ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী হলেও সুনিধি নায়েক যেন বাংলাদেশেরই। কেননা জনপ্রিয় গায়ক অর্ণবের জীবনসঙ্গী তিনি। সেই সূত্রে গানেও বেশ পরিচিতি পেয়েছেন বাংলাদেশে। দুই বাংলার জনপ্রিয় এ শিল্পীর জীবনে যেন হঠাৎ কালোছায়া নেমে এসেছে।
শুক্রবার ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সাইবার জালিয়াতির শিকার হয়েছেন তিনি। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর পরিচয়ে তাকে ও তার বাবার প্রাণনাশের হুমকি দেয় দুর্বৃত্তরা।
ভয় পেয়ে সুনিধিও তাদের পাতা ফাঁদে পা দেন। হাতে তুলে দেন নগদ পাঁচ লাখ টাকা।
বাংলাদেশের বধু হলেও দুই দেশেই পালাক্রমে বসবাস তার। বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের প্রাক্তন ছাত্রী এবং কর্মসূত্রে পূর্বপল্লীতে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকেন তিনি। এর মধ্যে বুধবার বাড়িতে একাই ছিলেন সুনিধি। সেই দিনই অপরিচিত মানুষদের বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমকে সুনিধি জানান, বুধবার তার কাছে ফোন আসে। বলা হয়, সুনিধি নাকি নরেশ গোয়েল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আর্থিক তছরুপের ঘটনায় জড়িত। এমনকি তার নামে নাকি একটি ক্রেডিট কার্ডও তোলা হয়েছে। এর পরেই সুনিধিকে বলা হয় তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কথোপকথন এইভাবে শুরু হলেও পরে তাকে ও তার বাবাকে খুনের হুমকি দিতে থাকে অভিযুক্তরা। খুনের হুমকি পেয়ে বাধ্য হয়ে বৃহস্পতিবার ৫ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সুনিধি।
এ প্রসঙ্গে সুনিধি বলেন, “ওরা আমার ও বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য জানে। একটা গল্প বানিয়ে বলে, আর্থিক তছরূপের মামলায় আমি নাকি ধরা পড়েছি! খুনের হুমকিও দেওয়া হয় আমাদের। বাড়ির বাইরে এক অজ্ঞাতপরিচয়কে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। ওরা ৬-৭ মাস ধরে নজরদারি চালাচ্ছিল আমার উপরে। এ-ও বলেছে, আমি যদি মুখ খুলি তা হলে নরেশ গোয়েল আমাকে মেরে ফেলবে। হিন্দি এবং ইংরেজিতে কথা বলছিল ওরা।”
তার ভাষ্যে, “আমি কাউকে মেসেজ বা ফোন করলেও নাকি তারা জানতে পারছেন। ওরা এ-ও বলেন যে আমার ছবি ডার্ক ওয়েবে ছেড়ে দেবেন। আমাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেওয়াই ওদের উদ্দেশ্য ছিল। আমি গত তিন দিন ধরে খুব ভয়ে ছিলাম। এখন তদন্ত চলছে। আমি টাকা ফেরত চাই। এ ছাড়াও অপরাধীদের শাস্তি চাই। তার সঙ্গে নিরাপত্তাও চাই।”
জানা যায়, সুনিধির এই ভাড়াবাড়ির ১০০ মিটারের মধ্যে শান্তিনিকেতন থানা ও এসডিপি অফিস অবস্থিত। এই কারণে নতুন ধরনের এই অপরাধটি জানাজানি হতেই শান্তিনিকেতনে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে শান্তিনিকেতন থানায়।