Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

বাংলাদেশের প্রতিরোধের গল্প রূপ নিয়েছে ট্র্যাজেডিতে

বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় বাংলাদেশ খেলছে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে। ছবি : বাফুফে
বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় বাংলাদেশ খেলছে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে। ছবি : বাফুফে
[publishpress_authors_box]

শেষদিকে আর মনঃসংযোগটা ধরে রাখতে পারেনি তপু-বিশ্বনাথরা। আর তাই ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের লড়াইয়ের গল্পটা মহিমান্বিত হয়নি। হয়ে গেছে ট্র্যাজেডি। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচের ৯৪ মিনিটে গিয়ে ভেঙে গেল স্বাগতিকদের প্রতিরোধের দেয়াল। মিশেল তিরমানিনি’র গোলে ১-০ ব্যবধানে ফিলিস্তিন ম্যাচ জিতে চুরমার করে দিয়েছে স্বাগতিকদের ১ পয়েন্টের স্বপ্ন।

২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাই
বাংলাদেশ ০-১ ফিলিস্তিন

একই সঙ্গে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় বাংলাদেশের অপরাজিত থাকার রেকর্ডও টুটে গেছে। এই হারে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে বাংলাদেশ ১ পয়েন্ট নিয়ে সবার শেষেই অবস্থান করছে।

ফিলিস্তিনের আধিপত্যে শুরু

এই বাংলাদেশ দল ফিলিস্তিনের কাছে ৫ গোল খেয়ে ফিরেছে কুয়েত থেকে। প্রথমত ফুটবলীয় টেকনিকে তারা বিস্তর এগিয়ে, র‌্যাঙ্কিংয়েও এগিয়ে ৮৬ ধাপ। কুয়েতের জায়গায় বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা হয়েছে বলেই খেলার গুনাগুণ হারিয়ে যেতে পারে না। তারা দাপটে খেলবে, এটাই সত্যি। বসুন্ধরা কিংসেও তারা শুরু করে সেই দাপুটে ফুটবল। সবসময় পরীক্ষা নিয়েছে বাংলাদেশের রক্ষণ ও গোলরক্ষকের।

তাদের এই প্রতিরোধের গল্পে গোলরক্ষক মিতুল মারমা অনন্য। অনেক সুযোগ তৈরি করেও ফিলিস্তিন নির্ধারিত সময়ে পারেনি মিতুলকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠাতে। অন্যদিকে স্বাগতিকদের ছিল ১ পয়েন্টের স্বপ্ন, তাই আক্রমণের বিলাসী কৌশল বাদ দিয়ে তারা খেলেছে কাউন্টার অ্যাটাকে। তপু-শাকিল-সাদ-বিশ্বনাথের সঙ্গে রক্ষণ সামলাবে পুরো দল। বল নিজেদের পায়ে পড়লেই সেখান থেকে শুরু হবে কাউন্টার অ্যাটাক।

দুটো দুর্দান্ত প্রতিআক্রমণ

প্রতিআক্রমণ বা কাউন্টারে সফল হতে গেলে লাগে গতি আর নিখুঁত পাস। এটা বাংলাদেশ যে খুব পারে তা নয়, তবে উন্নতি করছে আস্তে আস্তে। ৩০ মিনিটে অমন এক আক্রমণে জেগে উঠেছিল বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার দারুণ এক লং বল নিয়ন্ত্রণে নেন রাকিব হোসেন। এক ডিফেন্ডারের প্রহরায় থাকার পর তিনি বলটি ঠেলেন বক্সে মজিবর রহমান জনির কাছে। প্রথম দফায় বলটি আয়ত্তে নিয়েও পরে হারিয়ে সুযোগটাই নষ্ট করেন।

মিনিট পনের বাদে জামালের আরেকটি অসাধারণ থ্রু বলে খুলে যায় ফিলিস্তিনের গোলমুখ। কিন্তু ফাহিম শটটি ঠিকঠাক নিতে পারেননি আগুয়ান ফিলিস্তিনি গোলরক্ষকের জন্য। গোলরক্ষকের কয়েক সেকেন্ড দেরি হলেই স্টেডিয়ামে গোলের রঙ মশাল জ্বলতো। বদলে যেত খেলার ধারাও।      

প্রতিরোধের দেয়ালের নাম মিতুল

ছোটখাটো গড়নের মিতুল মারমা দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন ফিলিস্তিনের সামনে। প্রথমার্ধে খুব বড় পরীক্ষা দিতে হয়নি। তবে বিরতির পর অবিশ্বাস্য দুটো সেভ করেছেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক। ৫৭ মিনিটে ‘পয়েন্ট ব্লাঙ্ক’ দূর থেকে নেওয়া দাব্বাহ’র হেড ফিস্ট করে তিনি অক্ষত রাখেন স্বাগতিকদের গোলপোস্ট।

ওই বিশ্বমানের সেভের মিনিট দশেক পর খারুবের প্রচণ্ড গতির শট নেন গ্রিুপে। সামনে এক দঙ্গল খেলোয়াড় থাকায় ওই শটে চোখ রাখা কঠিনই ছিল। কিন্তু কখনও মনোযোগ হারাননি এই তরুণ গোলরক্ষক, সবসময় বলে চোখ রেখে লাল-সবুজের গোলপোস্ট আগলে গেছেন। একবার বড় ভুল করতে বসেছিলেন প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দিয়ে। ভাগ্য ভাল যে ওদে দাব্বাহ ফাঁকা পোস্টেও রাখতে পারেননি বলটি। মিতুল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন বাংলাদেশের ভাগ্যটাও  নিয়ে চলে গেলেন।

শেষমুহূর্তে ভেঙে গেল দেয়াল

৮৪ মিনিটে মিতুল গেলেন, মাঠে ঢুকলেন নতুন গোলরক্ষক মেহেদি হাসান শ্রাবণ। উড়ে আসা এক বলে ফ্লাইট মিস করে বুঝিয়ে দেন তার নড়বড়ে অবস্থা। ডিফেন্ডারের ক্লিয়ারেন্সে সেই যাত্রায় রক্ষা পেলেও ৯৪ মিনিটে সব পণ্ড হয়ে যায়। ভেঙে যায় বাংলাদেশের প্রতিরোধের দেয়াল। তাতে অবশ্য শ্রবাণের কোনও দায় নেই। রক্ষণের ভুলে অরক্ষিত থাকেন মিশেল তিরমানিনি। ফ্রি-কিকটি এক ফিলিস্তিনির মাথা ছুঁয়ে পড়ে তার সামনে, এরপর মিশেলের নিখুঁত প্লেসিংয়ে ভেঙে পড়ে লাল-সবুজের প্রতিরোধের দেয়াল।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত