কেনাকাটায় নগদ টাকার ব্যবহার কমাতে ভোক্তার ওপর থেকে বাংলা কিউআরের দুই ধরনের খরচের চাপ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশ অনুযায়ী, এখন থেকে এই চাপ বহন করবে ব্যাংকগুলো, যা তাদের সিএসআর ব্যয় হিসেবে গণ্য হবে।
এজন্য বাংলা কিউআরের পারসোনাল রিটেইল অ্যাকাউন্ট বা পিআরএ হিসাবধারী ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের জন্য মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট (এমডিআর) ও ইন্টারব্যাংক রিইমবার্সমেন্ট ফি (আইআরএফ) সংক্রান্ত ব্যয় সিএসআর হিসেবে দেখাতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিএসআর হলো করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিটি বা করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা।
২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এভাবেই ব্যয় সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর ফলে এখন থেকে কেনাকাটার সময় কার্ডে লেনদেনের জন্য কার্ডধারীকে বা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি কোনও ব্যয় করতে হবে না। ক্রেতা কেবল পণ্যের দাম পরিশোধ করবেন, বিক্রেতাও আদায় করা দামের পুরোটাই গ্রহণ করতে পারবে।
বর্তমানে কার্ডে লেনদেনে প্রায় ২ থেকে আড়াই শতাংশ ফি পরিশোধ করতে হয়। যার মধ্যে মার্চেন্ট ডিসকাউন্ট রেট (এমডিআর) শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ আদায় করতে পারে ব্যাংক।
যদি কার্ডটি অন্য ব্যাংকের ইস্যু করা হয় তাহলে ওই ব্যাংক পায় শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ আইআরএফ। এই ফি’র সঙ্গে যোগ হয় মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)।
অনেক ক্ষেত্রে এই ফি পরিশোধ করতে হয় বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে। কেননা, ক্রেতারা পণ্যের দামের বেশি অর্থ খরচ করতে রাজি থাকেন না। ফলে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রকৃত মূল্য কমে যায়। এ কারণে অনেক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কার্ডে লেনদেন না করে নগদ টাকায় লেনদেন করতে আগ্রহ দেখায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন, বাংলাদেশ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় রেখে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে আনতে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশের সব লেনদেনের ৩০ শতাংশ এবং ২০৩১ সালের মধ্যে ১০০ শতাংশ অনলাইন বা ক্যাশলেস করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
যা অর্জনে প্রান্তিক ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ডিজিটাল পেমেন্ট অবকাঠামোর আওতায় আনতেই ভোক্তার ওপর থেকে বাংলা কিউআরের দুই ধরনের খরচ কমানো হলো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা সার্কুলারের ওপর ভিত্তি করে পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট থেকে আরেকটি সার্কুলার জারি করা হলেই এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থাপিত আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তির পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম হলো বাংলা কিউআর। এতে যুক্ত যেকোনো ব্যাংক ও মোবাইল ফাইনান্সিয়্যাল সার্ভিসের গ্রাহক কিউআর কোডের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারে।
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি এক সার্কুলারের মাধ্যমে বাংলা কিউআর কোড পেমেন্ট সিস্টেম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক।