বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহসভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।
ঢাকার পল্টন মডেল থানায় করা এক হত্যাচেষ্টা মামলায় বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক বিমান তরফদার।
রিপনুল হাসানের আইনজীবী পল্লব বাড়ৈ তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. জিয়াদুর রহমানের আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
শুনানিতে পল্লব বাড়ৈ বলেন, “আসামির রাজনৈতিক কোন পদ পদবি নেই। রিমান্ড আবেদনে আসামির রাজনৈতিক যে পরিচয় দেখানো হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ ভুয়া। পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এই পদ সৃষ্টি করেছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। ”
আদালতসূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের গুম-খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। দেশের সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণ অধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল এই মহাসমাবেশের ডাক দেয়। সেখানে ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের এলোপাথাড়ি গুলিতে বাদী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী গণ অধিকারপরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়। মামলায় ৫৫ নং এজাহারনামীয় আসামি রিপনুল হাসান।
পল্লব বাড়ৈ বলেন, “মামলার এজাহারের ঘটনার সঙ্গে আসামির কোনও সম্পৃক্ততা নেই। এ ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনভাবেই ভিকটিমকে হত্যার চেষ্টা করেননি। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং অন্য কাউকে সহায়তাও করেননি। তার রিমান্ড বাতিল করে যে কোন শর্তে জামিনে মুক্তি দিলে তিনি পলাতক হবেন না। আমরা তার জামিন প্রার্থনা করছি।’
শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেয়।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজারে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে রিপনুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সমিতির সহসভাপতিকে ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের’ প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় বাজুস। বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়ের নামে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।