আলো-আঁধারির লুকোচুরিতে অবশেষে তৃতীয় দিনের খেলা আর মাঠে গড়ালোই না। বিকেল ৩টা ৫৬ মিনিটের দিকে দুই আম্পায়ার নিতিন মেনন ও জোয়েল উইলসন তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন।
এতে মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৮৩ রান তুলেছে। লিড এসেছে ৮১ রানের। মেহেদি হাসান মিরাজ তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে (১৭১ বলে ৮৭) নাঈম হাসান অপরাজিত ১৬ রানে। এই জুটিতে রান এসেছে ৩৩।
খেলা না হওয়াতে বাংলাদেশের স্বস্তি। এমন কন্ডিশনে মিরপুরের উইকেটে ব্যাট করা খুব কঠিন হতো। সেট ব্যাটারদের জন্যও আলো-আঁধারির সময়ে মিরপুরে ব্যাট করা দুঃসহ ব্যাপার। দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকা মিরাজকে আপাতত সেই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সকালে সজীব মানসিকতা নিয়েই নতুন শুরু করতে পারবেন।
মিরাজের ব্যাটে বাংলাদেশ তাদের কঠিন অবস্থা কাটিয়ে উঠেছে পুরো দিনে। দল ইনিংস হার থেকে ৯০ রান দূরে থাকা অবস্থায় ক্রিজে এসেছিলেন মিরাজ। ৫৪ রান করা জাকের আলিকে নিয়ে ১৩৮ রানের জুটিতে দলকে লিড এনে দেন। পরে নিজে ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেন।
মিরাজের লড়াকু এই ইনিংসে হারের ভয়ে থাকা ম্যাচে এখন জয়ের স্বপ্নও দেখছে বাংলাদেশ।
আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ
পর্যাপ্ত পরিমাণ উজ্জ্বলতা নেই। তাই খেলা মাঠে গড়ালেও ৫ ওভারের বেশি এগাতে পারেনি। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা বৃষ্টিতে এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার পর্যন্ত বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৮৩ রান তুলেছে। লিড এসেছে ৮১ রানের। মেহেদি হাসান মিরাজ তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে (১৭১ বলে ৮৭) নাঈম হাসান অপরাজিত ১৬ রানে। এই জুটিতে রান এসেছে ৩৩।
খেলা শুরু হলেও বৃষ্টির ভয় থাকছে
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট রোমাঞ্চকর মোড় নিয়েছে। মেহেদি হাসান মিরাজের ব্যাটেও বাংলাদেশ লড়াইয়ের অবস্থানে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তার লড়াইয়ে বাংলাদেশ লিড পেয়েছে ৬৫ রানের।
তবে দিনের মাঝপথে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে ২৬৭ রানে থাকা অবস্থায় বৃষ্টি নামে। মিরাজ-জাকেরের ১৩৮ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের এগিয়ে চলায় বাধা পড়ে।
অবশেষে প্রায় ১ ঘণ্টা পর মাঠ খেলার মতো প্রস্তুত হওয়ায় বিকেল ৩টায় শুরু হচ্ছে টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা। দক্ষিণ আফ্রিকাকে এই অবস্থায় দেড়শ রানের লক্ষ্য দিতে পারলে ভালো অবস্থানে থাকবে বাংলাদেশ। সেই সম্ভাবনা নির্ভর করছে মিরাজের ব্যাটে।
বেলা ৩টায় দিনের শেষ সেশনের খেলা শুরু হলেও পুরোপুরি উজ্জ্বল অবস্থা নেই। মিরপুরের আকাশ এখনও মেঘলা। ফ্লাডলাইট জালিয়েই খেলা চলছে।
বৃষ্টি আটকে দিল মিরাজের সংগ্রাম
বাংলাদেশ দলে মেহেদি হাসান মিরাজকে ‘ক্রাইসিস ম্যান’ বললে ভুল হবে না। ঠিক সবসময় না হলেও লাল-সবুজের হয়ে অনেকবারই ক্রান্তিলগ্নে নিজের ব্যাটকে লড়াইয়ের তরবারি বানিয়েছেন। ব্যাট হাতে তার পাল্টা আক্রমণে বিধ্বংস অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। অনেকবার জয়ের হাসিও হেসেছে।
সেই মিরাজের ব্যাট মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আবারও তরবারি হয়ে উঠলো। প্রোটিয়াদের আক্রমণের ফলা কেটে দিয়ে পাল্টা আঘাত ফিরিয়ে দিল। তাতে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১১২ থেকে ৭ উইকেটে ২৬৭-তে এসে দাঁড়াল। মিরাজ অপরাজিত আছেন ১৫৫ বলে ৭৭ রানে। বাংলাদেশ লিড নিয়েছে ৬৫।
মিরাজের এই লড়াই টেস্টের তৃতীয় দিন দুপুরে থামল বৃষ্টিতে। ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল বুধবার। সেই বৃষ্টিতেই খেলা থামল চা বিরতির ঘণ্টা খানেক আগে। মিরপুরের উইকেটে শেষ ইনিংসে বর্তমান লিডের সঙ্গে আর ১০০ রান যোগ হলে প্রোটিয়াদের হারের চেপে ধরতে পারবে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ১০৬, দ্বিতীয় ইনিংসে ১১২ রানে ৬, ইনিংস হার এড়াতে তখনও ৯০ রান দরকার। নিশ্চিত হার ভয় দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। ওই সময়ই দলকে একা হাতে টেনে তুললেন মিরাজ। এই টেস্টে দলের জয়ের স্বপ্নটাও টিকে আছে মিরাজের ব্যাটেই।
দারুণ জুটি গড়ে ফিরলেন জাকের
অভিষেক টেস্ট ফিফটির স্বাদ পেয়ে খুব বেশি এগোতে পারলেন না জাকের আলি। অভিষেকে ফিফটি পাওয়া ১৯তম বাংলাদেশি ব্যাটার ফিরলেন ১১১ বলে ৫৮ রান করে। তার বিদায়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভালো টার্গেট দেওয়ার সম্ভাবনা ঝুঁকিতে পড়ে গেল।
কেশব মহারাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে দারুণ খেলছিলেন জাকের। প্রথম ইনিংসের ভুল কাটিয়ে অসাধারণ খেলছিলেন। মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে ১৩৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান। তার বিদায়ে বাংলাদেশ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান তুলেছে। লিড দাঁড়িয়েছে ৪৮ রানের।
অপরপ্রান্তে বাংলাদেশকে আরও একবার বাঁচিয়ে দেওয়া ইনিংস খেলে অপরাজিত আছেন মিরাজ। ১৪১ বলে ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৭৩ রান তার।
মিরাজ-জাকেরের ব্যাটে লড়াইয়ে বাংলাদেশ
নিরাশার মাঝে আলো দেখালেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও জাকের আলি। বাংলাদেশের ধ্বস থামিয়ে অনেকবারই সম্মানজনক স্কোরের দিকে দলকে নিয়েছেন মিরাজ। আরও একবার সেই চেষ্টায় প্রাথমিক সফলতা পেলেন।
মিরাজের নবম টেস্ট ফিফটিতে ইনিংস হারের সম্ভাবনা দূর করেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন প্রথম সেশন শেষে ৬ উইকেটে ২০১ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ২০২ রানের লিড টপকে পাল্টা লিড নেওয়া গেছে। মিরাজ ১০৭ বলে ৫৫ ও জাকের ৭১ বলে ৩০ রানে অপরাজিত।
১১২ রানে লিটন দাসের বিদায়ের পর আনেকটি ইনিংস হার চোখ রাঙাচ্ছিল বাংলাদেশকে। শেষ দুই ব্যাটার হিসেবে মিরাজ ও জাকের জুটি বাঁধলেও আশার কিছু ছিল না। কিন্তু উইকেটে অনেকটা সময় নিয়ে খেলে আশা তৈরি করেছেন দুজনে।
উইকেটে সেট হয়ে জুটি গড়ায় চেষ্টায় সফল হন। দুজনের জুটি ৮৯ রানের।
প্রথম ঘণ্টায় আশাজাগানিয়া কিছু নেই
জাকের আলি ও মেহেদি হাসান মিরাজ বল ডিফেন্স করে সময় ব্যয় করছেন। তবুও ভালো ভুল শট খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছেন না। দুই ব্যাটারের উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টার পরও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন প্রথম সেশনে আশাজাগানিয়া কিছু নেই বাংলাদেশের জন্য।
প্রথম সেশন পানি পানের বিরতি পর্যন্ত জাকের উইকেটে আছেন ২৬ বলে ৭ রান করে। মিরাজ ৪০ বলে করেছেন ১২ রান। বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৩২ রান। ইনিংস হার এড়াতে এখনও ৬৯ রান দরকার।
দিনের শুরুতে দুই সেট ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল হাসান জয় বিদায় নেন তিন বলের ব্যবধানে। লিটন দাসের ওপর বড় ইনিংস খেলার চাহিদা থাকলেও হতাশ করেছেন। মাত্র ১৫ বল টিকেছেন এই ব্যাটার। কেশব মহারাজকে সুইপ করে দারুণ একটি চার মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু পরের ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তার বলেই।
দিনের শুরুতে দুই সেট ব্যাটার সাজঘরে
তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট সেই। মাহমুদুল হাসান জয় ও মুশফিকুর রহিমের ওপর ভরসা করে এই টেস্টে কাকতালীয় কিছু করার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কেগিসো রাবাদারে তিন বলে মিরপুর টেস্টের তৃতীয় দিন সকালেই দুই ব্যাটার সাজঘরে ফিরলেন।
অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে খোঁচা মেরে আউট হলেন জয়। আর স্ট্যাম্পের বলে লাইন মিস করে সরাসরি বোল্ড মুশফিক। জয় ৪০ ও রাবাদা ৩৩ রানে ফিরলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৬ রানে ৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এখনও ৯৭ রানে পিছিয়ে স্বাগতিকরা।