Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪
Beta
বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪

৮ বছর পর বাংলাদেশের আরেক ফুটবল ট্র্যাজেডি

এটাই বাংলাদেশের ফুটবলের বাস্তবতা। কোচ হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে ভুটানের কাছে হার বাংলাদেশের। ছবি: বাফুফে
এটাই বাংলাদেশের ফুটবলের বাস্তবতা। কোচ হাভিয়ের কাবরেরার অধীনে ভুটানের কাছে হার বাংলাদেশের। ছবি: বাফুফে
Picture of ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আবারও ‘ভুটান ট্র্যাজেডি’ ফিরিয়ে আনল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর ভুটানের কাছে হেরেছিল ৩-১ গোলে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে টম সেইন্টফিটের অধীনে যে পরাজয় বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে ‘ভুটান ট্র্যাজেডি’ নামেই পরিচিত হয়ে আছে।

প্রায় ৮ বছর পর আরেক ট্র্যাজেডির জন্ম দিল বাংলাদেশ ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে। দুই ম্যাচের ফিফা প্রীতি ফুটবলের শেষটিতে ১-০ গোলে হেরেছে লাল-সবুজের দল। শেষ সময়ে ভুটানের ফরোয়ার্ড কিংগা ওয়াংচুক করেন একমাত্র গোল। তবে এই হারে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হয়েছে।   

এই সফরে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য দুটি জয় তুলে নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করা। আগামী মার্চে এশিয়া কাপের তৃতীয় রাউন্ডের বাছাইয়ে তিন নম্বর পটে থাকা যায়। কিন্তু শেখ মোরসালিনের ‘পড়ে পাওয়া’ গোলটিতে কোনও রকমে প্রথম ম্যাচে উতরে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচটি জিতলেও মাঠের পারফরম্যান্স মোটেও ভাল ছিল না। রোববার তার চেয়েও খারাপ খেলেছে দ্বিতীয় ম্যাচে।

বল দখলেও পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ।

আক্রমণভাগে রাকিব হোসেনের অনুপস্থিতি যে বেশ ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে সেটা বোঝাই যায়। প্রথম ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়া রাকিব বেঞ্চে বসে দলের হার দেখলেন।

বাংলাদেশের ফুটবলারদের ফিটনেস লেভেল যে যথেষ্ট খারাপ সেটা বোঝা গেছে বল দখলের লড়াইয়ে। ভুটানিদের গতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশিরভাগ সময় খেই হারিয়েছেন। টার্ফের গতিও বাধা হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। বাধা ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতায় থাকা স্টেডিয়ামও।   

কিন্তু তার মানে এই না যে ভুটানের কাছে এভাবে হারতে হবে। র‌্যাঙ্কিংয়ে যদিও দুই ধাপ এগিয়ে ভুটান। বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং ১৮৪, যেখানে ভুটানের ১৮২।

কিন্তু এই ভুটান যেন চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে পারে। উল্টো মাঠে হাভিয়ের কাবরেরার কোনও পরিকল্পনা যেন কাজে আসেনি। সত্যি বলতে কাবরেরা কি কৌশলে খেলিয়েছেন ফাহিম, মোরসালিনদের সেটা তিনিই ভালো জানেন।

অ্যাটাকিং থার্ডে বল নিয়ে ঢুকেও কেউ পোস্টে শট নিতে পারেননি। যেন গোল পোস্টে শট নেওয়াটা ভুলেই গেছেন। পুরো ম্যাচে যা একটু একাই খেলেছেন শেখ মোরসালিন। সদ্য সাফজয়ী রাব্বি হোসেন রাহুল বদলি হিসেবে নেমে একটু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অনভিজ্ঞ রাহুল ভুটানি ডিফেন্ডারদের শরীরি লড়াই বা ফিটনেসে কোন কিছুতেই পেরে উঠেনি।

মাঝমাঠে সিনিয়র সোহেল রানা বিল্ড আপ ফুটবল খেলার বদলে প্রতিপক্ষকে অহেতুক ধাক্কা দেওয়ার দিকেই বেশি মনোযোগি ছিলেন।

ভুটানের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ এই ম্যাচে দুই পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে। প্রথম ম্যাচে ৫ মিনিটে গোল পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই ম্যাচে গোলের সুযোগ সেভাবে তৈরি করতেই পারেনি। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের গোলের পেছনে ফরোয়ার্ডদের সাফল্যের চেয়ে ভুটানের গোলরক্ষকের ব্যর্থতাই বেশি ছিল। কিন্তু এই ম্যাচে ভুটানের রক্ষণ ও গোলরক্ষক তেমন ভুলই করেনি।

স্বাগতিকরা শুরু থেকেই খানিকটা গোছালো ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে তো এগিয়েই যেতে পারত ভুটান। মিডফিল্ডার শেলত্রিম নামগিয়েলের দুর্দান্ত শট কোনও রকমে ফিস্ট করে কর্ণারের বিনিময়ে বাঁচান গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

৮ বছর পর আবারও ভুটানের কাছে হার বাংলাদেশের।

বাংলাদেশের ফুটবলারদের শরীরি ভাষায় যেন বলে দিচ্ছিল ম্যাচটি কোনও রকমে গোলশূন্য ড্র করতে চায় তারা। ড্রই যখন ম্যাচের নিয়তি বলে ধরে নিচ্ছিল সবাই। তখন যোগ হওয়া সময়ের শুরুতে ডান প্রান্ত থেকে এক ক্রসে বদলি ফুটবলার কিঙ্গা প্লেসিংয়ে গোল করেন।

ম্যাচের যোগ হওয়া বাকি ৫ মিনিটে বাংলাদেশ গোল শোধের মতো কিছুই করতে পারেনি। উল্টো সাধারণ বল রিসিভ করতে না পেরে ভুটান বাংলাদেশের অর্ধে থ্রো পেয়েছে। কিছুক্ষণ পর রেফারি শেষ বাঁশি বাজালে চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে ‘ভুটান ভুটান’ বলে আনন্দ উল্লাস করে দর্শকেরা।

সত্যি বলতে, ভুটানের বিপক্ষে পরিকল্পনাহীন ফুটবলেরই শাস্তি পেল বাংলাদেশ। 

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত