দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ১০১ রান করতে স্বাগতিকদের তিন উইকেট নেই। এই অবস্থায় কেউ যদি বলে বাংলাদেশ চারশো করবে, ক্রিকেটপ্রেমীরা কিভাবে নেবেন। বিশাল স্বপ্ন দেখানো কথাটা বলেছেন হাসান মাহমুদ।
ইনিংস হার এড়াতে হলে আরও ১০১ রান করতে হবে নাজমুল হোসেন শান্তদের। এরপর জিততে চাইলে প্রোটিয়াদের বড় টার্গেট দিতে হবে। অথচ মিরপুরের উইকেটে তৃতীয় ইনিংসে চারশো রান!
বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানে অলআউট হওয়ার পর। কিন্তু হাসান মাহমুদ বিশ্বাস রাখছেন এই টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে চারশো রান করা সম্ভব।
মিরপুরে শেষ ইনিংসে চারশো রান হয়েছে মাত্র একবার। ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৫২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করে ৪১৩ করে হেরেছিল স্বাগতিকরা। এছাড়া তৃতীয় ইনিংসে তিনশো ছাড়ানো স্কোর আছে চারটি। বাংলাদেশের দুটি। একটি আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত বছর ৪২৫ রান এবং ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে ৩১২।
মিরপুরে তৃতীয় ইনিংসে ২৫০ থেকে ৩০০ রানের মধ্যে বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ আছে পাঁচটি। কিন্তু সববারই ম্যাচ হারতে হয়েছে। শুধু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪২৫ করে জয় এসেছিল। হাসান মাহমুদ হয়তো ওই ম্যাচ থেকে প্রেরণা নিয়েই বিশ্বস রাখছেন প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে তারা চারশো রান করবেন।
এর উপায়টাও দেখিয়ে দিলেন এই পেসার, “আমরা যদি তিন সেশন ব্যাটিং করতে পারি। বা আড়াই সেশন ব্যাটিং করি তাহলে চারশোর কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব। এখন আজকে জয় ও মুশফিক যথেষ্ট ভালো সময় কাটিয়েছে উইকেটে। যেটা আমাদের জন্য একটু আশা জাগানিয়া। আমরা এখন কালকেও এই জুটিটা দেখতে চাই। ওরা যতটা সম্ভব এগোতে পারলে পরের ব্যাটারদেরও ওই রকম প্রেসস থাকবে। এটাই আমাদের এখন লক্ষ্য।“
এই প্রেসস অনুসরণ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুইশোর বেশি রানের টার্গেট দিতে চান হাসান। ওই রকম লক্ষ্য দেওয়া গেলে মিরপুরে চতুর্থ দিনে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠানো যাবে। তখন বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনাও থাকবে!
সেই সম্ভাবনার বিষয়টি অবশ্য দুঃস্বপ্নের মতো। প্রোটিয়ারা তাদের ইনিংসে বাংলাদেশ বোলারদের যেমন ভোগালেন তাতে শেষ ইনিংসে দুইশো রানও নিরাপদ মনে হবে না। দ্রুত বিপক্ষের সেরা ব্যাটারদের ফিরিয়েও দিন শেষে হতাশা ভালো লাগে না হাসানদেরও।
এই টেস্টে কাইল ভেরেইনা ও উইয়ান মুল্ডার একশ ছাড়ানো জুটি গড়েন। পরে ড্যান পিটকে নিয়ে আরও রান যোগ করেন ভেরেইনা। তাতে ম্যাচ জয়ের অবস্থা তৈরি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের চেন্নাই টেস্টেও রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাটিং জুটিতে ম্যাচ হারতে হয় বাংলাদেশকে।
হাসানের কাছে এইরকম পরিস্থিতিগুলো বিরক্তিকর। জানিয়েছেন, “টেস্ট ক্রিকেটে এরকম পরিস্থিতি আসে যে একটা জুটি হয়ে যায় এক সময়। এটা (আমাদের বিপক্ষে) অহরহ হতে থাকে, আমরাও দেখি। দেখতে দেখতে আমাদেরও বিরক্তি চলে আসে। ওই সময়ে আমরা চেষ্টা করি বেসিকটা ধরে রেখে বল করতে। মানে ওই সময় আপনার হাতে তো ওই একটাই কাজ আছে বা করার মতো কিছু আছে যে জুটি গড়ে বল কর, রান কম দেওয়া, জায়গা মতো বল করা।”
হাসানদের হতাশা অবশ্য ব্যাটারদের জন্যই এসেছে। বোর্ডে রান থাকলে বিপক্ষের একটি বড় জুটি খুব বেশি দুশ্চিন্তার না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাটাররা সেই রানটাই তুলতে পারেন না। এই অবস্থার পরিবর্তন জয়-মুশফিক-লিটনরা করবেন মিরপুর টেস্টেই। তাতে হাসানরা শেষ ইনিংসে বল করতে আর হতাশ হবেন না। কারণ তখন দক্ষিন আফ্রিকার লক্ষ্য থাকবে দুইশো প্লাস!