পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯০ মিনিটের খেলায় তখনও ১-২ গোলে পিছিয়ে বাংলাদেশ। যোগ হওয়া সময় রেফারি দিলেন আরও ৭ মিনিট। ওই ৭ মিনিট পুরোপুরি কাজে লাগাতে চেয়েছিল বাংলাদেশের যুবারা। শেষ পর্যন্ত অনূর্ধ্ব-১৭ সাফের সেমিফাইনালে হারতে হারতে দারুণভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ। এবং যোগ হওয়া সময়ের শেষ মিনিটে মোহাম্মদ মানিকের দুর্দান্ত গোলে ১-১ গোলে সমতায় ফেরা।
এরপরই নাটকীয় টাইব্রেকার। সাডেনডেথে আশিকুর রহমানের শট জালে জড়াতেই উল্লাসে মেতে ওঠে বাংলাদেশের যুবারা। শনিবার থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে পাকিস্তানকে ৮-৭ গোলে হারিয়ে পৌঁছে গেল স্বপ্নের ফাইনালে।
৩০ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্টেরা ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে দুপুরে অন্য সেমিফাইনালে নেপালকে ৪-২ গোলে হারায় ভারত।
অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে এই বাংলাদেশ দলের ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়াটা দারুণ। মিডফিল্ডে নিখুঁত পাসিং এবং ডিফেন্ডাররাও ঠান্ডা মাথায় বল দিয়েছে ওপরে। শর্ট ও লং পাসেও ভালো ব্যালেন্স ছিল। দুই উইং থেকে ক্রসও বেশ ভালোই হয়েছে, সেই অনুসারে বক্সে ফুটবলারদের অবস্থানগুলোও সঠিক ছিল। এমনকি কর্ণার ও ফ্রি কিকও ভালো ছিল। শুধু এই দলের বড় দুর্বলতা ভালো মানের একজন ফিনিশার নেই।
যে কারণে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হেরেছে। মালদ্বীপের বিপক্ষেও ১-১ গোলে ড্র করতে হয়েছে। গত দুই ম্যাচে মাত্র ১ গোল দেওয়া বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিপক্ষেও পুরো ব্যাকফুটে থেকে খেলতে শুরু করে। যদিও ৩২ মিনিটে কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে শাহাব আহমেদের গোলে পাকিস্তান এগিয়ে গেলেও হাল ছাড়েনি বাংলাদেশ।
পিছিয়ে পড়েও বারবার ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের যুবারা। কিন্তু ৬১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আবদুল রেহমান ২-০ করে ফেললে আরও চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
শেষ পর্যন্ত সেই চাপ দারুণভাবে সামলেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে মোরশেদ আলী প্লে মেকিংয়ে ছিল দুর্দান্ত। এর সঙ্গে লড়াকু বাংলাদেশকে আশা দেখাতে শুরু করে মোহাম্মদ মানিকের প্রথম গোল। ৭৪ মিনিটে বদলি হিসেবে খেলতে নামা মোহাম্মদ মানিকের গোলে স্কোর হয় ২-১। এরপর সেই মানিকই যোগ হওয়া সময়ের শেষ দিকে ২-২ করে ম্যাচ টেনে নেন টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারের স্নায়ুক্ষয়ী লড়াইয়ে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হারিয়ে দেয় পাকিস্তানকে। যেখানে বাংলাদেশের ৮ ফুটবলারই গোল দিয়েছেন। কিন্তু পাকিস্তানের আবদুল ঘানির শট ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশের বদলি গোলরক্ষক আলিফ রহমান ইমতিয়াজ।