প্রথম ইনিংসে বড় লিডের স্বপ্ন দেখাছিল বাংলাদেশ। তবে শেষ বিকেলের হঠাৎ ধসে লিডটা বড় হয়নি। বাংলাদেশ চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৭ উইকেটে ২৯১ রানে, লিড ৬৪ রানের। মেহেদী হাসান মিরাজ ১৬ ও তাইজুল ইসলাম ৫ রানে অপরাজিত।
একটা সময় বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ২৫৯। সেখান থেকে ২০ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। শান্ত ক্রিজে থিতু হয়েও আউট হন ২৩ রানে। এরপর ৪০ করা মুশফিকুর রহিমের রান আউট ছিল দৃষ্টিকটু। ভিনসেন্ট মাসেকেসার ওভারের শেষ বলে ১ রান নিয়ে পরের ওভারে স্ট্রাইক নিতে চেয়েছিলেন মুশফিক। বলটিকে মিড অনে পাঠিয়ে নিজেই রান নেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু ওয়েসলি মাধেভেরের সরাসরি থ্রোয়ে ডাইভ দিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি।
চা বিরতির আগে ভাঙল জুটি
টেস্টে এক সেশনের বিরতির আগে পরের সময়টা খুবই জটিল। এই সময়ে মনঃসংযোগের ব্যাঘাত ঘটে অনেক ভালো ইনিংস পথ হারিয়েছে। চট্টগ্রামের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে সেই অভিজ্ঞতা হলো বাংলাদেশের।
চার বিরতির আগে ০ রানে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতে ২০৫ রানে ৩ উইকেটে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ থেকে এখনও ২২ রান দূরে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ৯ ও নাজমুল হোসেন শান্ত ২ রানে অপরাজিত থেকে টেস্টের দ্বিতীয় দিন চা বিরতিতে গিয়েছে।
দারুণ জুটির দুই ব্যাটারই একসঙ্গে ফিরেছেন সাজঘরে। সাদমান ইসলাম সেঞ্চুরি করে ১৮১ বলে ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ১২০ রান করে এলবিডব্লিউ হলেন পার্টটাইপ স্পিনার বেনেটের বলে।
এর আগে মুমিমুল হক ফিরেছেন ৬৪ বলে ৩৩ রান করে। চট্টগ্রামে বরাবরই ভালো খেলেন মুমিনুল। অথচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই টেস্টে হাসেনি তার ব্যাট।
সাদমানের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতে দারুণ অবস্থানে বাংলাদেশ
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি করলেন সাদমান ইসলাম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে তিন অঙ্কে পা রাখার আগে তার প্রথম সেঞ্চুরিও ছিল এই প্রতিপক্ষের সঙ্গে। সাদমানের সেঞ্চুরিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে দারুণ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
টেস্টের দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় সেশনের পানি পানের বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১৫০ রান তুলেছে। সাদমান ১৪৫ বলে ১৬ চারে ১০১ রানে ব্যাট করছেন। অপরপ্রান্তে অপরাজিত ২৭ বলে ৯ রান করা মুমিনুল হক।
এর আগে জাতীয় দলে ফেরা ওপেনার এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ১১৮ রানের জুটি গড়েছেন সাদমান। যা দীর্ঘদিন পর টেস্টে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের শতরানের জুটি। টেস্টে বাংলাদেশের সবশেষ শতরানের জুটি এসেছিল ২০২২ সালে। বিজয় ৮০ বলে ৩৯ রান করে আউট হন।
নড়বড়ে শুরুর পর সাবধানী ব্যাটিং
লাল বল, সকালের পিচ এবং পিচের নতুনত্ব; সব মিলিয়ে যে কোন টেস্টেই দিনের শুরুটা পেসারদের। ওই সময় সব দলের সব ব্যাটাররাই সাবধানী থাকেন। তাই ক্রিজে তাদের অবস্থাটাও হয় একটু নড়বড়ে।
চট্টগ্রামে টেস্টের দ্বিতীয় দিন প্রথম ইনিংসে শুরুটা তেমনিই হলো বাংলাদেশের। সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক বিজয়ের শুরু ছিল নড়বড়ে। তিন বছর পর টেস্টে ফেরা এনামুল একটু বেশিই স্নায়ুপরীক্ষায় ভুগছিলেন। অন্যদিনে টানা টেস্ট খেলা সাদমান ছিলেন কিছুটা ধাতস্থ।
দুজনের মিলে দিনের প্রথম ঘণ্টা পার করেছেন অবিচ্ছিন্ন থেকে। তাদের কল্যানে ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩৭। সাদমান অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে ও এনামুল করেছেন ১৪ রান। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের চেয়ে ১৯০ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।
শুরুতে ব্লেসিং মুজারাবানিকে খেলা কঠিন ছিল দুই ব্যাটারের জন্য। নতুন বলে ও ফ্রেস পিচ থেকে এক্সট্রা বাউন্স আদায় করছিলেন উচ্চতায় বেশ লম্বা মুজারাবানি। বিজয়ের সমস্যা হচ্ছিল বেশি। বেশ কয়েকবার বাউন্সে পরাস্ত হয়েছেন, ভাগ্য ভালো ব্যাটের কানায় লাগেনি। একবার ঠিকঠাক ব্যাটে লাগলেও বল স্লিপে দাঁড়ানো ফিল্ডারের হাতে পৌঁছেনি।
সাদমানের বিপক্ষে আউটের আবেদন করেছিলেন মুজারাবানি। পঞ্চম স্ট্যাম্পের লাইনে থাকা বলটি দারুণ বাউন্স করে সাদমানের ব্যাটের খুব কাছে দিয়ে বেরিয়ে যায়। উইকেটরক্ষকের হাতে পৌঁছতে আউটের আবেদন করেন জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটাররা। অবশ্য সফল হননি।
এক ঘণ্টা পার হতে অবশ্য চিত্র বদলাতে থাকে। উইকেটের ময়েশ্চার কেটে যাওয়ায় ব্যাটিং সহজ হয়ে ওঠে। তবুও সাদমান ও এনামুল সাবধানেই এগোচ্ছেন।
