বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনও ধরনের প্রিপেইড কার্ড (প্রিপেইড পেমেন্ট ইন্সট্রুমেন্ট) ইস্যু বা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে না। পরিশোধ ও নিষ্পত্তি ব্যবস্থা আইন ২০২৪-এর এই বিধান লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে।
গত ২ জুলাই জাতীয় সংসদে এই আইন পাস হয়। এরপর ৪ জুলাই আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। বৃহস্পতিবার গেজেটটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই আইনের অনুপস্থিতিতে দেশে অনেক অনলাইন প্রতিষ্ঠানকে ‘হরেদরে’ এ ধরনের প্রিপেইড কার্ড চালু করতে দেখা গেছে। এ ধরনের কার্ড ক্রয় করতে যে পরিমাণ অর্থ লাগে, তা দিয়ে কেনাকাটা করা যায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ অর্থের পণ্য। ফলে বড় ধরনের আর্থিক মুনাফা লাভের আশায় অনেকেই এই ধরনের কার্ড ক্রয় করত।
এখন থেকে যে কোনও ধরনের প্রিপেইড পেমেন্ট ইন্সট্রুমেন্ট ইস্যু করতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে।
ওই আইনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া জনসাধারণের কাছ থেকে বিনিয়োগ গ্রহণ, ঋণ বিতরণ, অর্থ সংরক্ষণ বা আর্থিক লেনদেনের উদ্ভব হয়- এমন কোনও অনলাইন বা অফলাইন প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা যাবে না।
আইনে আরও বলা হয়, কোনও ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনও পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ, পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনা বা ইলেকট্রনিক মুদ্রায় পরিশোধ সেবা দিতে পারবে না। এই আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ হবে আমলযোগ্য, অজামিনযোগ্য এবং অ-আপসযোগ্য।
অপরাধযোগ্য এমন কোনও কাজ দেশের বাইরে বসে করলে এবং তার ফলে দেশের ভেতরে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাও এই আইনে শাস্তিযোগ্য।
এই বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে, “যদি কোনও ব্যক্তি বাংলাদেশের বাহিরে এই আইনের অধীন কোনও অপরাধ সংঘটন করে থাকে, যা বাংলাদেশে সংঘটন করলে এই আইনের অধীন দণ্ডযোগ্য হতো, তাহলে এই আইনের বিধানাবলী এইরূপে প্রযোজ্য হবে যেন ওই অপরাধটি তিনি বাংলাদেশেই সংঘটন করেছেন।”
এতে আরও বলা হয়, “যদি কোনও ব্যক্তি বাংলাদেশের বাহির হতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এই আইনের অধীন কোনও অপরাধ সংঘটন করে থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনের বিধানাবলী এইরূপে প্রযোজ্য হবে যেন ওই অপরাধের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া বাংলাদেশেই সংঘটিত হয়েছে।”
যদি কোনও পেমেন্ট সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের কাছে অদাবিকৃত টাকা থাকে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
এ বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে, ‘পরিশোধ ব্যবস্থা পরিচালনাকারী, পরিশোধ ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী, পরিশোধ সেবাদানকারী বা এই আইনের অধীন অনুমোদন বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে গ্রাহক বা বিনিয়োগকারীর অদাবিকৃত কোনও স্থিতি থাকলে ওই স্থিতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে হস্তান্তর করতে হবে।”