পদত্যাগ করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংবিধান অনুযায়ী ৫ বছরের জন্য নিয়োগ পেলেও দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করল ‘আউয়াল কমিশন’ নামে পরিচিত বর্তমান নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এসময় নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব ও নির্বাচব কমিশনার মো. আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই কমিশনার রাশেদা সুলতানা ও নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন না। দুই কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে না থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কমিশনই পদত্যাগ করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ী সিইসি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, “আমিসহ মাননীয় কমিশনারগণ দেশের পরিবর্তিত বিরাজিত অবস্থায় পদত্যাগ করতে মনস্থির করেছি। আমরা অদ্যই পদত্যাগপত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতির সমীপে উপস্থাপনের নিমিত্তে কমিশনের সচিব মহোদয়ের হাতে দেব।”
পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল পদত্যাগ পত্রে সই করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল যখন সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন নির্বাচন ভবনের সামনে অনেকে বিক্ষোভ করছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ শেষ করেই হাবিবুল আউয়াল ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে নিজ বাসার উদ্দেশ্যে চলে যান।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের মধ্য দিয়ে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগের যে হিড়িক চলছে, তাতে সর্বশেষ যুক্ত হলো নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের পর প্রথম আইনের মাধ্যমে গঠিত কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয় ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন– অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম রাশিদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব আনিছুর রহমান।
এই কমিশনের অধীনে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়, যে নির্বাচনে জিতে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ। তবে সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা সরকারের সহযোগী সবাইকে পদ থেকে হটানোর আহ্বান রয়েছে। আউয়াল কমিশন ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ’ ছিল বলে সমালোচনাও রয়েছে।