Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ১৩ মে, ২০২৫

আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা : ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭

Tripura_Agartala
[publishpress_authors_box]

ভারতের ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার ঘটনায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বরখাস্ত তিন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে ছিলেন।

এছাড়া একজন ডেপুটি এসপিকে ক্লোজ করে পুলিশ সদরদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আর হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৭ জনকে।

পশ্চিম ত্রিপুরার এসপি কিরন কুমারের বরাতে ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এই খবর দিয়েছে।

কিরন কুমার বলেন, “এ ঘটনায় আগরতলার নতুন রাজধানী কমপ্লেক্স (এনসিসি) থানা একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।”

তিনি আরও জানান, এ ঘটনার পর বাংলাদেশ কনসুলেটের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে সিআরপিএফ এবং ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের কর্মীরা বাংলাদেশের সাবেক ইসকন পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নিপীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির একটি প্রতিনিধিদল ত্রিপুরার বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। এতে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের জানমালের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

এসময় কিছু বিক্ষোভাকারী সহকারি হাই কমিশন ঢুকে ভাঙচুর চালায় ও বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে।

ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেন, “প্রতিবাদ মিছিল চলাকালে একদল যুবক আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারি হাই কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ গ্রহণযোগ্য, কিন্তু এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।”

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ঘটনাটিকে ‘দুঃখজনক’ বলে বর্ণনা করেছে। তারা বলেছে, কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু হওয়া উচিৎ নয়। নয়াদিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বাংলাদেশ হাই কমিশন এবং উপ ও সহকারি হাইকমিশনগুলোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।

আগরতলার হামলার বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে নিন্দা ও কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, হামলার ঘটনা বাংলাদেশ সরকারকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। এ ঘটনা জাতিসংঘের কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা সনদের লঙ্ঘন।

সোমবার মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপ হাই কমিশনের কাছেও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) আয়োজনে কয়েকশ লোক বিক্ষোভ করেছেন। ত্রিপুরার হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিও ভিএইচপির সহযোগী সংগঠন।

বাংলাদেশিদের সেবা বন্ধের ঘোষণা ত্রিপুরার হোটেলগুলোর

বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের প্রতিক্রিয়ায় ত্রিপুরার হোটেলগুলো বাংলাদেশি নাগরিকদের সেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (এটিএইচআরওএ) সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেয়। এটিএইচআরওএ জানায়, বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার অবমাননার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সোমবার এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, “আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ এবং সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাই। আমাদের জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়েছে এবং বাংলাদেশে মৌলবাদীদের একাংশ সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। এর আগে এমন ঘটনা ঘটলেও এবার তা সীমা ছাড়িয়েছে।”

তার আরও দাবি, “বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ত্রিপুরায় আসা মানুষদের সেবা দিয়ে থাকি। তবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি হওয়া আচরণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।”

এর আগে আইএলএস নামের একটি বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালও সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত