আফঈদা খন্দকারের চোখে মুখে রোমাঞ্চের ছোঁয়া। ফুটবলে মাত্র ৩ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। এরই মধ্যে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী উঠে গেছে আফঈদার হাতে। হোক না বয়সভিত্তিক, তাতে কি!
সংবাদ সম্মেলনের মধ্যমণি হওয়ার অভিজ্ঞতাও প্রথমবারের মতো এই ডিফেন্ডারের। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। টুর্নামেন্টে অংশ নেবে ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ। এই টুর্নামেন্টেই অধিনায়ক করা হয়েছে আফঈদাকে।
২০২১ সালে প্রথমবার আয়োজন করা হয় সাফের এই বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট। ঢাকায় হওয়া প্রথম টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবারও শিরোপাটা নিজেদের কাছেই রেখে দিতে চান আফঈদা, স্বপ্না রানীরা।
সোমবার বাফুফে ভবনে টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও প্রত্যাশার কথা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ দলের ১৪ জন আছে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলের। যাদের রয়েছে গত বছর এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে খেলার অভিজ্ঞতা। দলে রয়েছেন বিকেএসপির ৩ ফুটবলার-ফরোয়ার্ড নবিরন খাতুন, মিডফিল্ডার লুৎফরা আক্তার লিমা ও বন্যা খাতুন। সঙ্গে জাতীয় দলের অভিজ্ঞ ৫ ফুটবলার- আফঈদা, মিডফিল্ডার স্বপ্না রানী, ডিফেন্ডার ইতি খাতুন, সুরমা জান্নাত ও গোলরক্ষক স্বর্ণা রানী মন্ডল। এছাড়া গোলরক্ষক মেরি আইরিশ প্রুভেন্স ত্রিপুরা নর্ভ উঠে এসেছেন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির মেয়েদের ফুটবল ক্যাম্প থেকে।
খেলা হবে রাউন্ড রবিন লিগ ভিত্তিতে। পয়েন্ট টেবিলের সেরা দুই দল খেলবে ফাইনাল। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি হবে ফাইনাল।
বাংলাদেশের খেলার সূচি
তারিখ | ম্যাচ | সময় |
২ ফেব্রুয়ারি | বাংলাদেশ-নেপাল | সন্ধ্যা ৭টা |
৪ ফেব্রুয়ারি | বাংলাদেশ-ভারত | সন্ধ্যা ৭টা |
৬ ফেব্রুয়ারি | বাংলাদেশ-ভুটান | সন্ধ্যা ৭টা |
৮ ফেব্রুয়ারি | ফাইনাল | সন্ধ্যা ৬টা |
ঘরের মাঠে খেলা। এর ওপর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। স্বাভাবিকভাবেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা নিয়ে মাঠে নামবেন মেয়েরা। জাতীয় দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু অবশ্য প্রতিটি ম্যাচ ধরে ধরে এগুতে চান, “আমাদের প্রথম ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ জিততে চাই। তবে অবশ্যই ফাইনাল খেলা আসল লক্ষ্য। ”
২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলে খেলেছিলেন মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার সিনিয়র, আঁখি খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমাদের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার। কিন্তু এবার বেশিরভাগই নতুন মুখ। কোচ অবশ্য সেসব নিয়ে ভাবছেন না। বরং মেয়েদের খেলাটা উপভোগ করতে বললেন, “আমরা চাইনা যে প্রত্যাশার চাপটা ওদের ওপর থাকুক। সঠিক পরিবেশ দিলে এমনিতেই ওরা ভালো খেলবে। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন হতে একটু ভাগ্যেরও সহায়তা লাগে।”
চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাবছেনই না তিনি, “যেহেতু দেশের মাটিতে হচ্ছে খেলা। প্রতিটি ম্যাচে জয় পেতে মরিয়া হবো। তবে ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুনো বুদ্ধিমানের কাজ হবে।”
গত আসরে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ ৪ ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে দিয়েছিল ১৯ গোল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তো পেয়েছিল ১২-০ গোলের বড় জয়। এবার পরীক্ষিত ফুটবলার নেই। তবুও দল নিয়ে আশাবাদী অধিনায়ক আফঈদা। ডিফেন্ডার হলেও মাঝ মাঠ থেকে দূরপাল্লার শটে গোল দেওয়ার উদহারণ রয়েছে আফঈদার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, “আমরা এই টুর্নামেন্টের জন্য অনেক দিন ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের দলের স্ট্রাইকাররা যথেষ্ট ভালো। মিডফিল্ডে স্বপ্না আছে। সেও ভালো ফুটবলার। আমরা অনেক দিন ধরে খেলছি এক সঙ্গে। আশা করি এবার আমরা ভালো ফুটবল উপহার দেব।”
টুর্নামেন্টের খেলাগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মহিলা কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, বাংলাদেশ দলের পৃষ্ঠপোষক ঢাকা ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখলাকুর রহমান।