শুক্রবার পাঠানো বিসিবির ভিডিওতে মেহেদি হাসান মিরাজ আশা দেখিয়েছিলেন। অতীত টেনে আফগানিস্তানকে অনেকবার হারানোর কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। কিন্তু আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে তার কিছুই টিকছে না।
আফগানিস্তানকে এখন আর চাইলেই হারাতে পারে না বাংলাদেশ। বরং তার উল্টো হয়। রশিদ খান-মোহাম্মদ নবিদের হারাতে এখন বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ চ্যালেঞ্জ নিতে হয়। আর সেই চ্যালেঞ্জে জয়ের আনন্দের চেয়ে হারের হতাশা জুটে বেশি।
সেই হতাশার অনেকটা দেখা গেল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে। জয়ের অবস্থানে থাকা দল মাত্র ২৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল। এমন হারের পর চাপ এখন বাংলাদেশের ওপরই। ক্রিকেটাররাও জানেন এ সিরিজে জিততে হলে বিরাট পাহাড় ডিঙ্গাতে হবে তাদের।
প্রথম এবং সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা আল্লাহ রহমান গাজানফার। বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন রহস্যময় বোলার আসলে কম্পিউটার অ্যানালিস্টের বের করে দেওয়া উপায় ছাড়া ওই বোলারকে সামলানো কঠিন। যেমন ছিল অজন্তা মেন্ডিস, মাহেশ থিকসানাদের বেলায়ও।
শুরুতে মেন্ডিস-থিকসানাদের সমলানো কঠিন হতো। যেমন ছিল রশিদ-মুজিবরাও। তবে সময়ের সঙ্গে তাদের সামলানোর পথ বের করেছে দলগুলো। বাংলাদেশ এ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মাঝে ফাঁকা থাকা দুইদিনে গাজানফারকে সামলানোর কতটা উপায় বের করেছে তা দ্বিতীয় ম্যাচে দেখা যাবে।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে যেমন রহস্য হয়ে দাঁড়িয়েছেন এ স্পিনার তাতে শান্ত-মিরাজদের জন্য নতুন সমস্যা হবেন সিরিজের বাকি দুই ম্যাচেও। কোন বলটি কিভাবে আসবে তা আগে থেকে ভেবে রাখতে গিয়ে রান করার দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে পারেন বাংলাদেশ ব্যাটাররা।
দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি সিরিজে ফেরার। আফগানদের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজে আর ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে গত বছর ২-১ ব্যবধানের হার হজম করতে হয়। এবার সেই অতীত বদলাবে কি!
পরের চ্যালেঞ্জ ব্যাটিংয়ে। আঙুলের ইনজুরিতে এ সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন মুশফিকুর রহিম। দলের বিপদে বরাবরই হাল ধরা অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে হারিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনে বড় ধাক্কা লাগল। একমাত্র মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছাড়া সর্বোচ্চ অভিজ্ঞতা এখন কারও নেই।
মাহমুদউল্লাহও গত ম্যাচে আফগানদের মোহাম্মদ নবির মতো অভিজ্ঞতার ঝাঁপি খুলে ব্যাট হাতে এগিয়ে আসতে ব্যর্থ হন। শান্ত-মিরাজরা কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন কিন্তু ভুল শটের অভ্যাস তাদের এগিয়ে চলায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ব্যাটিংয়ে নিজেদের ভুল শুধরে মুশফিকের অভাব পূরন করতে হবে।
মুশফিক না থাকায় আর অভিষেক হতে পারে জাকের আলি অনিকের। ছোট ফরম্যাটে খেলার অভিজ্ঞতা ও পারফরম্যান্সের কারণে দলে থাকা অপর উইকেট কিপার ওপেনার জাকির হাসানের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন।
এছাড়া দলের সঙ্গে নাসুম আহমেদ ও নাহিদ রানা যোগ দেওয়ায় বোলিংয়ে কিছুটা বৈচিত্র্য আসবে। বোলিং আক্রমণেও পরিবর্তন আসতে পারে।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের শেষ চ্যালেঞ্জটা লজ্জার রেকর্ড থেকে বাঁচার। শারজার এই স্টেডিয়ামে মোট ৯ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের হেগলি ওভালেও ৯ ম্যাচ হারের লজ্জা আছে। একমাত্র মালদ্বীপ কাতারের একটি স্টেডিয়ামে এশিয়া অঞ্চলের আইসিসি বাছাই টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়ে ১০ ম্যাচ হেরেছিল। এক মাঠে সবচেয়ে বেশি হারের রেকর্ড ওটাই। আর শারজাতে হেরে গেলে বাংলাদেশ ওই রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলবে।