অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারত অযাচিত উদ্বেগ প্রকাশ করে যাচ্ছে। ভারতের মাটিতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর অসংখ্য নির্মমতা ঘটছে। অথচ তা নিয়ে তাদের সংকোচ বা অনুশোচনা নেই।
এসব ‘ভারতের দ্বিচারিতা’ উল্লেখ করে তা ‘নিন্দনীয় ও আপত্তিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ও জামিন না দেওয়ার ঘটনায় গত ২৬ নভেম্বর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত।
এরপর শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ (৬৪ দশমিক ১ শতাংশ) মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের চেয়ে বেশি নিরাপত্তা দিতে পারছে। ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার জরিপে এটি দেখা গেছে।
ফেইসবুক পোস্টে গত অক্টোবরে হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার প্রসঙ্গ টেনে আসিফ নজরুল বলেন, “আমরা নিজেরাও দেখেছি, ছাত্র সংগঠন, মাদ্রাসা ও রাজনৈতিক দলসহ বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রতিক দুর্গাপূজার সময় কীভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য কাজ করেছে। সর্বশেষ চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নির্মম ও উস্কানিমূলকভাবে হত্যার পরও বাংলাদেশের মুসলমানরা অসীম সংযম ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে।”
সবশেষে তিনি লিখেছেন, “এরপরও বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর ভারতের অযাচিত উদ্বেগ প্রকাশ থেমে নেই। ভারতের নিজের মাটিতে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটে চলেছে। অথচ সেটা নিয়ে তাদের সংকোচ বা অনুশোচনা নেই। ভারতের এই দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর।”
একই দিনে ফেইসবুকে আরেক পোস্টে বিদেশে শ্রমিক শোষণ বন্ধে সরকারের উদ্যোগ সম্পর্কে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “বিদেশে শ্রমিক শোষণ বন্ধের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কিছুটা অগ্রগতি হোক, তখন জানাবো।”
সরকারি কাজে তিনদিন কাতারে ছিলেন জানিয়ে পোস্টে তিনি লিখেছেন, “প্রবাসী ভাই-বোনদের মূল অভিযোগ পাসপোর্ট-এনআইডি-পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সংক্রান্ত বিষয়ে এবং সেখানে কর্মসংস্থান ও পারিশ্রমিক নিয়ে। এর মধ্যে পাসপোর্টের বিষয়ে ডিজির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পাসপোর্ট সরবরাহ শুরু হবে।”
পাসপোর্ট আর এনআইডি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, “আমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পাসপোর্ট ফি কমানো বা কমহারে সবার জন্য একরকম করার কথা বলেছি। এছাড়া পাসপোর্ট আর এনআইডি সহজীকরণের বিষয়ে কী করা যায় তা আইন মন্ত্রণালয় থেকে খতিয়ে দেখব।”