Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার কি বুমেরাং হবে মোদীর জন্য

২০১১ সালের এক দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন থেকে উত্থান হয় কেজরিওয়ালের।
২০১১ সালের এক দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন থেকে উত্থান হয় কেজরিওয়ালের।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে বৃহস্পতিবার দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করায় অবাক হওয়ার কিছু নেই। কয়েক মাস আগে, গত নভেম্বরে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএপি) দিল্লির ঘরে ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, তাদের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ, না কি কারাগারে থেকেই সরকার পরিচালনা করা উচিৎ?

৫৫ বছর বয়সী কেজরিওয়াল এক দশকেরও বেশি আগে একটি দুর্নীতিবিরোধী প্ল্যাটফর্ম থেকে ভারতের সবচেয়ে নতুন দলগুলোর একটি আম আদমি পার্টি (এএপি/আপ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ক্ষমতাসীন বিজেপি ও প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে হটিয়ে দিল্লিতে টানা সাফল্যের পাশাপাশি দলটি অল্প সময়ের মধ্যেই জাতীয় পর্যায়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।

তবে গত বছর থেকে কেজরিওয়াল ও তার দলের কয়েকজন নেতা দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি। ভারতের শক্তিশালী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছে।

দিল্লি সরকারের মদনীতি সংক্রান্ত একটি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আম আদমি পার্টির তৃতীয় নেতা কেজরিওয়াল। নীতিটি মদের বাজারের নিয়ন্ত্রণ বেসরকারি বিক্রেতাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া সম্পর্কিত। মদ বিক্রেতাদের লাইসেন্স দেওয়ার ওই (২০২১-২২) নীতিটি পরে বাতিল করা হয়েছিল। তবে এর মধ্যেই অভিযোগ উঠে, কেজরিওয়ালের সরকার ঘুষের বিনিময়ে অনেককে লাইসেন্স দিয়েছে।

দুর্নীতির এই মামলায় আম আদমি পার্টির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ও দিল্লির সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীষ সিসোদিয়া এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে। দলটির আরেক নেতা সঞ্জয় সিংও একই মামলায় গত বছরের অক্টোবরে গ্রেপ্তার হন।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গত বৃহস্পতিবার ইডি দপ্তরে হাজিরা দিতে বলা হয়। কিন্তু তা না করে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তবে হাইকোর্ট তার আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টে যান।

তবে হাইকোর্ট কেজরিওয়ালের আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরই ইডির তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। ইডি কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে হাজির হন কেজরিওয়ালের বাসভবনে। বাড়িতে ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশি চালানোর পর কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে ইডি। শুক্রবার কেজরিওয়ালকে আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চায় ইডি। তবে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

কেজরিওয়াল তার বিরুদ্ধে অভিযোগের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ইডি তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া তারা বিরুদ্ধে জারি করা সমনকে উদ্দেশ্যপ্রসূত এবং বেআইনি বলেও অভিহিত করেছেন।

আগামী ১৯ এপ্রিল ভারতে জাতীয় নির্বাচন শুরু হবে। তার মাত্র এক মাস আগে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করা হলো। কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টিও (এএপিও) কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিজেপি বিরোধী ২৭ দলীয় জোটে যোগ দিয়েছে।

২০১১ সালে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কেজরিওয়াল ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। মাত্র এক বছরের মধ্যেই আম আদমি পার্টি বড় রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠে।

২০১৩ সাল থেকে দলটি দিল্লির প্রাদেশিক নির্বাচনে একটানা বিজয়ী হয়ে আসছে। কেজরিওয়াল প্রথমবার ২০১৩ সালে শেষদিক থেকে ২০১৪ সালের প্রথমদিক পর্যন্ত মাত্র ৪৯ দিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এরপর ২০১৫ সাল থেকে তিনি টানা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তারপর পাঞ্জাবেও জয় পায় আম আদমি। দলটি বর্তমানে পাঞ্জাবেরও প্রাদিশক শাসক দল।

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজধানীর সাতটি সংসদীয় আসনের মধ্যে চারটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে আম আদমি। ২০১৯ সালে ৭টি আসনেই বিজেপির কাছে হেরেছিল দলটি। তবে ২০২০ সালের বিধান সভা নির্বাচনে দিল্লির ৭০টি আসনের ৬৭টিতেই জয় পেয়েছিল।

অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উত্থান

কেজরিওয়াল ভারতের খড়গপুরের বিখ্যাত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) থেকে পাস করা একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পড়াশোনা শেষে তিনি আয়কর বিভাগে একজন সরকারি অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন।

পরিবর্তন নামে একটি সংস্থায় কাজ করে তিনি জনপ্রিয়তা পান। সংস্থাটি ভারতের রাইট টু ইনফরমেশন (আরটিআই) বা তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহারকে জনপ্রিয় করে তোলে। ওই আইনে জনগণকে সরকারের কাছে থাকা তথ্য পাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়।

