এশিয়া থেকে প্যারিস অলিম্পিকের কোটা পাওয়ার শেষ টুর্নামেন্ট এবারের এশিয়ান অলিম্পিক বাছাই। শেষ টুর্নামেন্ট বলে এই আসরে সুযোগটাও বেশি দেখছে বাংলাদেশ। কারণ এর মধ্যেই শক্তিশালী দলগুলো বিভিন্ন ইভেন্টে তাদের কোটা নিশ্চিত করে ফেলেছে।
চীন ও ভারত ছেলে ও মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের দুটি করে কোটা এরই মধ্যে পেয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ৫ জানুয়ারি। শেষ হবে ১৮ জানুয়ারি। আজ বাংলাদেশের পিস্তল ইভেন্ট শেষ হয়েছে, যেখানে বাছাই পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্বেই উঠতে পারেনি কোনো শুটার। তাই কোটা প্লেস পাওয়ার সম্ভাবনাও শেষ তাদের।
যেসব দলের এরই মধ্যে কোটা নিশ্চিত হয়ে গেছে তারা পদক মঞ্চে উঠলেও কোটার সুযোগ থাকছে না। নিয়ম অনুসারে সুযোগ পাবে তাদের পরে স্থানপাওয়া দেশ। জাকার্তায় প্রতি ইভেন্টে দুটি করে কোটা মিলবে। চীন, ভারত ছাড়াও জাপান ও কাজাখস্তান ছেলেদের ইভেন্টে এর মধ্যে একটি করে কোটা নিশ্চিত করেছে।
বাস্তবতা হচ্ছে পিস্তলে কোটার আশা কখনোই করেনি বাংলাদেশ। পিস্তলে গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক সাফল্যও সেভাবে নেই। ২০১৬ গুয়াহাটি এসএ গেমসে ৫০ মিটারে সোনা জেতেন শাকিল আহমেদ। এরপর ২০১৮ গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে শাকিলের হাত ধরে আসে রুপা। সেই শাকিল এখন শুটিং ছেড়ে কোচ। নতুনদের নিয়ে তাই খুব বেশি ভরসাও করতে পারছে না ফেডারেশন।
পিস্তল ছেড়ে বাংলাদেশের সব নজর আপাতত রাইফেলে। জাকার্তা থেকে দলের সহকারি কোচ গোলাম শফিউদ্দিন সকাল সন্ধ্যাকে বলছিলেন, “আমরা পিস্তলে ভালো কিছু করবো সেই আশা ছিল না। পিস্তল শুটারদের এনেছি নতুন কোচের পরামর্শে। অনেক দিন আমাদের পিস্তল কোচ ছিল না। নতুন কোচ এসে ওদের অনুশীলন করিয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই শুটারদের কি অবস্থা সেটা দেখতে চেয়েছিলেন কোচ।”
কোচ যে জাকার্তায় ভালো কিছু দেখেছেন তা মোটেও বলা যাবে না এই তিন জনের স্কোর দেখে। ছেলেদের বিভাগে যিনি সর্বশেষ হয়ে বাছাই পর্ব থেকে ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছেন উজবেকিস্তানের সেই শুটার মুখাম্মাদ কামালভ মেরেছেন ৫৭৭। বাংলাদেশের দুই শুটারের মধ্যে সবচেয়ে ভালো করা আলিফ নূর কামালভের চেয়েও পিছিয়ে ১৩ পয়েন্টে!
পিস্তলে মেয়েদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। এই ইভেন্টে বাছাই পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্বে যাওয়া শুটার পাকিস্তানের তালাত কিসমালা। তিনি করেছেন ৫৭৫ পয়েন্ট। এর মানে কিসমালার চেয়েও ২৩ পয়েন্ট দূরে আনজিলা।
কোচ গোলাম শফিউদ্দিন রাইফেল নিয়েই আশার কথা শোনালেন, ‘বড় দলগুলো লড়াইয়ে না থাকায় অবশ্যই এটা আমাদের জন্য সুযোগ। এখন লড়াইটা হবে ইরান, কাজাখস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ার মতো দলগুলোর বিপক্ষে। আমাদের শ্যুটারদের সামর্থ্য আছে এখানে ভালো করার।’
১০ মিটার এয়ার রাইফেলে বাংলাদেশ ছেলেদের দলে অংশ নিচ্ছেন অভিজ্ঞ রবিউল ইসলাম, অর্ণব সারার ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অভিষেক হতে যাওয়া জিদান হোসেন। মেয়েদের রাইফেলে কামরুন্নাহার কলি, শায়রা আরেফিন ও জাফিরা খানম। ১০ জানুয়ারি ছেলে ও মেয়েদের রাইফেলের দুটি ইভেন্ট।
কোটার লড়াইয়ে যাওয়ার আগে শেষ আট অর্থাৎ ফাইনাল রাউন্ড নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশের শ্যুটারদের। মূল চ্যালেঞ্জটা সেখানেই। ভালো স্কোর করেই জায়গা করে নিতে হবে শেষ আটে।
শফিউদ্দিনের আশা ভালো কিছুই হবে, “ সবার আগে সেরা আটে থাকতেই হবে। আর ফাইনাল রাউন্ডে যেতে হলে অন্তত ৬২৯ স্কোর করতে হবে। কামরুন্নাহার কলি, শায়রা আরেফিন বা জাফিরা খানম সেই স্কোর করেছে অনেকবার। এখন এই আসরে সেটিই আবার করে দেখানোর পালা তাদের।”