তানজিদ হাসান তামিম ইনিংস সাজালেন। তার দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরিতে পাওয়া ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালালেন রিশাদ হোসেন।
মূল কাজ তার লেগ স্পিন। কিন্তু ব্যাট হাতে তিনি কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন, সেটি টি-টোয়েন্টি সিরিজেই দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়ানডেতেও যে রিশাদ সমানভাবে জ্বলে উঠতে পারেন, সেটির দেখা মিলল আজ (১৮ মার্চ)। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে তার ঝড়ো ব্যাটিংয়েই বাংলাদেশ পেয়েছে ৪ উইকেটের জয়। একইসঙ্গে ২-১ ব্যবধানে সিরিজও জিতে নিয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নির্ধারিত ৫০ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কা স্কোরবোর্ডে জমা করেছিল ২৩৫ রান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কনকাশন-সাব হিসেবে নামা তানজিদের হাফসেঞ্চুরিতে লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর শেষটা ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রাঙিয়েছেন রিশাদ। তার ১৮ বলে খেলা অপরাজিত ৪৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
৪০তম ওভারে ভানিন্দু হাসারাঙ্গার এক ওভারে টানা দুই ছক্কা ও তিনটি চার মারলেন রিশাদ। মোট ২৪ রান। বাংলাদেশ ম্যাচে জয় দেখছিল আগে থেকেই। টর্নেডো ইনিংসে রিশাদ সেই আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করলেন।
ওই এক ওভারে ২৪ রান নিয়ে ১৮ বলে ৪৮ করে ফেলেন রিশাদ। ওয়ানডেতে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছিল তাকে। পরের বলে একটি চার মারলেই মোহাম্মদ আশরাফুলকে সরিয়ে নিজের রেকর্ড দখলে নিতেন রিশাদ। কিন্তু সেই সুযোগটা আর পাননি। ৪১তম ওভারে মুশফিকুর রহিম চার মেরে দেয়ায় ম্যাচ জিতে যায় বাংলাদেশ। তাই ২১ বলে ফিফটির রেকর্ডটি আশরাফুলেরই থাকল।
তবে মন জুড়ানো ইনিংস উপহার দিয়েছেন রংপুরের এই তরুণ। ম্যাচসেরার পুরস্কারটিও তাই তার। সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতেও এমন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন রিশাদ।
ম্যাচসেরা হওয়ার পর রিশাদ জানিয়েছেন শুরুতে চাপে থাকলেও তা কেটেছে দ্রুত, “শুরুতে একটু চাপে ছিলাম কিন্তু বল যখন ব্যাটে লাগা শুরু হয়েছে তখন আলহামদুলিল্লাহ আত্মবিশ্বাস নিয়েই শট খেলেছি। মুশফিক ভাই বলছিলেন, ‘তোমার জোনে পেলে তুমি মেরে দাও কোনও সমস্যা নেই।’ সেটা আরও সাহস দিয়েছে।”
মাত্র ২৫ বলে রিশাদ ও মুশফিকের ৫৯ রানের জুটিতে জয় আরও সহজ হয় বাংলাদেশের। তবে ১৩০ রানে ৫ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর একটু শঙ্কা জেগেছিল। তা কেটেছে মুশফিক ও মিরাজের ৬২ বলে ৪৮ রানের জুটিতে। মূলত ষষ্ঠ উইকেটের এ জুটিতেই বাংলাদেশ জয় নিশ্চিত করে।
এর আগে তানজিদ হাসান তামিম দলকে এগিয়ে নেন। এক প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও তামিম ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়ে যান। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে ফিফটিকে রূপ দেন ক্যারিয়ারসেরা ৮৪ রানে। এদিন সৌম্য সরকারের কনকাশন বদলি হিসেবে নেমেছিলেন তামিম।
টস জিতে ফিল্ডিংয়ে যাওয়া বাংলাদেশ তাসকিন আহমেদের ৩, মোস্তাফিজুর ও মেহেদী হাসান মিরাজের ২টি করে উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে আটকে দেয় মাত্র ২৩৫ রানে।