সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২৩৫/১০, ৪৯.৪ ওভার (নবি ৮৪, শহিদি ৫২, খারোটে ২৭; তাসকিন ৪/৫৩, মোস্তাফিজর ৪/৫৮)। বাংলাদেশ : ১৪৩/১০, ৩৪.৩ ওভার (শান্ত ৪৭, সৌম্য ৩৩, মিরাজ ২৮; গাজানফার ৬/২৬, রশিদ ২/২৯)। ফল : আফগানিস্তান ৯২ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার।
বাংলাদেশ ব্যাটারদের জন্য এ এক মহাবিপদ! আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফারের পরের বলটি কি হবে- সেই চিন্তা করবে না রান কোন দিক দিয়ে নিবে সেই চিন্তা। স্ট্যাম্পের সামনে বল-রান দুই রকম চিন্তা একজন ব্যাটারকে স্বাভাবিক ভাবেই করতে হয়। কিন্তু এমন কোনঠাসা অবস্থায় হয়তো পড়তে হয়না।
আজ বাংলাদেশ ব্যাটাররা যে অবস্থায় পড়লেন তাতে স্পষ্ট এমন কোয়ালিটি স্পিন বাংলাদেশ ব্যাটাররা এতদিনে কখনই খেলেননি। তাতে স্পষ্ট হলো আফগানদের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তির পার্থক্য। ২০০০ সালে বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ১২ বছর পর ২০১২তে প্রথম ওয়ানডে খেলেছিল আফগানিস্তান।
এরপর থেকে তাদের ক্রিকেটে শুধুই এগিয়ে চলার গল্প। সেই গল্পের নায়ক একের পর এক নিঁখুত ট্যালেন্ট। যার অভাব বাংলাদেশ ক্রিকেটে পুরোপুরি। একজন রশিদ খান, মজিব উর রহমান বা নতুন মুখ গাজানফারের মতো বোলার এখনও উঠে আসেনি বাংলাদেশ ক্রিকেটে।
বরং ক্রিকেটের বাইরের নানা কিছুতে জর্জরিত থাকায় বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়তি। সব মিলিয়ে এখনকার মুখোমুখি লড়াইয়ে অনায়াসে এগিয়ে থাকে আফগানরা। সেই প্রমাণ মিলল শারজাতে।
বাংলাদেশ ব্যাটারদের ওপর জাদু চালিয়ে মাত্র ২৫ বলে ৭ উইকেট তুলে নিলেন আফগান দুই বোলার গাজারফার ও রশিদ খান। এর মধ্যে ৫ উইকেটই গাজানফারের। ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া এ রহস্য স্পিনার তুলে নেন ২৬ রানে ৬ উইকেট। এতে ২৩৬ রানের লক্ষ্যে নেমে ২ উইকেটে ১২০ থেকে ১৪৩ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ৯২ রানের হারের লজ্জা হজম করতে হলো সিরিজের প্রথম ম্যাচে।
‘ভায়রা ভাইয়ের’ মতো মুশফিকও হতভম্ব
আফগান স্পিন নিয়ে যে ভয় ছিলো তা জেঁকে ধরেছে বাংলাদেশকে। দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ফিরলেন বল বুঝতে না পেরে। মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন রশিদ খানের গুগলিতে। পরের ওভারে মুশফিকুর রহিম ফিরলেন ক্যারম বলে।
গাজানফারের ক্যারম বল উইকেট ছেড়ে খেলতে চলেছিলেন মুশফিক। বল লেগ স্ট্যাম্পে পরে লেগ ব্রেক হয়ে চলে যায় উইকেটকিপারের হাতে। সহজেই স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিলেন তিনি। মাত্র ৩ বলে ১ রান করে বিদায় নেন মুশফিক।
রশিদ খানের বলই বুঝলেন না মাহমুদউল্লাহ
উইকেটে এসে মাত্র ৫ বল টিকলেন মাহমুদউল্লাহ। গুগলি বল খেলতে না পারার পুরোনো দুর্বলতায় আবারও পরাস্ত হলেন। রশিদ খানের গুগলী বুঝলেনই না এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরলেন মাত্র ২ রানে।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রশিদ-নূর আহমেদের গুগলি খেলতে খুব সমস্যা হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহর। তার দেওয়া ডট বলগুলো বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার অন্যতম বাধা হয়েছিল শেষ পর্যন্ত। সেই দুর্বলতা নিয়ে খুব একটা কাজ করেননি মাহমুদউল্লাহ। তাই আবারও গুগলিতেই বোল্ড।
তার বিদায়ে সাত ওভারের মধ্যে মাত্র ১৩ রানে ৩ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ২ উইকেটে ১২০ থেকে ৫ উইকেটে ১৩৫ এ পরিণত হলো। ষষ্ঠ ওভার পর্যন্ত রশিদকে উইকেটশূন্য রাখা গেলেও সপ্তম ওভারে এসে শিকার নিলেন রশিদ।
মিরাজের বিদায়ে বিপদ বাড়ল
উইকেটে সেট হয়ে আউট হয়ে আসার ভুল এড়িয়ে চলতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। নাজমুল হোসেন শান্তর পর মেহেদি হাসান মিরাজও একই ভুল করলেন। গাজানফারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসলেন।
শান্ত সুইপ করে আউট হয়েছিলেন। মিরাজ ঠিক সুইপও না স্লগও না, তার মাঝামাঝি একটা শট খেলতে গিয়ে আউট হলেন ৫১ বলে ২৮ রান করে। ৫ ওভারের মধ্যে মাত্র ১২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ল বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ১৯ ওভারে ১০৩ রান চাই বাংলাদেশের।
সুইপ করার ভুলে কাটা পড়লেন শান্ত
অসাধারণ জুটি গড়ে এগিয়ে চলছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে। তাদের ৫৫ রানের জুটিতে মাঝ ওভারে ভালো অবস্থানে চলে এসেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ওই সময় সুইপ খেলার লোভ সামলাতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত।
মোহাম্মদ নবির সোজা ব্যাটে খেলার বল পিচের অনেকটা দূরে পা নিয়ে সুইপ করতে গিয়ে ভুল করলেন। ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৬৮ বলে ৪৭ রান শান্তর। নবম ফিফটি থেকে মাত্র ৩ রান দূরে দলকে বিপদে রেখে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন শান্ত। ১২০ রানে তৃতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ।
শান্ত-মিরাজ জুটির পঞ্চাশে এগোচ্ছে বাংলাদেশ
আফগানিস্তান বোলিং আক্রমণের চাপ দারুণ সামলে চলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুই ব্যাটারের দৃঢ়তায় একশ পার করেছে দল। দুজনের জুটিও ছাড়িয়েছে পঞ্চাশ রান। ২৫ ওভার শেষে তাদের ব্যাটে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১১৭ রান তুলেছে। জয়ের জন্য আরও ১১৯ রান চাই।
২১ রানে জীবন পেয়েছিলেন শান্ত। এরপর থেকে ভালো ভাবেই এগিয়ে চলছেন ওয়ানডেতে নবম পঞ্চাশের দিকে। ব্যাট করছেন ৬৪ বলে ৪৫ রানে। অধিনায়ক হওয়ার পর ওয়ানডেতে নিজের ভালো ফর্ম ধরে রেখেছেন এই ব্যাটার।
এদিকে দুবার জীবন পাওয়া মিরাজ থিতু হয়েছেন উইকেটে। মোহাম্মদ নবিকে বিশাল ছক্কা মারার পর ব্যাটিং আরও সহজ হয়েছে তার জন্য। ৩৭ বলে ২৫ রানে অপরাজিত আছেন তিনি।
শান্তর পর জীবন পেলেন মিরাজ
উইকেটে টিকে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। মজার ব্যাপার দুজনই দ্বিতীয় সুযোগ পেয়ে ব্যাট করছেন। আফগানিস্তান ফিল্ডাররা দুই ব্যাটারের ক্যাচ মিস করেছেন।
২১ রানে থাকা অবস্থায় শান্তর ক্যাচ ফেলেন বদলী উইকেটরক্ষক ইকরাম আলি খিল। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে শান্তর পুল শট ঠিকঠাক হয়নি। ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে বল উঠে যায়। ইকরাম থার্ডম্যানের দিকে অনেকটা দৌড়েও ক্যাচ মিস করেন।
পরে একই বোলারের বলে সরাসরি মিরাজের ক্যাচ মিস করেন স্লিপে দাঁড়ানো মোহাম্মদ নবি। ওই সময় মিরাজ মাত্র ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ৭৪। শান্ত ২৭ ও মিরাজ ৪ রানে অপরাজিত।
সৌম্যর বিদায়ে ভালো জুটি থামল
অনেকদিন পর ওয়ানডেতে ওপেন করতে নেমে ভালোই এগিয়ে চলছিলেন সৌম্য সরকার। স্বভাবসুলভ মারকুটে ব্যাটিং দূরে রেখে দেখে খেলছিলেন। তাতে ব্যাটে রানও পেয়েছেন। তবে দারুণ ভাবে গড়ে ওঠা ইনিংসটি ৩৩ রানের বেশি যেতে পারেনি।
ওমরজাইয়ের বাউন্সারে ভুল পুল শট করে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সৌম্য। বল ব্যাটে লাগলেও ঠিক মাঝ ব্যাটে হয়নি। ব্যাটের ওপরের দিকে লাগায় বল বাউন্ডারীর সীমানার আগেই থামে। ৪৫ বলে ৬ চারে ৩৩ রান রা সৌম্যর বিদায়ে ৬৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারালো বাংলাদেশ। থামল শান্তর সঙ্গে তার ৫৩ রানের জুটি।
প্রথম পাওয়ার প্লেতে সাবধানী বাংলাদেশ
উইকেট ধরে রেখে প্রথম পাওয়ার প্লেতে দারুণ ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। দলীয় ১২ রানে তানজিদ তামিমকে হারানোর পর প্রথম ১০ ওভারে আর উইকেট হারাতে হয়নি। ১০ ওভার শেষে দলের রান ১ উইকেটে ৫৪।
পাওয়ার প্লের পুরোটা সময় সাবধানে খেলেছে বাংলাদেশ ব্যাটাররা। বাজে বল ছাড়া বাড়তি শটের জন্য এগোয়নি সৌম্য সরকার বা নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৩৬ রানের লক্ষ্য খুব বড় নয়। শারজার উইকেটে এই রান তাড়া করতে হলে উইকেট ধরে রেখে রানের গতি বাড়ানোর লক্ষ্য নিতে হবে।
১০ ওভার পর্যন্ত সৌম্য-শান্ত ৪২ রানের জুটিতে সেই লক্ষ্য পূরন করে চলেছেন। দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য ২৮ ও শান্ত ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
দলীয় ১২ রানে তামিমকে হারাল বাংলাদেশ
শুরু থেকে খুব সাবধানী ব্যাটিং ছিল বাংলাদেশ দুই ওপেনারের। ফজল হক ফারুকী ও গাজানফারকে বড় শট খেলার চেষ্টাই করেননি কেউ। তবুও রক্ষা হলো না। গাজানফারের ভেতরে ঢোকা বলে ৩ রান করে বোল্ড হলেন তামিম। দলীয় ১২ রানে বাংলাদেশ হারাল প্রথম উইকেট।
মুজিব উর রহমানের মতো বোলিং করা এই গাজানফারকে মুজিবের সেরা বদলী বলা হচ্ছে। ১৮ বছর বয়সী এ স্পিনার তার রহস্য স্পিনে আবারও তা প্রমাণ করলেন।
জয়ের জন্য ২৩৬ রান চাই বাংলাদেশের
এই প্রথম কোন একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের দুই পেসার চার উইকেট করে নিয়েছেন। তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত সাফল্যের দিনে স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই দলের। প্রথম ওয়ানেডেতে আগে ব্যাট করে ২৩৫ রানে অলআউট হয়েছে আফগানিস্তান।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জিততে হলে ২৩৬ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। শারজার উইকেটের প্রথম ইনিংসের গড় রান ২২৫। সেখান থেকে এই স্কোর বাংলাদেশকে বেশ চ্যালেঞ্জেই ফেলে দিলো।
মোহাম্মদ নবির ৮৪ রান ও হাশমতুল্লাহ শহিদির ৫২ রানে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে ফেলে আফগানরা। তাদের ১০৪ রানের জুটি শুরুতে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর ক্ষতি পুষিয়ে দিয়েছে।
নবিকে সেঞ্চুরি করতে দেননি তাসকিন
ফগানিস্তানকে কঠিন অবস্থান থেকে টেনে তুলেছেন মোহাম্মদ নবি। তার ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজিও পেয়ে গেছে দলটি। দুর্দান্ত ইনিংসে সেঞ্চুরির পথেই এগোচ্ছিলেন। তাকে থামালেন তাসকিন আহমেদ।
৭৮ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৮৪ রান করে তাসকিনের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে থার্ডম্যানে ধরা পড়েন নবি। পরের বলে গাজানফারকে সরাসরি বোল্ড করলেন তাসকিন। ওভারে জোড়া উইকেট তার। এতে চার উইকেট পূর্ণ হলো তাসকিনের।
দ্রুত ফিরলেন রশিদ খান
ইনিংসের শেষদিকে বড় শট নেওয়ায় বেশ সুনাম আছে রশিদ খানের। আইপিএল খেলার অভ্যাস থেকে পাওয়ার হিটার হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সেই ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না তাকে।
মাত্র ১০ রান করে দলীয় ১৮৯ রানে আউট হয়েছেন শরিফুল ইসলামের বলে। এতে সপ্তম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। শরিফুলের বাউন্স বলে ভুল শট খেলে শর্ট মিডঅনে ক্যাচ দিয়েছেন রশিদ।
শক্ত জুটি ভাঙলেন মোস্তাফিজ
জুটির একশ পার হওয়ার পর মোহাম্মদ নবি ও হাশমতুল্লাহ শহিদিকে বিচ্ছিন্ন করলেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার চতুর্থ উইকেটে ১৭৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারালো আফগানিস্তান।
নবির সঙ্গে ১০৪ রানের দুর্দান্ত জুটিতে খাদের কিনারায় থাকা দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন হাশমতুল্লাহ শহিদি। ক্যারিয়ারের ২২তম হাফসেঞ্চুরিও তুলেছিলেন। তবে থামতে হলো সেখানেই। ৯২ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলা আফগান অধিনায়ক পরাস্ত হলেন মোস্তাফিজের কাটারে।
ফিজের কাটারে পয়েন্টে কাট শট খেলতে গিয়ে ইনসাইডেজ হন শহিদি। এ জুটি ভাঙায় স্বস্তি ফিরেছে বাংলাদেশ দলে।
দুই ফিফটিতে ম্যাচে ফিরল আফগানিস্তান
৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানো অবস্থান থেকে দুর্দান্ত ভাবে ম্যাচে ফিরেছে আফগানিস্তান। হাশমতুল্লাহ শহিদি ও মোহাম্মদ নবির জোড়া ফিফটিতে বাংলাদেশকে চাপ ফিরিয়ে দিয়েছে তারা। ৩৯ ওভার শেষে স্বাগতিকদের রান ৫ উইকেটে ১৭০।
শারজার উইকেটে শুরুতে ব্যাট করা বেশ কঠিন ছিল। বল সুইং করায় পেসারদের বিপক্ষে শট নেওয়া ছিল দুরূহ। সেই অবস্থায় মোস্তাফিজ ও তাসকিনের বলে দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান। ওই অবস্থান থেকে উইকেটে সময় ব্যায় করে এখন সফল অবস্থানে তারা।
দলকে কঠিন অবস্থান থেকে ফিরিয়ে এনেছে নবি-শহিদি জুটি। ১১২ বলে ৯৮ রান যোগ করেছেন দুজনে। একপ্রান্ত আগলে রেখে অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক শহিদি। ২২তম ফিফটি তু্লে ব্যাট করছেন ৮৭ বলে ৫০ রানে।
অধিনায়কের সমর্থন পাওয়ায় অপরপ্রান্তে দ্রুত রান তুলেছেন নবি। ১৭তম ফিফটি তুলে নিয়েছেন। একই সঙ্গে শারজা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে তার প্রথম ফিফটিও। ৬২ বলে ৬৩ রানে ব্যাট করছেন নবি।
দুই ব্যাটারের লড়াইয়ে ম্যাচে ভালো অবস্থান তৈরি করেছে আফগানরা। দুইশো বা এর বেশি দলীয় রানের স্বপ্নটা এখন অনায়াসেই করতে পারে তারা।
৩০ ওভার শেষে এগিয়ে বাংলাদেশ
সবশেষ দুই উইকেটে ছোট জুটি গড়ে কিছুটা লড়াই ফিরিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। ৩০ ওভার শেষে দলটির রান ৫ উইকেটে ১২৪। এদিকে আফগানদের রান আয়ত্বের মধ্যে রেখে লড়াইয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেটে ৩৬ রানের জুটি ছিল। তাতে দলীয় ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানোর ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয় আফগানরা। ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ নবি (৩৬) ও হাশমতুল্লাহ শহিদির (৩৯) ৫৩ রানের জুটিতে স্বাগতিকরা ম্যাচে আরও এক ধাপ এগিয়ে এসেছে।
এ জুটি বাংলাদেশের চিন্তাও বাড়াচ্ছে। শারজাতে আগে ব্যাট করা ইনিংসে গড় রান ২২৫। সেদিক থেকে ৩০ ওভার শেষে আফগানিস্তান খুব পিছিয়ে নেই। ৫০ ওভার শেষে ২৩০ করলেও শারজাতে লড়াইয়ের রান পেয়ে যাবে তারা।
একশর আগেই ৫ উইকেট নেই আফগানদের
বাংলাদেশের বোলিং লাইনের বিপক্ষে হাত খুলে রান তোলা হচ্ছে না আফগানিস্তানের। ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৭১ রান তুলেছে তারা।
২০তম ওভারেই আরও এক উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। তাসকিন আহমেদের বলে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন গুলবাদিন নাইব। ৩২ বলে ২২ রান করে ৩৬ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে পথ দেখানোর চেষ্টায় ছিলেন গুলবাদিন।
১৮ রান করা হাশমতুল্লাহ শহিদিকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপদ কাটিয়েছিলেন। কিন্তু এ জুটি আর এগোতে দেননি তাসকিন। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় শিকারে বাংলাদেশকে সুবিধাজনক অবস্থায় রাখলেন।
এক ওভারে মোস্তাফিজের দুই শিকার
প্রথম ওভারে উইকেট নিয়েছেন। দ্বিতীয় ওভারে এসে নিলেন আরও দুটি। দুই ওভারে তিন শিকার নিয়ে আফগানিস্তানকে কঠিন বিপদে ঠেলেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
সবশেষ ইমার্জিং এশিয়া কাপে দারুণ পারফরম করে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন সেদিকুল্লাহ আতাল। অভিষেক ইনিংসে ব্যাটও করছিলেন ভালো। দুর্দান্ত সব শটে ৩০ বলে ২১ রান করে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন।
তবে মোস্তাফিজের কাটারে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন তিনি। এক বল পর দলটির অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটার আজমতুল্লাহ ওমরজাইকেও ফেরালেন মোস্তাফিজ। দারুণ আউটসুইংগারে এবার পরাস্ত হন ওমরজাই। ১০ ওভার শেষে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেই আফগানদের।
পাওয়ার প্লেতে আরও এক উইকেট
খুব সহজেই রান তুলতে পারছেন না আফগানিস্তান ব্যাটাররা। রহমানউল্লাহ গুরবাজের বিদায়ের রানের চাকা গতি হারিয়েছে। এর উপর পাওয়ার প্লেতে দ্বিতীয় উইকেট হারাতে হলো আফগানিস্তানকে।
এবার রহমত শাহ ফিরলেন মোস্তাফিজুর রহমানের বলে। মোস্তাফিজকে প্রথম ওভারে টেনেই সাফল্য পেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৩ বলে মাত্র ২ রান করে অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন রহমত।
তাসকিনের প্রথম ওভারেই ফিরলেন গুরবাজ
আফগানিস্তান ব্যাটিং লাইনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। দলটির রানের মূল উৎসও তিনি। সেই গুরবাজকেই নিজের প্রথম ওভারেই ড্রেসিংরুমে ফেরালেন তাসকিন আহমেদ।
স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে চার মেরে শুরু করেন গুরবাজ। কিন্তু বিধ্বংসী হয়ে ওঠার আগেই অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে পরাস্ত হন ৭ বলে ৫ রান করে।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টসে হেরে আগে বোলিং করবে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বিপক্ষে ম্যাচে তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে খেলছে সফরকারীরা।
সিরিজের এই ম্যাচে একাদশ সাজানো কঠিন ছিল বাংলাদেশের জন্য। নাহিদ রানা ও নাসুম আহমেদ দুজনেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা না পাওয়ায় দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারেননি।
শারজা বাংলাদেশের জন্য এমনিতে অপয়া ভেন্যু। এ মাঠে এখন পর্যন্ত সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৮ ম্যাচ খেলে সবকটিতেই হার জুটেছে লাল সবুজদের। মাঠটির ৩০০তম ম্যাচের দিন নিজেদের জন্য স্মরনীয় করে রাখতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তরা?
আফগানিস্তানের হয়ে ব্যাটার সেদিকুল্লাহ আতাল অভিষেক করছেন।
বাংলাদেশ : তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।
আফগানিস্তান : সেদিকুল্লাহ আতাল, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, হাশমতুল্লাহ শহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, গাজানফার, নেঙ্গেলিয়া খারোটে, ফজল হক ফারুকী।