পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমের প্রদেশ বালুচিস্তানে একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। ট্রেনের শত শত যাত্রীকে জিম্মিও করেছে তারা।
দেশটির স্বাধীনতাকামী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে দাবি করেছে, ছয়জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এ দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
দেশের কোয়েটা থেকে পেশোয়ারে যাচ্ছিল ট্রেনটি। পথে বোলান জেলার কাছাকাছি এক জায়গায় জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে হামলা চালায় বিএলএ।
রেলওয়েসূত্রে জানা গেছে, ওই ট্রেনের নয়টি বগিতে যাত্রী ছিল ৪০০ জনেরও বেশি।
ট্রেন ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিএলএ জানিয়েছে, প্রত্যন্ত সিবি অঞ্চলে ট্রেনে হামলা চালানোর আগে ট্র্যাকে বোমা হামলা চালানো হয়। ট্রেনটি এখন বিএলএর নিয়ন্ত্রণে।
বিবৃতিতে ছয়জন সেনাকর্মকর্তাকে হত্যার কথা জানিয়ে বলা হয়, জিম্মিদের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষীরাও ছিল। নিরাপত্তা বাহিনী অপারেশন শুরু করলে এসবের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল তারা।
জিম্মিদের ছাড়াতে অভিযান চালালে পরিণতি আরও ‘মারাত্মক’ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
তবে নিহতের সংখ্যা বিষয়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক কোনও মন্তব্য জানা যায়নি। স্থানীয় পুলিশের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, হামলায় ট্রেনচালকসহ অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।
কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত সিবি শহর। বালুচিস্তান প্রদেশের মুখপাত্র শহীদ রিন্ড আলজাজিরাকে জানান, ট্রেনে ‘তীব্র গোলাগুলির’ খবর পাওয়ার পরে সিবি শহরের বড় বড় হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
কোয়েটা থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত ১৬০০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করে যাত্রীবাহী এই ট্রেন। পুরো সফর শেষ করতে সময় লেগে যায় ৩০ ঘণ্টা। পথে ট্রেনটি থামে ৩০ বার।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, বালুচিস্তানের সরকার এই মধ্যে উদ্ধারকারীদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স ও নিরাপত্তারক্ষীদের পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও এই হামলা বা হতাহতের সংখ্যা নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
৮ নাম্বার টানেলে অস্ত্রধারীরা ট্রেনটি থামায় বলে নিশ্চিত করেন সেখানকার রেলওয়ের কন্ট্রোলার মুহাম্মদ কাশিফ। ট্রেনের যাত্রী ও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
কাচি বোলানের জেলা পুলিশ কর্মকর্তা রানা মুহাম্মদ দিলাওয়ার সংবাদমাধ্যম ডনকে বলেন, পাহাড়কে ঘিরে থাকা একটি সুড়ঙ্গের ঠিক আগেই ট্রেনটি আটকে আছে, অন্যদিকে এন-৬৫ হাইওয়েতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
তবে পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কর্মকর্তাদের বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানান শহীদ রিন্ড।



