Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫
Beta
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

বাংলাদেশের চাই ১২৫

বাংলাদেশ-৮
[publishpress_authors_box]

আইপিএলে দুর্দান্ত সময় কাটিয়ে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের জার্সিতেও সেই মোস্তাফিজকে পাওয়া গেল। দেশের মাটিতে রিশাদ হোসেনের মাঝে প্রতিভার যে ঝলক দেখা গিয়েছিল, বিশ্বমঞ্চে সেটি আরও আলো ছড়ালো। একইসঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক পারফর্ম করে আসা তাসকিন আহমেদও স্বরূপে ধরা দিলেন। বোলারদের এই মিলিত পারফরম্যান্সে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হলো দুর্দান্ত।

শনিবার (৮ জুন) ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান। টস জিতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত যথার্থ প্রমাণ করেছেন মোস্তাফিজ-রিশাদরা। তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রান করতে পেরেছে লঙ্কানরা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মন্দ ছিল শ্রীলঙ্কার। উদ্বোধনী জুটিতে তারা পায় ২১ রান। একসময় ২ উইকেটে ছিল ৭০ রান। কিন্তু মোস্তাফিজ ও রিশাদের ঝলকে শেষ ৫৪ রান করতে ৭ উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তাই অল্পতেই আটকে রাখতে পেরেছে তাদের।

যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন মোস্তাফিজ। উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। রিশাদের অবদানও কম নয়। হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগানো লেগ স্পিনার ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট। তাসকিন ২ উইকেট নিয়ে ৪ ওভারে খরচ করেছেন ২৫ রান।

শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ সংগ্রাহক পাথুম নিশাঙ্কা। ২৮ বলে তিনি খেলেন ৪৭ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার।

তাসকিন এনে দেন প্রথম উইকেট

বাংলাদেশের উইকেট উৎসবের শুরুটা করেছিলেন এই তাসকিন। শুরুটা যদিও ভালো ছিল না। টানা দুই বলে হজম করলেন চার। এরপরই ফিরলেন স্বরূপে। চারের জবাবটা দিলেন উইকেট উদযাপনে। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন ডানহাতি পেসার।

তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন তাসকিন। প্রথম দুটো বলের একটিও জায়গামতো ফেলতে পারেননি। শর্ট বল দিয়ে প্রথম ডেলিভারিতে হজম করেন বাউন্ডারি। পরের বলেও একই পরিণতি। তবে তৃতীয় বলেই পেয়ে যান উইকেট। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ফেরান কুশল মেন্ডিসকে। শর্ট লেন্থের বল লঙ্কান ব্যাটারের ব্যাটে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে। ৮ বলে ১০ রান করে বিদায় নেন কুশল।

বোলিংয়ে এসেই মোস্তাফিজের উইকেট

বল হাতে নিয়েই জাদু দেখালেন মোস্তাফিজুর রহমান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার। ফিরিয়েছেন কামিন্দু মেন্ডিসকে।

গত মার্চ-এপ্রিলে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে নিজেকে চিনিয়েছিলেন কামিন্দু। কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে এই ব্যাটারকে নিয়ে আলাদা সর্তক অবস্থায় থাকার কথায় বাংলাদেশের। যদিও শুরুতেই তাকে ছেঁটে ফেলেছেন মোস্তাফিজ।

নিজের প্রথম বলেই কামিন্দুকে ফিরিয়ে উইকেট উদযাপন সেরেছেন বাঁহাতি পেসার। কামিন্দু ড্রাইভ ঠিকঠাক না হওয়ায় মিড-অফে সহজ ক্যাচ নেন তানজিম হাসান সাকিব। ফেরার আগে ৫ বলে করেন মাত্র ৪ রান।

‘ভয়ঙ্কর’ নিশাঙ্কার বিদায়ে স্বস্তি

আগ্রাসী ব্যাটিয়ে চাপ তৈরি করেছেন পাথুম নিশাঙ্কা। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে স্বস্তি ফেরালেন মোস্তাফিজুর রহমান।

একপ্রান্তে উইকেট পড়লেও সহজাত ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কার রান বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন নিশাঙ্কা। সাকিব আল হাসানের এক ওভারেই মারেন ৪ বাউন্ডারি। তাসকিন আহমেদ-তানজিম হাসান সাকিবও বাদ যাচ্ছিলেন না। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে হাফসেঞ্চুরি পথে এগিয়ে যাওয়া এই ব্যাটারের লাগাম টেনে ধরেন মোস্তাফিজ।

আগের ওভারেই উইকেট পেয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার। দ্বিতীয় ওভারেও তার উইকেট উদযাপন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নিশাঙ্কাকে আউট করে স্বস্তি ফেরান তিনি। তার স্লোয়ার পড়তে না পেরে কভারে ধরা পড়েন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। তাতে থামে নিশাঙ্কার ৪৭ রানের ইনিংস। ২৮ বলের ইনিংসটি সাজান ৭ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায়।

দুর্দান্ত রিশাদ

একজন লেগ স্পিনার না থাকার আক্ষেপ বাংলাদেশের অনেকদিনের। সেই জায়গায় স্বস্তির বাতাস ছড়িয়েছে রিশাদ হোসেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ঝলক দেখালেন এই লেগ স্পিনার। টানা ২ বলে ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তিনি। পরের ওভারে ফিরে আবারও উইকেট উৎসব করেছেন রিশাদ।

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় প্রথমবার মাঠে নেমেছেন রিশাদ। বিশ্বকাপ ‘অভিষেক’ দারুণভাবে রাঙালেন এই লেগ স্পিনার। চারিথ আসালঙ্কাকে ফিরিয়ে নেন প্রথম উইকেট। স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে এই ব্যাটার ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে ধরা পড়েন সাকিব আল হাসানের হাতে। সাকিব প্রথম দফায় ক্যাচ তালুবন্দি করতে না পারলেও দ্বিতীয় দফায় ভুল হয়নি। আসালঙ্কা ২১ বলে করেন ১৯ রান।

পরের বলে আবারও উইকেট রিশাদের। এবার ফেরান স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ভানিন্দু হাসরাঙ্গাকে। টানা ২ বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও হয়নি তা।

তবে উইকেট উৎসব থামেনি রিশাদের। পরের ওভারে বোলিংয়ে ফিরিয়ে তুলে নেন নিজের তৃতীয় উইকেট। পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে খেলে চলা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে দেখান প্যাভিলিয়নের পথ। এই স্পিনারের বল ক্রিজ থেকে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হলে লিটন দাসের দুর্দান্ত স্টাম্পিংয়ে ফেরেন ধনাঞ্জয়া। লঙ্কান ব্যাটার ২৬ বলে ১ বাউন্ডারিতে করেন ২১ রান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত