Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫

নিজেদের ফিরে পাওয়ার সিরিজ শান্তদের

bangladesh1
[publishpress_authors_box]

চোরাবালিতে ডুবন্ত কারও জন্য শুকনো গাছের ডালও সোনার কাঠির সমান। নিকষ আঁধারে ছেয়ে থাকা গহ্বরে মোমবাতির আলো হাজার পাওয়ারের লাইট। বাংলাদেশ ক্রিকেটে সেই সোনার কাটি বা হাজার পাওয়ারের লাইট হয়ে আসে ওয়ানডে ক্রিকেট। কারণ এই ফরম্যাটে সবচেয়ে উজ্জ্বল লাল-সবুজরা।

ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই সিরিজে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। ব্যাটারদের বিনা লড়াইয়ে ময়দান ছেড়ে দেওয়ার ঘটনার প্রশ্ন ডালা মেলেছে চারিদিকে। কি হল ক্রিকেটারদের? উত্তরে ক্রিকেটীয় ভুলের চেয়ে বরং এর বাইরের পরিবেশ সামনে চলে আসে।

সাকিবের অবসর, দেশের মাটিতে খেলতে না পারা, অধিনায়ক শান্তর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা। ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবার হারানোর স্বপ্ন তাই ভেস্তে যায়। সাফল্যের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয় ব্যর্থতার বাস্তবতায়।

সব কিছুই আবার ভুলে যাওয়ার সুযোগ এসেছে। কারণ সামনে ওয়ানডে। যে ফরম্যাটে এখন নিজেদের সেরাদের কাতারে রাখতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। আফগানদের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজে একমাত্র জয়-ই পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটের আকাশে এখনকার কালো মেঘ দূর করতে।

এই আশার বিপরীতে পর্বতসমান বাধা আফগানিস্তান। এই দলটির বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে সিরিজে জয়ের আত্মবিশ্বাস আছে। মোট ১৬ ম্যাচে আছে ১০ জয়ের সুখস্মৃতি। এ বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজেও জয় বাংলাদেশের। তবুও এখনকার ক্রিকেটের বাইরের দুশ্চিন্তায় এ সিরিজে ওয়ানডে অগ্রযাত্রায় ছেদ পড়ার ভয় মন বিচলিত করছে।

এর কারণ ওয়ানডেতে এখন আফগানরাও ভালো করছে। যে মাঠে খেলা সেই শারজাতে সবশেষ সিরিজটিতে তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে ছেলে খেলা করেছে। রশীদ খান-ফারুকীদের বোলিং জাদুতে প্রোটিয়ারা পড়েছিল ব্যাটিং ব্যর্থতার ঘূর্নিপাকে।

ঠিক সেই ভয় জেঁকে ধরছে বাংলাদেশকে। আফগানদের বোলিং শক্তি নিয়ে অবহেলা করার মতো দল নেই। তাদের ব্যাটিংটাই যা একটু চিন্তার কারণ। সেই ব্যাটিং সামাল দিতে ইমার্জিং এশিয়া কাপে ভালো করা সেদিকুল্লাহ আতালকে দলে নেওয়া হয়েছে। ওমানে হওয়া গত মাসের টুর্নামেন্টটিতে যার ৫ ইনিংস যথাক্রমে ৮৩, ৯৫*, ৫২, ৮৩ ও ৫৫*। বাংলাদেশের বিপক্ষে ছিল অপরাজিত ৯৫ রানের ইনিংস।

প্রথমবার ইমার্জিং এশিয়া কাপ জয়ী দল থেকে আরও দুজন আছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২৩ বছর বয়সী সেদিকুল্লাহর সঙ্গে ওই দল থেকে যোগ হয়েছেন পেসার বিলাল সামি ও মুজিব উর রহমানের যোগ্য রিপ্লেসমেন্ট আল্লাহ মোহাম্মদ গাজানফার। ১৮ বছর বয়সী এ স্পিনারকে ভবিষ্যৎ মুজিব বলা হচ্ছে।

আফগানদের বোলিং বৈচিত্র্য আর আর ব্যাটিংয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান জুটি বাংলাদেশের চিন্তা বাড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে মিডলঅর্ডারে আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবির নির্ভরযোগ্যতা এ সিরিজে এগিয়ে রাখছে স্বাগতিকদেরই।

বিপরীতে বাংলাদেশের সবদিকেই চিন্তা। বোলিংয়ে সাকিব আল হাসানের নির্ভরযোগ্যতা নেই। একজন বাঁহাতি রাখার সুযোগও নেই নাসুম আহমেদ এখনও ভিসা না পাওয়ায়। মেহেদি হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেনকে দিয়ে স্পিন সামলাতে হবে।

আফগানরা যেহেতু পেসে দুর্বল তাই শরিফুল-মোস্তফিজ-তাসকিনকে নিয়ে একাদশ সাজাতে হবে বাংলাদেশকে। তবে চিন্তা বরাবরের মতো ব্যাটিং। অভিজ্ঞ লিটন দাশও এবার নেই টপঅর্ডারে। সৌম্য-শান্তকে নিজেদের অভিজ্ঞতা দেখাতে হবে। যেখানে তারা খুবই অ-ধারাবাহিক।

সেই সঙ্গে তানজিদ-তাহিদ হৃদয়রাও ধারাবাহিকতার দালান তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর সববারের মতো তাই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর দিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে।

আফগানরা দলে তারণ্যের আধিক্য রেখেছেন। যারা দলটির হয়ে নিয়মিত পারফরম করছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে এ সিরিজে তাদের দ্যুতিতে জয় এলে তরুণদের সাফল্য ধারার প্রমাণ মিলবে। বিপরীতে বাংলাদেশ আফগানদের সঙ্গে সেই শুরুর সময় থেকে এখনও অভিজ্ঞতায় তাকিয়ে। যেখানে পারফরম্যান্সে আছে পিছিয়ে।

তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলে আফগানিস্তান। এবারের সিরিজ জয় সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিবে।   

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত