Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

নিরাশা নিয়ে ফিরে গেলেন আশা

সকাল সন্ধ্যার কার্যালয়ে আশা ও মোগান
সকাল সন্ধ্যার কার্যালয়ে আশা ও মোগান
[publishpress_authors_box]

অর্ধ শতক পরে নরওয়ে থেকে এসে মাকে খুঁজে পাওয়ার আনন্দে ভেসেছিলেন এলিজাবেথ ফিরোজা ফাজালসেট। কিন্তু ডেনমার্ক থেকে আসা আশা ওয়েলসকে ফিরতে হলো নিরাশ হয়ে।

জন্মস্থান খুলনায় গিয়েও নিজের জন্মদাত্রীকে খুঁজে পাননি তিনি। সেই বেদনা নিয়েই শনিবার সকালে একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন আশা।

তবে বলে গেলেন, এখনও হাল ছাড়ছেন না তিনি। মাসহ পরিবারের সন্ধান পেতে আবারও বাংলাদেশে আসার পরিকল্পনা আছে তার।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই এতিম অনেক শিশুকে দত্তক নেন ইউরোপে বিভিন্ন দেশের মানুষ। এই শিশুদের দলে এলিজাবেথ ও আশাও ছিলেন।

এলিজাবেথ
৪৮ বছর পর মায়ের দেখা পেয়েছেন এলিজাবেথ ফিরোজা ফাজালসেট

এলিজাবেথ বড় হয়েছিলেন নরওয়েতে। সেখানে বিয়ের পর চার সন্তানের মা হন। ২০১৩ সালে একবার মায়ের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

তবে এবার আর হননি। সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পদ্মার চর গ্রামে গিয়ে পান মায়ের দেখা। অবসান ঘটে তার দীর্ঘ অপেক্ষার।

খুলনা থেকে ঢাকার এতিমখানা হয়ে ১৯৭৬ সালে আশার ঠাঁই হয়েছিল নরওয়ের পাশের দেশ ডেনমার্কে। সঙ্গী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার গড়লেও ২০০৪ সালে পরিবারের খোঁজে প্রথম বাংলাদেশে আসেন আশা। সেবারও হতাশাকে সঙ্গী করে তাকে ফিরতে হয়েছিল।

২০ বছর পর গত ৯ মার্চ আবারও বাংলাদেশে আসেন আশা। এরপর ২০ দিনের বেশি সময় নিজের পরিবারের খোঁজে ছুটে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে।

ঢাকার ইসলামপুরের যে এতিমখানায় তিনি ছিলেন, সেখান থেকে শুরু করে খুলনার অনাথ আশ্রমেও গিয়েছেন। কথা বলেছেন সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের সঙ্গেও। কিন্তু কেউ তাকে পরিবারের খোঁজ দিতে পারেনি।

এবার আশার সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিলেন তার জীবনসঙ্গী মোগান ফক। ইসলামপুর রোডের যে এতিমখানা থেকে আশাকে দত্তক দেওয়া হয়েছিল, সবার আগে সেখানেই গিয়েছিলেন তারা। ‘মিশনারিস অব চ্যারিটি (মাদার তেরেজা) শিশু ভবন’ নামের ওই এতিমখানায় গিয়ে তারা আশাকে দত্তক দেওয়ার কিছু দলিলপত্রও খুঁজে পেয়েছেন।

মোগান ফক বলেন, “এতিমখানার রেজিস্ট্রার খাতায় আমরা আশার নাম পেয়েছি। জানতে পেরেছি, ডলি মণ্ডল নামে এক নারী আশাকে খুলনার অনাথ আশ্রমে রেখে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে আশাকে ঢাকার ইসলামপুরে স্থানান্তর করা হয়।”

ডলি মণ্ডল ছোট্ট আশাকে খুলনার রেলস্টেশন রোডে খুঁজে পেয়েছিলেন বলে তখন জানিয়েছিলেন। তিনি আশাকে সোনাডাঙ্গা মেইন রোডের ‘নির্মল হৃদয় শিশু ভবনে’ নামে একটি এতিমখানায় রেখে এসেছিলেন।

ফিরে যাওয়ার আগে মোগান বলেন, “আমরা ডলি মণ্ডলকে খুঁজতে খুলনাতেও গিয়েছি। সেখানে আমরা চার দিন ছিলাম। কিন্তু তাকে আমরা খুঁজে পাইনি। তাই আশার পরিবারকে খুঁজতে আবারও বাংলাদেশে আসার ইচ্ছে আছে আমাদের। যতদ্রুত সম্ভব আমরা আবারও বাংলাদেশে আসতে চাই। খুঁজে বের করতে চাই আশার পরিবারকে।”

এদিকে বিভিন্ন নথিপত্র থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পরপর অনেক শিশুকে দত্তকের আড়ালে পাচারও করা হতে পারে। পঞ্চাশ বছর পরে সেসব ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত