শুরুতে উইকেট এনে দিলেন তাসকিন আহমেদ। যেমন শুরু আসলে চেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে অস্বস্তি তৈরি হয় নাজমুল হোসেন শান্তদের ওপর। সেটি কাটিয়ে উঠতেই আবার চালকের আসনে বাংলাদেশ। এরপর আর পথ হারায়নি। দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানদের চেপে ধরে জয় নিশ্চিত করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
শনিবার (৯ নভেম্বর) শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানকে ৬৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা ফেরায় শান্তরা।
প্রথম ম্যাচ হারায় সিরিজ বাঁচাতে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। বাঁচা-মরার এই লড়াইয়ে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান করে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্যে আফগানিস্তান ৪৩.৩ ওভারে অলআউট হয় ১৮৪ রানে।
শারজার প্রথম ম্যাচ বিবেচনায় বাংলাদেশের ২৫২ রান লড়াকু স্কোর। তারপরও বোলিংয়ে ভালো শুরু প্রয়োজন ছিল। সেটিই এনে দেন তাসকিন। আগের ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ব্যর্থ রহমানউল্লাহ গুরবাজ। স্লিপে সৌম্য সরকারের চমৎকার ক্যাচ হয়ে মাত্র ২ রান করে বিদায় নেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার।
ওই ধাক্কা দারুণভাবে সামলে ওঠে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় উইকেটে ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতাল ও রহমত শাহ এগিয়ে নেন স্কোর। ৫২ রানের জুটি গড়ে অস্বস্তি বাড়াতে থাকেন বাংলাদেশের ওপর। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। ৩৯ রান করা আতালকে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ বানান বাঁহাতি স্পিনার।
এরপরও পুরোপুরি স্বস্তি ফেরেনি। কারণ হাশমতউল্লাহ শহিদিকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান রহমত। তাদের জুটি থেকে আসে ৪৮ রান। হাশমতউল্লাহকে ফিরিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান যে মোমেন্টাম এনে দেন, সেটি ধরে রেখে আফগানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। এই সময় ১ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
হাশমতউল্লাহ ১৭ রানে বিদায় নেওয়ার পরের ওভারেই জোড়া আঘাত। নাসুমের বলে রানের খাতা খোলার আগেই আউট আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ২ বল পর ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট রহমত। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটার হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়েছেন। ৭৬ বলে ৫ বাউন্ডারিতে খেলেন ৫২ রানের ইনিংস।
পরের সময়টায় আবার একটু নাটকীয়তা। মোহাম্মদ নবি ও গুলবাদিন নাইবের ব্যাটে আফগানদের আশার বেলুন ফুলে ওঠে। যদিও সেই বেলুন চুপসে যেতে সময় লাগেনি। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলেছিলেন গুলবাদিন। শরিফুল ইসলামের বলে পরপর চার-ছক্কা হাঁকান। তবে এই শরিফুলের শিকার হয়েই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ২৫ বলে ২৬ রান করে।
এরপরও আশার মশাল ধরেছিলেন নবি। আগের ম্যাচে ধ্বংসস্তূপ থেকে আফগানদের বাঁচিয়েছিলেন তিনি। এবার আর পারেননি। গুলবাদিনের আউটের পরপরই ১৭ রান করে বিদায় নেন নবি। এরপর রশিদ খানের ১৪ রান যা হারের ব্যবধান কমিয়েছে আফগানিস্তানের।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার নাসুম। বাঁহাতি স্পিনার ৮.৩ ওভারে ২৮ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। মোস্তাফিজুর রহমান ৩৭ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজও একই রান খরচায় পেয়েছেন ২ উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন ৭৬ রানের ইনিংস খেলা শান্ত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫২/৭ (শান্ত ৭৬, জাকের ৩৭*, সৌম্য ৩৫, নাসুম ২৫, তানজিদ ২২, মিরাজ ২২, হৃদয় ১১; খারোটে ৩/২৮, রশিদ ২/৩২, গাজানফার ২/৩৫)।
আফগানিস্তান: ৪৩.৩ ওভারে ১৮৪ (রহমত ৫২, আতাল ৩৯, গুলবাদিন ২৬, নবি ১৭, হাশমতউল্লাহ ১৭, রশিদ ১৪; নাসুম ৩/২৮, মোস্তাফিজ ২/৩৭, মিরাজ ২/৩৭)।
ফল: বাংলাদেশ ৬৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: নাজমুল হোসেন শান্ত।