আরটিআই ব্যবহার করে সরকারি প্রকল্পগুলো নিরীক্ষণ ও অডিট করতে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন এবং স্থানীয় কমিউনিটিকে পদক্ষেপ গ্রহণে অনুপ্রাণিত করেন কেজরিওয়াল। এজন্য ২০০৬ সালে তিনি র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পান। এই পুরস্কারটিকে এশিয়ার নোবেল বলা হয়।

দুর্নীতির তদন্তের জন্য নাগরিক ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠার দাবিতে সামাজিক ক্রুসেডার আন্না হাজারের ২০১১ সালের অনশনের প্রতিও সমর্থন দেন কেজরিওয়াল। ভারতকে আলোড়িত করা আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়েই দুর্নীতি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেজরিওয়াল গঠন করেন আম আদমি পার্টি।

২০১৩ সালে কংগ্রেস প্রার্থীকে পরাজিত করে কেজরিওয়াল প্রথমবারের মতো দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে বিধানসভায় ন্যায়পাল বিল পাস করতে ব্যর্থ হয়ে ৪৯ দিন পর তিনি পদত্যাগ করেন। ২০১৪ সালের জুনে বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আসে।

তার পদত্যাগ কৌশলগতভাবে সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল। এর ফলে তিনি একজন নীতিবান রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি পান, যিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মতো বড় পদও ছেড়ে দিতে পারেন।

এতে তার দলের জনপ্রিয়তা আরও অনেক বেড়ে যায়। ২০১৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধী দল কংগ্রেসকে পরাস্ত করে বিশাল বিজয় পান কেজরিওয়াল। ২০২০ সালেও আম আদমি পার্টি দিল্লির বিধান সভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়।

দরিদ্রদের নেতা হিসেবে তার ইমেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেশিরভাগই সাধারণ ঢিলেঢালা শার্ট এবং ট্রাউজার পরিহিত কেজরিওয়াল মূলত রিকশাচালক, শ্রমিক এবং দিল্লির বস্তির নারীদের কাছ থেকে সমর্থন পেয়েছিলেন।

অন্যান্য রাজ্যে দলের সম্প্রসারণের জন্য তার প্রচেষ্টা মিশ্র ফলাফল অর্জন করে। ২০১৪ সালে তিনি দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশের একটি প্রাচীন হিন্দু পবিত্র শহর বারাণসীর সংসদীয় এলাকায় মোদির কাছে বিশাল ব্যবধানে হেরে যান। রাজ্যটি থেকেই সংসদে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আইনপ্রণেতা আসে।

স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল, বিদ্যুৎ ও পানির বিলে ভর্তুকি দিয়ে আম আদমি পার্টি পাঞ্জাব ও মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটের কিছু অংশেও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে। এই ভর্তুকি দরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি উপকৃত করে।

ফেব্রুয়ারিতে কেজরিওয়াল দাবি করেন, শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস নয় বরং তার দলই হবে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, বিশেষত ২০২৯ সালের নির্বাচনের জন্য। তবে জাতীয় জনমত সমীক্ষা অবশ্য এখনও ভবিষ্যদ্বাণী করছে, কংগ্রেসই আসন্ন নির্বাচনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হবে।

বিজেপির বিরুদ্ধে একটি ঐক্যফ্রন্ট উপস্থাপন করতে আগ্রহী কংগ্রেস সহ বেশিরভাগ বিরোধী দল কেজরিওয়ালের পেছনে সমবেত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গ্রেপ্তার কেজরিওয়ালের দল এবং বিরোধীদের শক্তিশালি করতে সহায়ক হতে পারে।

থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ সোসাইটি অ্যান্ড পলিটিক্সের পরিচালক এ.কে. ভার্মা বলেন, “এই গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ নাও হতে পারে। কারণ কেজরিওয়ালের এই নেতিবাচক ঘটনাকে নিজের পক্ষে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা রয়েছে।”

ক্ষমতার লড়াই

আম আদমি পার্টির দাবি, বিধানসভায় প্রভাবশালী অবস্থান সত্ত্বেও বিজেপি তাদের দিল্লি সরকারকে উৎখাত করতে চায়। এজন্যই দেশের অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি তাদের দলের নেতাদেরও রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমে হয়রানি করছে।

এই সংস্থাগুলো দক্ষিণের তিনটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধেও অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে। তবে বিজেপি এসব তদন্তের পেছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অস্বীকার করেছে।

কেজরিওয়ালের দল একাধিক তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে।

সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কেজরিওয়ালের সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াকে গ্রেপ্তার করে। মদ নীতি কার্যকর হওয়ার পরে কিছু বিক্রেতার প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে।

