নির্ধারিত ৯০ মিনিট গোলশূন্য। সহকারি রেফারি ততক্ষণে টাইমকিপার যন্ত্রে যোগ হওয়া সময়ের ৫ মিনিট দেখিয়ে ফেলেছেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলাররা যেন ভেবেই নিলেন ম্যাচটির নিয়তি ড্র। কিন্তু ভারত তো হালছাড়ার পাত্র না! শেষ বাঁশি বাজার খানিক আগে শট কর্ণার থেকে হেডে সুমিত শর্মা দিলেন গোল। বাংলাদেশের গোলরক্ষক নাহিদ ইসলামসহ সব ফুটবলার হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন মাঠে।
ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে শুক্রবার ভারতের কাছে ১-০ গোলে হেরে অনূর্ধ্ব-১৭ সাফের অভিযান শুরু হলো বাংলাদেশের। কিছুদিন আগে নেপালে অনূর্ধ্ব-২০ সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এবার অনূর্ধ্ব-১৭ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও শিরোপায় চোখ রেখেছে বাংলাদেশ। তবে থিম্পুতে গিয়ে একদিন পরই মাঠের লড়াইয়ে নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তাই অল্প সময়ে উচ্চতা ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে লড়াই করাটা চ্যালেঞ্জ ছিল বাংলাদেশের যুবাদের।
সেই চ্যালেঞ্জ মোটেও উতরাতে পারল না। বাংলাদেশ রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। গ্রুপের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ভারত ও মালদ্বীপ। গতবার ভারতের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে ফাইনালে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল বাংলাদেশের। এবার প্রথম ম্যাচেই হেরে গেল। বাংলাদেশ গ্রুপের পরের ম্যাচটি খেলবে ২২ সেপ্টেম্বর। প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। ওই ম্যাচে হারলে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যাবে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে খেলা হবে না।
সত্যি বলতে ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের গোল দেওয়ার যেন কোনও চেষ্টা ছিল না। সেই তুলনায় ভারতীয় ফুটবলাররা বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছিল।
বাংলাদেশ অবশ্য কর্ণার আদায় করেছে বেশি। কিন্তু সেই কর্ণারগুলো যে গোলে অনুবাদ করা প্রয়োজন সেটা বুঝতে পারেনি কেউ। এমনকি গোল পোস্টে বলার মতো শটও নিতে দেখা যায়নি।
ম্যাচের ৮ মিনিটে ভারতের ভরত লাইরিনজাম অবশ্য বাংলাদেশের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। এরপর ২৭ মিনিটে সেট পিস থেকে গোলের দারুণ সুযোগ পায় বাংলাদেশ। কিন্তু মুরশেদ আলীর শট ভারতের গোলরক্ষক সুরাজ সিং ফিস্ট করেন কর্ণারের বিনিময়ে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারত ৫২ মিনিটে। কিন্তু আবদুল রিয়াদ ফাহিম বক্সে ঢুকেও একা পেয়েও বল মারলেন বাইরে। আর ৭৬ মিনিটে দুর্দান্ত সেভ করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক। বক্সের প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে আগুনে গোলা ভলি নেন মোহাম্মদ কাইফ।
গোলের চেষ্টা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ছিল ভারতেরই। আর সেই চেষ্টার সফল অনুবাদ হলো যোগ হওয়া সময়ে। সুমিত শর্মার গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।