শেষ বাঁশি বাজতেই ওমানের খেলোয়াড়েরা গোল হয়ে আনন্দে মেতে উঠলেন। আর পুস্কর খীসা মিমো, আশরাফুল ইসলামদের চেহারায় দেখা গেল রাজ্যের হতাশা। কেউ কেউ গোলপোস্টের নিচে বসে চোখের জল মুছতে লাগলেন। ততক্ষণে ওমানের কোচকে কাঁধে তুলে নাচতে শুরু করে দিয়েছেন তাদের খেলোয়াড়েরা।
এএইচএফ কাপ হকির সেমিফাইনালে শুক্রবার ফেভারিট বাংলাদেশকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ওমান। এই হারে দীর্ঘদিন পর এশিয়া কাপে খেলার স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়েছে বাংলাদেশের।
অথচ গত ১৭ বছর ধরেই মেনস এএইচএফ কাপ হকি মানেই বাংলাদেশের আধিপত্য। বাংলাদেশের দাপট। সেই ২০০৮ সাল থেকে এই টুর্নামেন্টে টানা চারবারের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবং প্রতিবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে এশিয়া কাপে খেলতে গেছে। কিন্তু এবারই সেই ধারবাহিকতায় ছেদ পড়ল। এর আগে ১৯৮২ সালে এশিয়া কাপ শুরুর পরে নিয়মিত এই প্রতিযোগিতায় খেলছে বাংলাদেশ।
আগামী আগস্ট মাসে ভারতের রাজগিরে অনুষ্ঠিত হবে এবারের এশিয়া কাপ। যেখানে সুযোগ পেয়েছে এই টুর্নামেন্টের দুই ফাইনালিস্ট ওমান ও চীনা তাইপে। বাংলাদেশকে এখন তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ের জন্য খেলতে হবে ২৭ এপ্রিল। প্রতিপক্ষ কাজাখস্থান।
যেন এই বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার কথাই ছিল হকির। হকি ফেডারেশনের ‘অদ্ভূতুড়ে’ সিদ্ধান্তে দেশের সেরা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার প্রায় শেষের পথে।
বয়স ৩২ এর বেশি, এই অজুহাতে জাতীয় দল থেকে বাদ দেওয়া হয় জিমিকে। এ নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চিঠি পাঠালেও, নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে ফেডারেশন।
অথচ রাসেল মাহমুদ জিমি দেশের হকির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। ঝিমিয়ে পড়া খেলাটায় পারফর্ম করে লম্বা সময় লাইম লাইটে ৩৭ বছর বয়সী খেলোয়াড়। তবে ঠুনকো এক অজুহাতে ছোট খেলাটির বড় তারকাকে বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছে ফেডারেশন। বয়স ৩২ এর বেশি হওয়ায় নাকি জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি।
আর জিমিকে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দলের শক্তি কমে গেছে। গ্রুপের দুর্বল প্রতিপক্ষের সঙ্গে টানা চার ম্যাচে জিতলেও আসল অ্যাসিড টেস্টে হেরে গেল বাংলাদেশ।
ম্যাচে বাংলাদেশ সেভাবে লড়াই করতে পারেনি। বরং স্টিক ওয়ার্কে বহুগুণ এগিয়ে ছিল ওমান। বাংলাদেশের ১টি করে গোল করেছেন আশরাফুল ইসলাম, ওবায়দুল জয় ও সোহানুর রহমান সবুজ।
ওমানের আলিয়াস আল নওফুল ও আল ফজল রাশাদ করেছেন দুটি করে গোল। ফাহাদ লওতি করেন ১টি গোল।