সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান পেল ১৪ রানের লিড। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা ১৬ হারের ক্ষত কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা জাগে। কিন্তু তৃতীয় দিনের শেষ বিকালে সব এলোমেলো। ১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে আরেকটি হারের চোখ রাঙানি তাদের দিকে।
আজ (শুক্রবার) সিডনি টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং দিয়ে। আমের জামালের দুর্দান্ত বোলিংয়ে স্বাগতিকদের ৩০০ রানের নিচে অলআউট করেছে পাকিস্তান। জামালের ক্যারিয়ারসেরা ৬ উইকেটে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ২৯৯ রানে। লিড পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেও জশ হ্যাজেলউডের এক ওভারে সর্বনাশ সফরকারীদের। পাকিস্তান দিনশেষ করেছে ৭ উইকেটে ৬৮ রানে। লিড ৮২ রানের।
হ্যাজেলউডের তাণ্ডব
দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের শুরুটা ভালো ছিল না। স্কোরবোর্ডে রান না উঠতেই হারায় আব্দুল্লাহ শফিকের উইকেট। মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড পাকিস্তানি ওপেনার। খানিক পর হ্যাজেলউডের আঘাত। এই পেসারের প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন অধিনায়ক শান মাসুদ (০)।
ওপেনার সাইম আয়ুবকে সঙ্গে করে ওই ধাক্কা সামলানোর চেষ্টা করেন বাবর আজম। যদিও তাদের প্রতিরোধ বেশিক্ষণ টিকেনি। ট্র্যাভিস হেডের বলে বাবর ২৩ রানে ফিরতে ভাঙে তাদের জুটি।
দিনের খেলা তখন শেষ হওয়ার অপেক্ষায়। ওই সময়ই হ্যাজেলউডের তাণ্ডব। ২৪তম ওভারে তার শিকার ৩ উইকেট। সাউদ শাকিলকে (২) দিয়ে শুরু, এরপর নাইটওয়াচম্যান সাজিদ খান (০) ও আগা সালমানকে (০) ফিরিয়ে ধ্বংসের খেলায় মাতেন ডানহাতি পেসার। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে হ্যাজেলউডের শিকার ৪ উইকেট।
চতুর্থ দিন শুরু করবেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (৬*) ও জামাল (০*)।
এর আগে কোনও উইকেট না হারিয়ে ৬ রান দিয়ে দিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার খেলছেন ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট। শেষটা রাঙাতে সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। দাঁড়িয়েও গিয়েছিলেন। তবে ৩৪ রানে বিদায়ী টেস্টের প্রথম ইনিংস শেষ হয় এই ওপেনারের। তার ওপেনিং সঙ্গী উসমান খাজা করেন ৪৭ রান। তাকে বিদায় করেই উইকেট উৎসব শুরু জামালের।
পরের সময়টা বেশ ভালোমতোই সামলেছেন মার্কাস লাবুশেন ও স্টিভেন স্মিথ। যদিও প্রত্যাশা মেটাতে পেরেছেন সামান্য। স্মিথ মাটি কামড়ে থাকার চেষ্টা করেও আউট ৩৪ রানে। অন্যদিকে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করে লাবুশেন বিদায় নেন ৬০ রানে।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মিচেল মার্শের। ৫৪ রান করে জামালের শিকার এই ব্যাটার। পরে অস্ট্রেলিয়ার লেজ ছেঁটে দিয়ে ৬৯ রানে জামাল নেন ৬ উইকেট।
জামালের কীর্তি
অভিষেকেই প্রচারের আলো নিজের দিকে টেনেছেন জামাল। অস্ট্রেলিয়াতেই হয়েছে টেস্ট অভিষেক। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই তার ৫ উইকেটের ঘর পূরণ হলো। সিডনিতে ৮২ রানের পর ৬ উইকেট নেওয়ার পথে নতুন কীর্তিও গড়েছেন তিনি। কিংবদন্তি ইমরান খানের পর দ্বিতীয় পাকিস্তানি হিসেবে এক ম্যাচে ৬ উইকেট ও অন্তত ৮০ করেছেন জামাল। ১৯৮৩ সালে ভারতের বিপক্ষে এক ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১১৭ রান করেছিলেন ইমরান।
আরেকটি রেকর্ডেও নাম তুলেছেন জামাল। পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসের অভিষেক সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া বোলার এখন ২৭ বছর বয়সী এই পেসার। সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে এখনও বোলিং করেননি তিনি। এরপরও জামালের নামের পাশে যোগ হয়েছে ১৮ উইকেট। যা অভিষেকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ।