রেকর্ডের পর রেকর্ড ভাঙছিল ভারত। আর হায়দরাবাদে অসহায়ের মতো দেখছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা। নিজেদের উপর হয়ত হারিয়ে ফেলেছিলেন বিশ্বাসটাও। এজন্যই কিনা, একই প্রান্তে দুই ব্যাটার চলে যাওয়ার পরও রান আউট করতে পারলেন না বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। পাড়ার ক্রিকেটের মতো ভুল করলেন ম্যাচ জুড়েই।
এটা কাজে লাগিয়ে ভারত করেছিল ২৯৭ রান, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর টেস্ট খেলা কোন দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর। ১৩৩ রানের বড় ব্যবধানে হারে ৩-০’তে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সম্প্রচারকারী চ্যানেলে নিজেদের উপর বিশ্বাস না হারানোর আকুতিই জানালেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
শান্ত বললেন, ‘‘আমরা সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারিনি। আমরা ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। কয়েকটি ম্যাচে আমরা কয়েক ওভার ভালো বল করেছি তবে আজ ভালো বোলিং করিনি। আমাদের নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি যে কোন দলের বিপক্ষে।’’
প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর দেশের মাঠের উইকেট বদলের কথা বলেছিলেন শান্ত ও তাসকিন আহমেদ। শান্ত সিরিজ শেষেও বলে গেলেন একই কথা, ‘‘ঘরের মাঠের উইকেটগুলো পরিবর্তন করতে হবে আর দায়িত্ব নিতে হবে খেলোয়াড়দের। হৃদয় যেভাবে ব্যাটিং করেছে সেটা দারুণ ছিল। টপ অর্ডারদের অনেক উন্নতি করতে হবে।’’
এই ম্যাচে চার-ছক্কাতেই ২৩২ রান তুলেছে ভারত। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা বিশ্ব রেকর্ড। তারা ছক্কা মেরেছিল ২২টি, যা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে ২৬ ছক্কার কীর্তিটা অবশ্য নেপালের। রানের বিচারে ১৩৩ রানের হারটা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ।
সঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার যাদব গড়েছিলেন ১৭৩ রানের জুটি যা বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো উইকেটেই সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ৬৬ রান দিয়েছেন তানজিম হাসান। ম্যাচ শেষে তানজিম বললেন, ‘‘ভারতের এই সফরটা একটা ধাক্কা দিয়ে যাবে।’’
অন্যরা এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের চেয়ে কত এগিয়ে গেছে, ভারতের দ্বিতীয় সারির দলের সঙ্গে খেলে ভালোভাবেই বুঝলেন শান্তরা। ৬৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে সংবাদ সম্মেলনে আসা তাওহিদ হৃদয় বললেন পিছিয়ে পড়ার কারণ, ‘‘প্রতিটা দলেই টপ অর্ডার থেকে রান হয়। টপ ফোর থেকে যদি বড় রান আসে, তাহলে রান ১৮০ হয়। আমাদের সবকিছু মিলিয়ে অনেক জায়গা আছে উন্নতির। এই সিরিজে আমাদের জন্য অনেক কিছু শেখার আছে। আশা করি সেটা করতে পারব।’’
সেই শেখাটা দ্রুত না হলে পেছাতেই থাকবে বাংলাদেশ। দলের কমতি নিয়ে হৃদয় বললেন, ‘‘সব জায়গাতেই কমতি ছিল। এক দিন ব্যাটিং ভালো হয়েছে তো বোলিং ভালো হয়নি, বোলিং ভালো হলে ব্যাটিং। আমরা আসলে এই রকম উইকেটে খেলি না। আমি অজুহাত দিচ্ছি না। তবে এ ধরনের উইকেটে আমরা যত খেলব, তত ভালো খেলব।’’
খেলোয়াড়দের উইকেট বদলের এই দাবিটা কত দিনে পূরণ হবে?