Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫

দলীয় কার্যালয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে ফখরুলের সংবাদ সম্মেলন

গত ২১ আগস্ট চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা। ফাইল ছবি : সকাল সন্ধ্যা
গত ২১ আগস্ট চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা। ফাইল ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গিয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে দেখা করলেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বুধবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে যান রাষ্ট্রদূত। আলোচনার পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনেও আসেন তিনি।

রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হরহামেশা দেখা গেলেও যৌথ সংবাদ সম্মেলন খুব একটা দেখা যায় না।

ইয়াও ওয়েন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশে বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে চায়।

দলের কার্যালয়ের চীনের রাষ্ট্রদূতের আসাটাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসাবে তুলে ধরে ফখরুল বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা করছে তার দল।

গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের মাত্রা বেড়েছিল। বড় বড় বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে বেইজিংয়ের বিনিয়োগ আসে।

আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে চীন সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু সফর সংক্ষিপ্ত হয়ে তার ফেরা তখন বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

সেই চীন সফর নিয়ে গত ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে তার এক বক্তব্য ঘিরে কোটাবিরোধী আন্দোলন চাঙা হয়েছিল। সেই আন্দোলন দমনে তার শক্ত অবস্থানে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির পর গণবিক্ষোভে তার সরকারের পতন ঘটে গত ৫ আগস্ট।

এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলেও আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সঙ্কুচিত হয়ে থাকা বিএনপি এখন প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট।

ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব।

তারপরই দলটির কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করলেন চীনের রাষ্ট্রদূত। ওই বৈঠকে ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মনি ও আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।

চীনের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান বিএনপির প্রতিনিধিরা। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর চীনের রাষ্ট্রদূতের বিএনপি চেয়ারপারসনের অফিসে আসাটা আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি।

“আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি তাদের যে কমিটমেন্ট, তাদের প্রতিশ্রুতি ডেভেলমেন্টে এবং একই সঙ্গে তারা পরিষ্কার করে বলেছেন যে, তারা (চীন) আধিপত্যবাদে বিশ্বাস করেন না।”

বিশ্বজুড়ে চীনের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “চীন সবসময় বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি তারা আগেও দিয়েছেন, এখনও দিচ্ছেন। একই সঙ্গে চীন সারা বিশ্বে যে ‍গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন সেটাও আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করছি। বিশেষ করে অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চীন যেভাবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করছে সেটার জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি।”

ফখরুল বলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা তাদেরকে স্বাগত জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সঙ্গে চীনের পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর হবে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সস্পর্ক গভীর থেকে গভীর হবে।”

এক চীন নীতিতে বিএনপির সমর্থনের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ওয়ান চায়না পলিসিতে বিএনপি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি, আমরা এখনও সেই ঘোষণাটা আরও দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই।

“তারা (চীন) মনে করেন, বিএনপির সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে এবং বাংলাদেশে চীনের যে বিনিয়োগ জনগণের উন্নয়নের জন্য, দেশের উন্নয়নের জন্য– সেটা আরও বৃদ্ধি পাবে।”

চীনের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, “চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও বিএনপি একসাথে কাজ করতে চায়। এ ব্যাপারে আমরা আজকে আলোচনাও করেছি। এই সম্পর্ককে আরও নিবিড় ও সুদৃঢ় করে আমরা কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সম্পৃক্ততার কথাও বলেন রাষ্ট্রদূত।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত