দুই দলের র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্য ১০০। দুই ধাপ এগুনোর পর চাইনিজ তাইপের সর্বশেষ র্যাঙ্কিং ৪০। আর বাংলাদেশ নারী দলের র্যাঙ্কিং ১০০।
এই দুই দলের লড়াইয়ে হারটা অনুমিতই ছিল। শুধু দেখার ছিল কত গোলের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত চাইনিজ তাইপের কাছে ফিফা ফ্রেন্ডলির প্রথম ম্যাচে সাবিনা খাতুনেরা হেরেছেন ৪-০ গোলের ব্যবধানে।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় জাতীয় পুরুষ ফুটবল দলের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে আগেই। শুক্রবার নারী ফুটবল দলেরও ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলো এই ভেন্যুতে। কিন্তু কিংস অ্যারিনায় ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা।
এই বাংলাদেশ দলটায় সেরা ফুটবলারদের অনেকেই নেই। সিরাত জাহান স্বপ্না, আঁখি খাতুনেরা ফুটবল ছেড়েছেন অনেক আগে। এরপর গত বছর ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলিতেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
কিন্তু এবার প্রতিপক্ষ আরও শক্তিশালী। উল্টো চোটের কারণে বাংলাদেশ দলে নেই কৃষ্ণা রানী সরকার, মারিয়া মান্দা। সাইফুল বারীর পর কোচ হিসেবে পরীক্ষামূলক ভাবে ডাগ আউটে বাফুফের একাডেমির কোচ পিটার বাটলার একাদশে রাখেননি সানজিদাকেও।
মাত্র তিন ডিফেন্ডার- মাসুরা পারভীন, আফঈদা খন্দকার ও শিউলি আজিম চেষ্টা করেছেন গতিময় ও টেকনিক্যালি সাউন্ড এই চাইনিজ তাইপেকে আটকানোর। কিন্তু শুরুতেই ব্যর্থ।
মাঝমাঠে মারিয়া মান্দার সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়া ছিল মনিকা চাকমার। সেখানে অভিষেক হলো একেবারে তরুণ ফুটবলার মুনকি আক্তারের। কিন্তু অনভিজ্ঞ মুনকি যে কিছু করতেই পারেননি।
এতদিন বাংলাদেশের মেয়েরা আক্রমণ করাতেই অভ্যস্ত ছিল। কিন্তু এই ম্যাচে আক্রমণে ওঠার বদলে রক্ষণ সামলাতেই ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। প্রতিপক্ষের পোস্টে খুব কম সময়ই বল রাখতে পেরেছেন মেয়েরা।
ম্যাচের ১১ মিনিটে সু ইউ হুসান গোল করে এগিয়ে নেন চাইনিজ তাইপেকে। রক্ষণভাগে আফঈদা খন্দকারের ভুলে বল পেয়ে পোস্টে শট নেন এই ফরোয়ার্ড (১-০)।
এরপর ১৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে অতিথিরা। সু ই উনের কর্ণার থেকে সু সিন উনের হেডে ২-০ হয়েছে। ৩-০ তে এগিয়ে থেকে বিরতিতে গেছে চাইনিজ তাইপে। তবে ২৬ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ওই গোলটি করেন সু ই উন। যদিও ফ্রি কিক দেখে মনে হয়েছে বলটি সু উ হুসানের পায়ে লেগে দিক বদলে জালে ঢুকেছে!
দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক পরিবর্তন করেছেন বাংলাদেশের কোচ বাটলার। অধিনায়ক সাবিনার আর্ম ব্যান্ড খুলে দেন শিউলি হাতে। সানজিদা আক্তার তার বদলে মাঠে নামেন। মাসুরাকে তুলে শামসুন্নাহার সিনিয়রকে নামানো হয়।
এরপরও ৫৬ মিনিটে হয়েছে চতুর্থ গোল। ম্যাচে এর অনেক আগেই ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। বক্সে ঢুকে আক্রমণের ঝড় তোলে ততক্ষণে চাইনিজ তাইপের ফরোয়ার্ড লি ইউ উয়েনের শট আফঈদার গায়ে লেগে ফেরে। ফিরতি শটে সু ইউ হুসান করেন ৪-০।
কোচ বাটলার মাঠে ফুটবলার পরিবর্তন করেছেন আরও। শাহেদা আক্তার রিপাকে তুলে নিয়ে নামান সুরভী আকন্দ প্রীতিকে। এরপর শামসুন্নাহার জুনিয়র ও স্বপ্না রানী মাঠে ঢোকেন তহুরা খাতুন ও মাতসুমসিমা সুমাইয়ার বদলে।
ম্যাচের ৬২ মিনিটে অবশ্য বা প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠেন মনিকা চাকমা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, দুরুহ কোণ থেকে নেওয়া শটটি লাগে ক্রসবারে!
বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর কোনও দল গোল করতে পারেনি।
চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ৩ জুন। বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনাতেই হবে ম্যাচটি।