Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৪

আমাদের শান্ত হয়ে যাওয়া উচিত: নাসির উদ্দিন খান

nasir uddin lead
Picture of রুদ্র হক

রুদ্র হক

বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ইতিমধ্যে দর্শক পরিচিতি পেয়েছেন নাসির উদ্দিন খান। যদিও শো-বিজের দর্শকের কাছে তার প্রথম পরিচয় ছিল ‘অ্যালেন স্বপন’।

পর্দায় অধিকাংশ সময় নেতিবাচক চরিত্রে তাকে দেখা গেলেও বাস্তবে তিনি অসম্ভব দিলখোলা। মানুষের হৃদয়ে মিশে যেতে পারেন অনায়াসে। সে দক্ষতা অভিনয়েও কাজে লাগিয়েছেন। তাইতো কোটি ভক্তের কাছে তিনি কখনো ‘অ্যালেন স্বপন’, কখনো ‘কায়সার’। এবার তিনি সেজেছেন ‘বলী’।

চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনপ্রিয় বলিখেলাকে ভিত্তি করে নির্মিত এ চলচ্চিত্রটি শনিবার মুক্তি পেয়েছে কানাডার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। দেশের বড়পর্দাও অপেক্ষা করছে চলচ্চিত্রটির জন্য।

‘বলী’ সিনেমা মুক্তির সূত্র ধরেই চট্টগ্রাম থেকে মুঠোফোনে কথা হলো ‘নাসির বদ্দা’র সঙ্গে।

সকাল সন্ধ্যা: ‘বলী’ রিলিজ হয়েছে কানাডাতে, দেশে কবে প্রেক্ষাগৃহে আসবে ?

নাসির উদ্দিন খান: দেশে কবে রিলিজ হবে জানি না। এবছরও রিলিজ হতে পারে, সঠিক তথ্যটি ডিরেক্টর বলতে পারবেন।

সকাল সন্ধ্যা: বলী চরিত্রটিতে অভিনয় করতে পেরে আপনার কেমন লেগেছে?

নাসির উদ্দিন খান: বলীর চরিত্রটি নিয়ে প্রথম ইমোশনের জায়গাটা হচ্ছে এটা চাটগাঁইয়া ভাষার সিনেমা। এটা যেহেতু আমার আঞ্চলিক ভাষা, এর প্রতি আমার একটা অন্যরকম দুর্বলতা আছে। তাই, এ ভাষার কোন সিনেমার অফার পেলে আমি খুশি হয়ে যাই। যখন এটার অফার পেয়েছি, খুশি হয়ে গেছি। দ্বিতীয়ত, চট্টগ্রাম অঞ্চলে অসংখ্য অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব এর জন্ম হয়েছে। তাদের মাজার আছে। এখানে তাদের একটা অবস্থান আছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে এ অঞ্চলেই তার প্রভাবটা বেশি। সিনেমায় এ সংশ্লিষ্ট মিথিক্যাল নানা কিছু আছে। তৃতীয়ত, এখানে আমাদের ঐতিহ্যবাহী একটা খেলা আছে, বলী খেলা। আমি এ খেলার সাথে পরিচিত। সব মিলে চরিত্রটি অনেক ভালো লেগে যায়।

সকাল সন্ধ্যা: চরিত্রটি তুলতে কোন সমস্যা হয়েছে?

নাসির উদ্দিন খান: এ সিনেমার টিমটা ইউনিক ছিল, এর কারণ এখানে ক্যামেরার সামনে যারা ছিলেন তারা সবাই চট্টগ্রামের। সবার সাথে বন্ডিংটা এত চমৎকার ছিল যে, পনেরো দিনের শুটিং সাড়ে বারো দিনে শেষ করতে পেরেছি। কিন্তু বিষয়টা এমন না যে, এটা সহজ ছিল। সমুদ্রের কাছে শুটিং করতে হয়েছে। রোজা ছিল, আশংকা ছিল মানুষ শুটিংয়ে কোন বাধা দিবে কিনা! কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি।

সকাল সন্ধ্যা: গতবছর আপনার দু’টি চলচ্চিত্র ও দু’টি ওয়েব সিরিজ রিলিজ হয়, এ বছর এখন পযন্ত চলচ্চিত্র ‘ওমর’ ছাড়া কিছু রিলিজ হয়নি…

নাসির উদ্দিন খান: হ্যাঁ, গতবছর বেশকিছু কাজ মুক্তি পেয়েছিল। এ বছর এখন পর্যন্ত নতুন কিছু আসেনি। আসবে কিনা তাও জানি না।

সকাল সন্ধ্যা: দর্শক কিন্তু মিস করছে আপনাকে…

নাসির উদ্দিন খান: আমি মনে করি, প্রেম-ভালোবাসার বিষয়গুলো বাঁচিয়ে রাখা যায়। দর্শক কিন্তু হৃদয়ে রাখে। অনুভূতিও প্রকাশ করে। আমার যারা দর্শক সবাই যে আমার সব কাজ দেখে ফেলেছে এমন না। অনেকেই এখনও দেখছে। সেদিনও একজন কমেন্ট করে প্রশংসা জানালো। এটা কিন্তু স্পর্শ করে। ফলে তাদের সাথে আমার যোগাযোগটা আছে। এ বছর দেশের একটা বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন আসলো। অনেক মানুষ মারা গেল। এসব কারণেই আসলে কোথাও কোন কাজ রিলিজ হচ্ছে না। আশা করি হবে।

