Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
এনবিআরের প্রাক-বাজেট আলোচনা

কর্পোরেট আয়কর ২.৫% কমানোর প্রস্তাব বাংলাদেশ চেম্বারের

NBR-BCI
[publishpress_authors_box]

কোম্পানি পর্যায়ে বা কর্পোরেট আয়কর হার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)।

বৃহস্পতিবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনায় এ প্রস্তাব দেন বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ।

ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি বলছে, উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে। তাই দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে কোম্পানি পর্যায়ে করহার ২৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনা প্রয়োজন।

রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রাক-বাজেট এ আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানে বিসিআই সভাপতি ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত বার্ষিক আয়সীমা দেড় লাখ টাকা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাবও দেন।

তিনি বলেন, “উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল কর্পোরেট করের হার নির্ধারণ জরুরি।”

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, “বাংলাদেশের কর্পোরেট করহার আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। কোনও শর্ত ছাড়াই ২.৫% শতাংশ হারে কমিয়ে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য ২৫% এবং পাবলিক ট্রেডেড কোম্পানির জন্য ২০% করার প্রস্তাব করছি।”

তিনি বলেন, বর্তমানে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২২.৫%, নন লিস্টেড কোম্পানির জন্য  ২৭.৫% এবং বিশেষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩০% আয়কর নেওয়া হচ্ছে। তবে রপ্তানি ও টেক্সটাইল ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক করহার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আয়কর কর্তন করা হয়।

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়সীমা দেড় লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, “প্রতিবেশী দেশ ভারতে করমুক্ত আয়সীমা ১২ লাখ রুপি। সেখানে আমাদের করমুক্ত আয়সীমা মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এটা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।”

মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় এই প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী নেতা। 

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের পর শ্রমিক অসন্তোষের কারণে তৈরি পোশাক শিল্প ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে উল্লেখ করে বিসিআই সভাপতি বলেন, “এই অস্থিরতার ফলে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বিদেশি ক্রেতারা তাদের অর্ডার ভারত, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর দিকে স্থানান্তর করেছে।

“শ্রমিক আন্দোলন, কারখানা বন্ধ এবং শিপমেন্টে বিলম্বের কারণে ক্রেতাদের আস্থা কমে গেছে। এই সঙ্কট মোকাবেলায় এবং রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য রপ্তানি আয়ের উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫% শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।”

এসময় ২০২৬ সালেই বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে আসার বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সমালোচনা করেন আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত মঙ্গলজনক হবে না।

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, “এর ফলে আমাদের রপ্তানি খাতের অনেক শুল্ক সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।”

এমন অবস্থায় তিনি দেশে বিনিয়োগ ব্যয় কমিয়ে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়াতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে (বার্ষিক আট কোটি টাকার কম লেনদেন) আট করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর অবকাশ এবং বিশেষ রেয়াতি ১ শতাংশ হারে টার্নওভার ট্যাক্স নিম্নতম শুল্ক (১-৩) হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা চান।

যেসব শিল্পের বার্ষিক লেনদেন ৫০ কোটি টাকার কম তাদের ৩ শতাংশ ও সেবাখাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে ভ্যাট এবং সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে কাঁচামাল, মূলধানী যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধাও চান বিসিআই সভাপতি।

প্রাক-বাজেট এই আলোচনায় মাঝারি শিল্পখাতের (বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার নিচে) পণ্যে ৪ শতাংশ ও সেবাখাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে ভ্যাট এবং মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানিতে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ হারে শুল্কায়নের প্রস্তাব দিয়েছে বিসিআিই। বৃহৎ শিল্প খাতেও একই সুবিধা চেয়েছে সংগঠনটি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত