৩ মাস পর আবারও জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামছেন জামাল ভূঁইয়ারা। থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় প্রথম ফিফা প্রীতি ম্যাচে ভুটানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। রোববার দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ গড়াবে একই স্টেডিয়ামে।
ভুটানের বিপক্ষে বরাবরই দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে জয় ১১টি, ড্র দুটি, হার মাত্র একটি। এই একটি হার চাংলিমিথাংয়ের টার্ফে। কিন্তু সেই ভুটান ট্র্যাজেডি ভুলে গিয়ে বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা জয়ে চোখ রেখেছেন।
ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বুধবার কাবরেরা বলেন, “আমরা জানি, আমাদের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। ভুটানের ফুটবলারদের মতো আমরা মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে নেই, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও আমাদের সময় লেগেছে, কিন্তু আগামী মার্চে যেটা আসছে, পরের বছরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে, এগুলোর জন্য এই উইন্ডো আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। খুবই চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।”
কাবরেরার এই দলে যোগ দিয়েছেন অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের চার ফুটবলার- রাব্বি হোসেন রাহুল, মিরাজুল ইসলাম, চন্দন রায় ও শাকিল আহাদ তপু। এদের মধ্যে একেবারে নতুন মিরাজুল ও তপু।
ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচগুলো এই ফুটবলারদের নিজেদের মেলে ধরার মঞ্চ বলেও মনে করেন এই স্প্যানিশ কোচ, “আপনারা জানেন, কয়েক সপ্তাহ আগে অনূর্ধ্ব-২০ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ওই স্কোয়াডের সদস্যরা এই দলে যোগ দিয়েছে। যাদের মধ্যে দুজন (রাহুল রাব্বি ও চন্দন) আগেও আমাদের সাথে ছিল, তারা জাতীয় দলের আবহটা জানে। নতুন দুজন যোগ হয়েছে। ফিফা উইন্ডোতে এ ধরনের প্রীতি ম্যাচ তাদের জন্য ইতিবাচক। আমি মনে করি, তাদের জন্য এটাই মেলে ধরার উপলক্ষ্য।”
ভুটানের র্যাঙ্কিং বাংলাদেশের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে। যেখানে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং ১৮৪, ভুটানের ১৮২। তারপরও যেহেতু অতীতের পরিসংখ্যানে এগিয়ে বাংলাদেশ, তাই স্বাভাবিকভাবেই জয়ে চোখ কোচের, “নিশ্চিতভাবেই এখানে আমরা দুটো ম্যাচ জয়ের জন্য এসেছি। তবে আমাদের আগামী বছরের প্রতিযোগিতাগুলোর জন্য সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরের উইন্ডো গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, অফিসিয়াল টুর্নামেন্টগুলোই মূল, যেগুলো আগামী মার্চে শুরু হবে এবং এ কারণে ভুটানের বিপক্ষে এই ম্যাচগুলোসহ বাকি দুই উইন্ডোকে প্রাধান্য দিচ্ছি। যাতে করে আমরা ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি।”
ভুটানকে অবশ্য মোটেও হালকাভাবে দেখছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, “আমার ধারণা, দুটি ম্যাচই ভীষণ কঠিন হবে। কেননা, আমরা ৩ মাস কোনও ম্যাচ খেলিনা। আমরা ক্যাম্প করেছি, কিন্তু ভুটানের ফুটবলারদের মতো একই পর্যায়ে নেই। আমার মনে হচ্ছে দুটি কঠিন এবং দারুণ ম্যাচ হবে।”
বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা দীর্ঘদিন খেলার মধ্যে নেই। প্রিমিয়ার লিগও শেষ। নতুন মৌসুমের দলবদলও শেষ। কিন্তু তারপরও ভুটানের বিপক্ষে সবাই খেলার জন্য মুখিয়ে আছেন বলে মনে করেন জামাল, “আমি মনে করি, ভুটানের বিপক্ষে খেলতে সবাই প্রস্তুত। অবশ্যই আমাদের আরও বেশি ম্যাচ ফিটনেস প্রয়োজন, কিন্তু আমরা ভালো ক্যাম্প করেছি, ভালো প্র্যাকটিস সেশন করেছি, আমি মনে করি, সব মিলিয়ে ভুটানের মুখোমুখি হতে আমরা প্রস্তুত।”
ভুটান দলের অন্যতম বড় তারকা চেনচো গেইলস্টেন। ভুটানিরা যাকে আদর করে ‘ভুটানিজ রোনালদো’ নামে ডাকেন। জামালদের বাড়তি নজর চেনচোর দিকেও থাকবে, “ভুটান প্রতি আক্রমণে ভালো, তাছাড়া তাদের দলে চেনচো আছো, যাকে আটকানো কঠিন, যে বাংলাদেশেও খেলেছে। তবে তাদের দলে চেনচো ছাড়াও আরও কয়েকজন খেলোয়াড় আছে, যারা দারুণ। এই ফুটবলারদের দিকেও নজর রাখতে হবে। কেননা, তারাও বিপজ্জনক। তবে আশা করি, আমরা তাদের সামলাতে পারব।”