সকাল সন্ধ্যা: দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

নাসির উদ্দিন খান: আমাদের মানুষগুলো খুব সহজ সরল। আপনি তাদের যা বোঝাবেন তাই বুঝবে। দেশের জন্য খুব খারাপ লাগে। আমাদের বিগত সরকারগুলো খুব বিভক্তির চর্চা করে গেছে। প্রতিটা ক্ষেত্রে এত ডিভাইডেশান। ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি দিয়ে আমাদের দেশটাকে শেষ করে দিয়ে গেছে। এখন একজন আরেকজনকে দোষ দেই। এ তাকে গালি দেই ও তাকে দোষ দেই- এসব চলছে।

সকাল সন্ধ্যা: এ অবস্থা থেকে কিভাবে উত্তরণ ঘটতে পারে বলে আপনার মনে হয়?

নাসির উদ্দিন খান: আমাদের শান্ত হয়ে যাওয়া উচিত। আমরা খুব হাইপার হয়ে গেছি। যে কোন ঘটনা তিল থেকে তাল হয়ে যাচ্ছে। সেদিন আমিও মব জাস্টিসের সাক্ষী হতে গিয়েছিলাম প্রায়। রাস্তায় সামান্য একটা রিক্সার সাথে একটা গাড়ির লেগে যাওয়া নিয়ে প্রায় বিশ মিনিট জ্যাম গলিতে। শেষমেষ তারা থামলো, কিন্তু আরেকটা বাইকার যাওয়ার সময় গাড়িওয়ালাকে কী যেন বললো, তাতে আবার ঝগড়া বেঁধে গেল। আমি দেখলাম ঝগড়াটা সিরিয়াস পর্যায় চলে যাচ্ছে। শেষমেষ আমি গিয়ে তাদের গিয়ে তাদের ছাড়ালাম। না পারতে গেলাম। এটা কিন্তু প্রতিদিনই ঘটছে চারপাশে। এ জন্যই বলছি, আমাদের শান্ত হয়ে যাওয়া উচিত।

সকাল সন্ধ্যা: আবার একটু আপনার অভিনেতা সত্তার কাছে ফিরি। আপনি ইন্ডাস্ট্রিতে আসার আগ পর্যন্ত মিডিয়াতে নায়ক-নায়িকা কেন্দ্রিক ছবি হতো, এখন আপনাকে মাথায় রেখে চরিত্র নিয়ে কাজ হচ্ছে। অন্যরকম গল্প উঠে আসছে। এতে নিজের কতটুকু কৃতিত্ব আছে বলে মনে করেন?

নাসির উদ্দিন খান: আসলে আমি যেরকম চাই, সেরকম একটা মোমেন্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছি। করোনা পরবর্তী সময়ে ওটিটির উত্থান ঘটলো। ঘরে বসে মানুষ কন্টেন্ট দেখার প্রতি আগ্রহ বাড়লো। আমাদের নির্মাতারাও অন্যরকম স্বাধীন কাজ করার সুযোগ পেল। দর্শকরাও ভালো কাজ চায়। ফলে, আমিও হয়তো কাজ করার সুযোগটা পেয়েছি। কিন্তু সবসময় যে সুযোগ পেয়েছি তাও কিন্তু না। আমি অডিশন দিয়ে রিজেক্টও হয়েছি- এমন ঘটনাও আছে। এটা আমার জন্য কোন ব্যাপার না। আমি টিকলে টিকলাম, না টিকলে টিকলাম না। কিন্তু ভালো কাজ হচ্ছে।আরেকটু বলবো?

সকাল সন্ধ্যা: বলেন…
নাসির উদ্দিন খান: এই সময়ে আমার চারপাশে যে কারিগরগুলো দেখতে পাচ্ছি অর্থাৎ, জিনিয়াস জিনিয়াস ডিরেক্টর, স্ক্রিপ্টরাইটার, সিনেমাটোগ্রাফার, এমনকি কস্টিউম ডিজাইনার হয়ে কাজ করছে, দারুণ মেধাবী। এ জন্য নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয়।

সকাল সন্ধ্যা: নতুন কী কাজ আসছে?
নাসির উদ্দিন খান: রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের একটা সিনেমায় কাজ করলাম। সিনেমার নাম ‘মাস্টার’। এপ্রিলে শুটিং শেষ হয়েছে। দারুণ হয়েছে কাজটা। সুমিত খুব দুর্দান্ত নির্মাতা। খুব গোছানো কাজ হয়েছে। আরেকটা কাজ করা হয়েছে। ডিরেক্টরের অনুমতি নেই কিছু বলার। এছাড়াও অনেক কাজ আছে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে করেছিলাম ওয়াহিদ তারেকের ‘আলগা নোঙর’, সেটাও রিলিজ হয়নি এখনও।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত