আরাকান আর্মির অব্যাহত আক্রমণের মুখে মিয়ানমারের সেনারা তাদের অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলো রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীর জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।
রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়া আরাকান আর্মি এই ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সেরই অংশ।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স বলছে, মংডু, রামরি ও রাথেডংয়ে নিজেদের অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলো রক্ষা করতে মিয়ানমারের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী সমন্বিতভাবে ঘাঁটিগুলোর আশেপাশে ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে।
এদিকে, আরাকান আর্মি জানিয়েছে, ভেতরে থাকা সৈন্যরা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত তারা জান্তার লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে যাবে।
তারা বলছে, রামরি শহরে জান্তার সেনারা জল, স্থল ও আকাশপথে একযোগে বোমা হামলা চালাচ্ছে, যা শহরটিকে রাখাইন রাজ্যে সবচেয়ে বেশি বোমা হামলার শিকার হওয়া শহরে পরিণত করেছে। রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের রাথেডং শহরেও জান্তার সেনাবাহিনী ভূমি ও সমুদ্র থেকে ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে।
ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সে থাকা জাতিগত তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর একটি আরাকান আর্মি। গত বছরের অক্টোবরের শেষ দিকে এই আরাকান আর্মি মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান চালায়। এরপর গত ১৩ নভেম্বর আরাকান আর্মির যোদ্ধারা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্য এবং চিন রাজ্য সংলগ্ন পালেতোয়া শহরে ব্যাপক হামলা চালায়।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান রাজ্যে জান্তার সেনাবাহিনীকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করার ধারাবাহিকতা রাখাইন রাজ্যেও ধরে রেখেছে আরাকান আর্মি। গত ১৩ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত তারা রাখাইন রাজ্যে জান্তার ১৭০টি ঘাঁটি ও চৌকির পাশাপাশি ছয়টি শহরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী চীন রাজ্যের একটি শহরও বর্তমানে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।