একইভাবে আম আদমির শীর্ষ বিধায়ক সঞ্জয় সিংকে গত অক্টোবরে গ্রেপ্তার করা হয় মদ ব্যবসায়ীদের মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগে, যারা ওই নীতি থেকে লাভবান হয়েছিল।

মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তার তৃতীয় মেয়াদে কেজরিওয়াল নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি দিল্লিতে আম আদমি পার্টির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়। এতে কেজরিওয়ালও হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি আরও ঝুঁকে পড়তে থাকেন।

এছাড়া দিল্লিতে নির্বাচনী সাফল্যের জন্য শুধু দুর্নীতিবিরোধী বক্তব্যই যথেষ্ট ছিল না, বলছেন বিশ্লেষকরা। দলটির জনপ্রিয়তা এখন দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ ও জলের মতো কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলোর উপর অনেক বেশি নির্ভর করে।

আসন্ন ভোটে আম আদমি পার্টির কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলো দলটিকে ফের বিজয় এনে দেয় কি না, তা এখন দেখার বিষয়। কেজরিওয়াল ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে যতগুলো সমন জারি করা হবে, আমি ততগুলো স্কুল খুলব।”

এর আগেও কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে একাধিক সমন জারি করেছিল ইডি। কিন্তু কেজরিওয়াল সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নির্বাচনী সমাবেশে বারবার বলেছেন, তিনি যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তাহলে পৃথিবীতে সৎ মানুষ একজনও নেই।

বিতর্কিত মদনীতি

কেজরিওয়ালের দল বলেছিল, নতুন মদনীতি কালোবাজারি বিক্রি রোধ করবে, রাজস্ব বাড়াবে এবং এমনকি শহর জুড়ে মদের লাইসেন্স বিতরণ নিশ্চিত করবে।

তবে বিরোধীদের অভিযোগ, এই নীতির ফলে কিছু বিক্রেতা একজোট হয়ে ব্যবসা করেছে এবং লাইসেন্স পেতে ঘুষ দিয়েছে। আম আদমি পার্টি শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

বিজেপি সরকার নিযুক্ত দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে স্যাক্সেনা ওই নীতির বিষয়ে তদন্তের জন্য সিবিআইয়ের (কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা) কাছে আবেদন করেছিলেন। তদন্তের পর ইডি অর্থ পাচার রোধ আইনের আওতায় একটি মামলা করে।

সাক্সেনা অভিযোগ করেন, বেসরকারি মদ ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য আম আদমি পার্টি নীতিটিকে কাজে লাগাচ্ছে। এরপর নীতিটি প্রত্যাহার করা হয়।

সাক্সেনাকে নিয়োগ দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার। আবগারি নীতি নিয়ে বিতর্কের আগেও তিনি একাধিকবার দিল্লি সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন।

মোদি ও তার বিজেপি সহকর্মীরা বলেছেন, সরকার আইন অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে স্বাধীনতা দিয়েছে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সংস্থাগুলো তাদের অন্যায়ভাবে টার্গেট করছে।

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেজরিওয়াল মিত্র ভগবন্ত মান রয়টার্সকে বলেছেন, “এটা স্পষ্ট যে মোদী সরকার আমাদের নেতাকে আঘাত করতে বদ্ধপরিকর কারণ তিনি মোদীর রাজনীতি এবং নীতির ত্রুটিগুলো প্রকাশ করেছেন।”

কিছু বিশ্লেষক বলছেন, কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার মোদী এবং বিজেপির জন্য রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ প্রমাণিত হতে পার। এটি বিজেপির টার্গেট করা নেতাদের প্রতি জনগণের সহানুভূতি জাগিয়ে তুলতে পারে এবং সকলের ওপর ক্র্যাকডাউনের যৌথ হুমকির বিরুদ্ধে বিরোধীদের বৃহত্তর ঐক্যে একত্রিত করতে পারে।

রাজনৈতিক ভাষ্যকার অসীম আলি আল জাজিরাকে বলেছেন, “কেজরিওয়ালের ওপর খড়গহস্ত হয়ে মোদী সরকার কেবল নিজেকে কর্তৃত্ববাদী ও অহংকারী হিসেবে উপস্থাপনের ঝুঁকিতে পড়েনি বরং বিজেপি ও আম আদমির পার্টির মধ্যে দোদুল্যমান ভোটারদেরও হারানোর ঝুঁকিতেও পড়ে গেছে। তারা এখন কেজরিওয়ালের প্রতি সহানুভূতি থেকে আম আদমি পার্টিকেই ভোট দেবে অথবা এমনকি কংগ্রেসকেও ভোট দিতে পারে।”

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শুক্রবার দিল্লিসহ পাঞ্জাব, গুজরাট, হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরেও বিক্ষোভ হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাটের আহমেদাবাদ, রাজকোট, সুরাট ও ভাবনগরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্স

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত