দিন শেষে স্পষ্ট রানটাই কম হয়ে গেছে। এখনকার ক্রিকেটে মেহেদি হাসান মিরাজের ১০৬ বলের হাফসেঞ্চুরি খুবই বেমানান। সেটা দলের বিপদে তোই হাল ধরা ইনিংস হোক না কেন। নেতৃত্ব পাওয়ার প্রথম ম্যাচে তার কচ্ছপগতির ওই ইনিংসে জয়ের জন্য বাংলাদেশের ২৪৫ রান ঠিক যথেষ্ট ছিল না।
তবুও মিরাজের স্লথ গতির ইনিংস ঢেকে যেতো। সেঞ্চুরি করা রহমানউল্লাহ গুরবাজকে আউটের সুযোগ গুলো কাজে লাগানো গেলে। ১০১ রান করে আফগানদের সিরিজ জয়ের পথ করে দেওয়া ব্যাটার দুবার জীবন পেয়েছেন। তার একটি ক্যাচ পড়েছে আর একটি নিশ্চিত স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করেছেন জাকের আলি।
এই মিসগুলো কাজে লাগোলে বাংলাদেশকে সিরিজ হারাতে হতো না। সুযোগের দারুণ ব্যবহার করে দলকে জয়ের পথ দেখান গুরবাজ। তার সেঞ্চুরি আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের ৭৭ বলে ৭০ ও মোহাম্মদ নবির ২৭ বলে ৫ চারে ৩৪ রানের ক্যামিওতে ৫ উইকেট হাতে রেখে ২৪৬ রান করেছে আফগানরা।
৫ উইকেটের জয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডও গড়েছে তারা। সেই সঙ্গে শারজাতে টানা তিনটি ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দ পকেটে পুরেছে দলটি। আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার পর বাংলাদেশকে হারালো ২-১ ব্যবধানে।
১৮৮ রানে গুরবাজের বিদায়ের পর জয় থেকে আরও ৫৭ রান দূরে ছিল আফগানরা। নাসুম আহমেদ-মোস্তাফিজরা রানের গতি কিছুটা আটকে ম্যাচে ফেরান বাংলাদেশকে। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে ওমরজাই ও নবির দুর্দান্ত জুটি ম্যাচ কেড়ে নেয় বাংলাদেশ থেকে। দুজনের ৪৮ বলে ৫৮ রানের জুটি গড়েন।
এ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তৃতীয় সিরিজ জিতল আফগানিস্তান।
সেঞ্চুরি করে থামলেন গুরবাজ
তাসকিন আহমেদের বলে গত দুই ম্যাচে আউট হয়েছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে সেই তাসকিনকে খেলায়নি বাংলাদেশ। সুবাদে বেশ স্বতস্ফুর্ত ভাবেই খেলতে পেরেছেন আফগানিস্তান ওপেনার। ফল ক্যারিয়ারের অষ্টম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এবং শারজাতে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি করে দলকে সিরিজ জয়ের সুবাশ দিতে চলেছেন গুরবাজ। ১১৭ বলে ১০০ রান তার। সঙ্গে ৪৩ রানে অপরাজিত ওমরজাই। দুজনের শতরানের জুটিতে দারুণ অবস্থানে স্বাগতিকরা।
অবশ্য সেঞ্চুরি করেই আউট হয়েছেন গুরবাজ। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ আউট হন ১০১ রানে।
৩০ ওভার শেষে আফগানিস্তানের ভরসা গুরবাজ
বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ধীরে এগোচ্ছে আফগানিস্তান। ৩০ ওভার শেষে দলটির রান ৩ উইকেটে ১৩৮ রান। ১২০ বল থেকে জয়ের জন্য আরও ১০৭ রান চাই তাদের।
রান তাড়ায় আফগানদের ভরসা রহমানউল্লাহ গুরবাজ। সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছেন এই ব্যাটার। ৯৩ বলে ৮১ রান তার। ইনিংসে দুটি সুযোগ পেয়েছেন গুরবাজ। একটি ক্যাচ মিস ও অপরটি স্ট্যাম্পিং মিস।
১৯ রান করা ওমরজাইকে নিয়ে ভালো জুটিও গড়েছেন। ৫৯ বলে ৫৪ রানের জুটি তাদের।
সৌম্যর ‘রকেট’ ক্যাচ মোস্তাফিজের আরও এক উইকেট
স্লিপ ক্যাচিংয়ে বাংলাদেশ অনেক বছর ধরেই পিছিয়ে ছিল। সময়ে সময়ে ভালো কিছু ক্যাচ এলেও ধারাবাহিকতা ছিল না। তাই স্লিপের জন্য উপযুক্ত কোন ফিল্ডারও ছিল না।
সেই জায়গায় ব্যতিক্রম সৌম্য সরকার। স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে আগেও বেশ ভালো ক্যাচ ধরেছেন তিনি। নিয়মিত দলে ছিলেন না বলে স্লিপ ক্যাচেও নিয়মিত হতে পারেননি। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ধরা তার ক্যাচটি বেশ আলাদা করেই রাখবে সৌম্যকে।
এ সিরিজে আগেও স্লিপে ভালো ক্যাচ ধরেছেন সৌম্য। এবারেরটি আগেরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে হাশমতুল্লাহ শহিদিরি ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল যায় প্রথম স্লিপে। বিদ্যুৎ গতিতে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ লুফে নেন সৌম্য।
২১ বলে ৬ রান করা শহিদির বিদায়ে ২০ ওভার শেষে ৮৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারালো আফগানিস্তান। গুরবাজ অপরাজিত ৫৫ রানে।
মোস্তাফিজ এনে দিলেন আরেকটি উইকেট
১৫তম ওভার পর্যন্ত দুই উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। দলকে দ্বিতীয় শিকার এনে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১৫ ওভার শেষে ৬৪ রানে ২ উইকেট আফগানিস্তানের।
২২ বলে মাত্র ৮ রান নিয়ে উইকেটে কঠিন সময় পার করছিলেন রহমত শাহ। রান না পাওয়ায় চাপ বাড়ে এই ব্যাটারের ওপর। সেই চাপ থেকেই মোস্তাফিজের বুক সমান ওঠা একটি বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন। শর্ট মিডউইকেটের দিকে দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ নেন মোস্তাফিজ।
এখন পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আছে বাংলাদেশের হাতে। তবে ভয়ের কারণ রহমানউল্লাহ গুরবাজ। একবার জীবন পাওয়া গুরবাজ ৪৫ বলে করেছেন ৩৬ রান। আগের দুই ম্যাচে তাসকিনের বলে আউট হয়েছিলেন তিনি। এই ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়ায় খেলছেন না তাসকিন।
অভিষিক্ত রানার প্রথম উইকেট
আফগানিস্তানের ইনিংসে অষ্টম ওভারে প্রথম সফলতা বাংলাদেশের। ৪১ রানে আফগানিস্তানকে প্রথম আঘাত দিয়েছেন অভিষিক্ত নাহিদ রানা।
রানার পেস সামলানো বেশ কঠিন হয়ে উঠেছিল আফগান দুই ওপেনারের জন্য। ১৪০ এর বেশি গতি সামলাতে ঘাম ঝরছিল তাদের। অবশেষে এই রানার বলেই থামলেন ওপেনার সেদিকুল্লাহ আতাল।
১৮ বলে কোন বাউন্ডারি ছাড়া ১৪ রান করে বোল্ড হয়েছেন এই ব্যাটার। রানার ১৪৭ গতির বলটি লাফিয়ে খেলতে গিয়ে বুঝে উঠতে ব্যর্থ হন আতাল। বল স্ট্যাম্পের ওপরে লেগে বেল ফেলে দেয়।
চার ওভারে ১ মেডেনে মাত্র ৯ রানে ১ শিকার নাহিদ রানার।
‘সাইলেন্ট কিলারের’ লড়াকু ৯৮
এক বলে চাই ৪ রান। নাহ, ম্যাচ জয়ের সমীকরণ তোলা কোন শেষ বলের হিসেব নয়। এটা মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির জন্য প্রয়োজনীয় রান। মাহমুদউল্লাহ শেষ পর্যন্ত চার মারতে পারেননি, নিয়েছেন ১ রান। ৯৮ বলে ৯৮ রানে রান আউট হয়ে থেমেছেন।
সেঞ্চুরি না পাওয়ার পাহাড়সম আক্ষেপ নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে সামগ্রিকভাবে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই। তার এই বীরোচিত ইনিংসে বাংলাদেশ পথ দেখছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে জয়ের মতো পুঁজি পেয়েছে।
৭২ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে ভর করে ৮ উইকেটে ২৪৪ রান তুলেছে।
মাত্র ১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছিল বাংলাদেশ। ওই সময় ক্রিজে এসেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আগের দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ২ ও ৩। এর আগে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চট্টগ্রামে করেছিলেন ০ ও ১। চার ওয়ানডে ইনিংসের চাপ নিয়ে দলের বিপদের সময় ক্রিজে আসেন তিনি। স্বভাবতই চাপে নুয়ে পড়ার কথা মাহমুদউল্লাহর।
তবে না! চাপে ভেঙে পড়বেন বলে তিনি ‘সাইলেন্ট কিলার’ নন। ক্যারিয়ার জুড়ে অনেকবার এমন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। কতবার সেই খাদ থেকে দলকে টেনে তুলেছেন ধৈর্য্যশীল ইনিংসে। প্রতিবার দলের জয় এনে দেওয়ার মতো সফল না হলে ব্যর্থতার হারও খুব বেশি নয়।
কিন্তু ছয়-সাত নম্বরে নেমে মাহমুদউল্লাহর ওসব ইনিংসের গুরুত্ব অনেক। দলের ছন্নছাড়া অবস্থা থেকে ওসব ইনিংসে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সেরকমই একটি ইনিংস আজ (সোমবার) খেলেছেন তিনি শারজাতে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে ১৫তম ওভারে ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ। শুরুটা খুব সাবধানী ছিল। সেই থেকে একেবারে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত। এই বয়সে ৩৫ ওভার শারজার গরমে ব্যাট করা খুব কঠিন। দুবার শিরায় টান অনুভব করেছেন। থামতে ইচ্ছে হচ্ছিল, কিন্তু মাহমুদউল্লাহ লড়াকু একজনের নাম।
তাই আরেকবার সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০২৩ বিশ্বকাপে চতুর্থ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর আরেকবার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন পঞ্চম শতকের। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে হয়নি। তবে যা হয়েছে তাতে দল জিতলে বরং মাহমুদউল্লাহ বেশিথ খুশি হবেন। মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে শারজার সর্বোচ্চ ১৪৫ রানের জুটিতে দলকে পথ দেখিয়েছেন। সঙ্গে ওয়ানডেতে নিজের প্রায় হারাতে বসা জায়গা পুনরূদ্ধারও করেছেন মাহমুদউল্লাহ।
ক্যাপ্টেন্স নক খেলে ফিরলেন মিরাজ
মেহেদি হাসান মিরাজের ১১৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস এই সময়ের ওয়ানডের সঙ্গে বেমামান। তবে দলের প্রয়োজনে যেভাবে হাল ধরেছেন মিরাজ তা অসাধারণ। তার ওই ইনিংসে বাংলাদেশ শুরুর বিপদ কাটিয়ে উঠেছে।
দলীয় ২১৭ রানে থামার আগে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১৪৫ রানের জুটি গড়েছেন মিরাজ। যা শারজাতে পঞ্চম ও যে কোন উইকেটের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড।
এমন দিনে ওয়ানডেতে ধীরে পঞ্চাশ করার কীর্তি গড়েছেন মিরাজ। সবচেয়ে বেশি ১১৪ বলে ফিফটির রেকর্ড জাভেদ ওমরের ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর মেহেরাব হোসেন অপির ১১২ বলে, জাভেদ ওমর ও মোহাম্মদ আশরাফুলের ১০৮ বলে ফিফটির রেকর্ড আছে। এরপর মিরাজের আজকের ১০৬ বলের ফিফটি।
জুটির রেকর্ড গড়লেন মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ
শারজা স্টেডিয়ামে যে কোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড গড়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে দুজনের জুটি এখন ১৮৩ বলে ১৩৭ রান।
এছাড়া পঞ্চম উইকেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়েছেন দুজনে। ২০১৫ বিশ্বকাপে সাকিব ও মুশফিকের ১১৫ রানের রেকর্ড ছাড়িয়ে এগিয়েছেন মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ।
মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ জুটির একশ
দলের কঠিন অবস্তা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো জুটির সেঞ্চুরি হলো। মেহেদি হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ দুজনের ফিফটিতে শক্ত জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ৪২ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৮৪ রান বাংলাদেশের।
একশ রানের জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ৬৩ রান করেছেন ৭১ বলে। অপরাদিকে দলের কঠিন অবস্থায় ক্রিজে এসে হাল ধরা অধিনায়ক মিরাজ ১০৮ বলে করেছেন ৫২ রান। বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের মধ্যে পঞ্চম হিসেবে অধিনায়কত্বের অভিষেকে ফিফটি করলেন মিরাজ।
তাদের জুটির রান ১৬৪ বলে ১১০। মাহমুদউল্লাহর মতো মিরাজও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর প্রথম ফিফটি পেয়েছেন।
বিশ্বকাপের পর মাহমুদউল্লাহর প্রথম ফিফটি
রানের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন মাহমুদউল্লাহ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পর থেকে নিজেকে হারিয়ে ফিরছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিং ভুলে গিয়েছিলেন যেন।
সেই মাহমুদউল্লাহ রানে ফিরলেন। ২৯তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নিয়েছেন সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে। ২০২৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সঙ্গে হাফসেঞ্চুরির সাত ইনিংস পর আবার ফিফটি করলেন। কঠিন অবস্থায় হাল ধরে খাদের কিনারা থেকে দলকে তুলেছেন মেহেদি হাসান মিরাজকে সঙ্গ দিয়ে।
৪ চার ও ১ ছক্কায় ৬৪ বলে ৫১ রান তার।
মিরাজ-মাহমুদউল্লাহর জুটিতে স্বস্তি
দ্রুত পথ হারানো অবস্থা থেকে দলকে টেনে তুলেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সঙ্গে ছিলেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দুজনের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিতে আপাতত স্বস্তিতে বাংলাদেশ। ৩০ ওভার শেষে সফরকারীদের রান ৪ উইকেটে ১৩০।
নিজের শততম ওয়ানডেতে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া মিরাজ অপরাজিত আছেন ৬৯ বলে ৩৮ রানে। মাহমুদউল্লাহ ৩৭ বলে ২৮ রানে ব্যাট করছেন। ৯৩ বলে দুজনে যোগ করেছেন ৫৮ রান।
২০ ওভার শেষে চাপে বাংলাদেশ
প্রথম ৮ ওভারে বিনা উইকেটে ৪৯। পরের দুই বলে সৌম্য সরকারের আরও একটি চারে দলের রান ৫৩। অথচ এরপর থেকে ধস নামল বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। পরের ১১.৪ ওভারে এসেছে মাত্র ৩৭ রান। সঙ্গে চার উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
২০ ওভার শেষে ৮৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে একটু চাপেই আছে সফরকারীরা। উইকেটে অপরাজিত আছেন ১৮ রান করা মিরাজ ও ৪ রান করা মাহমুদউল্লাহ।
আবারও ব্যর্থ হৃদয়
ব্যাটিং অর্ডারে তরুণ বয়সে অন্যতম তারকা হয়ে উঠেছিলেন তাওহিদ হৃদয়। সেই ইমেজের সঙ্গে ব্যাটের মিল নেই। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর হৃদয়ের ব্যাট নিশ্চুপ।
এ সিরিজে ব্যর্থতা বাড়িয়ে শেষ ম্যাচেও হৃদয় ফিরলেন বড় রান না করেই। ১৪ বলে মাত্র ৭ রান করে রশিদ খানের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। অফস্ট্যাম্পের সহজ বলটি পেছনের পায়ে ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এসেছেন হৃদয়। আগের দুেই ম্যাচে হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছিল ১১ রান করে।
তার বিদায়ে ৭২ রানে ৪ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৬ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ৭৬ রান বাংলাদেশের।
অধিনায়ক মিরাজের ভুলে রান আউট জাকির
টানা তিন ওভারে তিন উইকেট হারালো বাংলাদেশ। বিনা উইকেটে ৫২ রান থেকে ৬ রানে নেই ৩ ব্যাটার।
নিজের ১০০তম ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিতে নামা মেহেদি হাসান মিরাজের ভুলে রান আউট হলেন জাকির হাসান। মিরাজ ওমরজাইয়ের বলে কাভারে ঠেলে এক রান নিতে চেয়েছিলেন। শুরুতে ডাকার পর নিজের ভুল বুঝে প্রান্তে ফিরে যান।
ততক্ষণে ৪ রান করা জাকির মাঝ উইকেটে। ফেরার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। নাঙ্গালিয়া খারোটের সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভেঙে যায়। দারুণ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ মুহূর্তেই ব্যাকফুটে।
সৌম্য ফেরার পরের ওভারে তানজিদও ফিরলেন
দুবার জীবন পেয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। ১ ও ৮ রানে পাওয়া সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেন এই ব্যাটার। মোহাম্মদ নবির বলে কাভারের ওপর দিয়ে মারার চেষ্টায় ভুল করলেন। ১৯ রানে থামল তানজিদের ইনিংস। নবম ওভারে সৌম্য সরকারের ফেরার পরের ওভারেই ফিরলেন তানজিদ।
দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য থামলেন
ইনিংসের শুরু থেকেই চোখধাঁধানো সব কাভার ড্রাইভ ও স্ট্রেইট ড্রাইভ খেলছিলেন সৌম্য সরকার। তিনটি চারে ২৩ বলে ২৪ রানে পৌঁছে যান দ্রুত।
সৌম্যর ইনিংস দেখে মনে হচ্ছিল বড় রান পেতে যাচ্ছেন। কিন্তু সেখানেই থামলেন এই ব্যাটার। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে সামনের পায়ে না পেছনের পায়ে খেলবেন সেই দ্বিধায় কাট করতে গিয়ে হলেন ইনসাইডেজ। বোল্ড হয়ে ফিরতে হলো সৌম্যকে।
নবম ওভারে দলীয় ৫৩ রানে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ১৯ রানে অপরাজিত তানজিদ তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন জাকির হাসান।
জোড়া ক্যাচ মিস আফগানিস্তানের
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৫ ওভারে ৩৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। উইকেট হারাতে হয়নি একটিও।
অবশ্য উইকেটের ঘর অক্ষত থাকার জন্য আফগানিস্তানকে ধন্যবাদ দিতে হয়। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমের জোড়া ক্যাচ মিস করেছে তারা। দ্বিতীয় ওভারে ফজল হক ফারুকীর বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন তানজিদ। গুলবাদিন নাইব ধরতে পারেননি।
চতুর্থ ওভারে তানজিদ উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন আল্লাহ রহমান গাজানফারের বলে। থার্ডম্যানের দিকে অনেকটা দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ মিস করেন অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহিদি।
জোড়া লাইফ পেয়ে ১৬ বলে ৮ রান করেছেন তানজিদ। অপরপ্রান্তে সৌম্য সরকার অপরাজিত আছেন ১৩ বলে ১৬ রানে।
টস জিতে আবারও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
শারজাতে নিয়মটা এমন দাঁড়িয়েছে যে টস জেতো আগে ব্যাট করো এবং ম্যাচ জেতো! আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে এমনটাই হয়েছে। এই নিয়ম মেনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও ভাগ্য নির্ধারনীতে জিতে আগে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচেও টস জিতে আগে ব্যাটিং করে জয় এসেছিল।
সিরিজের এই ম্যাচে কুঁচকির ইনজুরির কারণে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। তার পরিবর্তে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। এ সিরিজে সহ-অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন মিরাজ। এবার ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে তার। দেশের ইতিহাসে ১৭তম ওয়ানডে অধিনায়ক হলেন মিরাজ।
এই ম্যাচে একাদশে দুই পরিবর্তন নিয়ে নামছে বাংলাদেশ। শান্তর পরিবর্তে অবধারিত ভাবে সুযোগ পেয়েছেন জাকির হাসান। আর পেসার তাসকিন আহমেদের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে নাহিদ রানাকে। এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া নাহিদ দেশের ১৫০তম ওয়ানডে ক্রিকেটার।
টানা তৃতীয় ম্যাচে অপরিবর্তি একাদশ নিয়ে নেমেছে আফগানিস্তান।
বাংলাদেশ : তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলি, নাহিদ রানা, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ।
আফগানিস্তান : সেদিকুল্লাহ আতাল, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হাশমতুল্লাহ শহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, এএম গাজানফার, নেঙ্গেলিয়া খারোটে, ফজল হক ফারুকী।