দাবা খেলতে ভারত গিয়েছিলেন আছিয়া সুলতানা। সঙ্গে ছিলেন আরেক কিংবদন্তি রানী হামিদ। কিন্তু দিল্লিতে চলমান দিল্লি আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্টে না খেলেই চলে আসতে হয়েছে আছিয়াকে। কালো তালিকাভুক্ত হওয়ায় আছিয়াকে দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রিশেন কর্তৃপক্ষ তাকে ভারতে ঢুকতে দেননি।
মূলত দাবাড়ু হলেও আছিয়া রাণী হামিদের সহকারী। ৮২ বছর বয়সী রানী হামিদ দাবা খেলতে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়ান। বেশিরভাগ সময় তার সফরসঙ্গী থাকেন আছিয়া। এবারও দিল্লির এই গ্র্যান্ডমাস্টার দাবা টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার কথা দুজনের। কিন্তু আছিয়াকে ভারতে ঢুকতে না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রানী হামিদ।
আর এই সংবাদটি বেশ গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করেছে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদের আগের দিন আছিয়া ও রাণী হামিদ দিল্লিতে রওনা হন। আছিয়া রাতে বিমানবন্দরেই ছিলেন। ঈদের দিন অর্থাৎ ৭ জুন সকালে তিনি দেশে ফেরত আসেন। তারা দুজনই যদিও সার্ক ভিসা নিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। ভারতের ইমিগ্রেশনে কর্তৃপক্ষের দাবি, “বিগত সময়ে আছিয়া ভারতে মেডিকেল ভিসায় এসে দাবা টুর্নামেন্ট খেলেছে। এজন্য তাকে কালো তালিকা করা হয়েছে। যে কারণে তিনি খেলতে পারবেন না।”
মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতের কাশ্মিরে একটি টুর্নামেন্টে এর আগে একবার খেলেছিলেন আছিয়া। কাশ্মিরের টুর্নামেন্ট খেলে তার ডাক্তার দেখানোর পরিকল্পনা ছিল। ডাক্তার না থাকায় তিনি শুধু দাবা খেলে চলে আসেন। সমস্যাটা হয়েছে এখানেই।
আছিয়া বাংলাদেশের দাবায় তেমন পরিচিত নাম না। বলা চলে অনেকটা সৌখিন দাবাড়ু। এবার আছিয়া সঙ্গী ছিলেন রানী হামিদের। দিল্লির এই টুর্নামেন্ট শেষ করে রানী হামিদের মুম্বাইয়ে আরেকটি টুর্নামেন্ট খেলার কথা। আছিয়া দেশে চলে আসায় তারও মুম্বাইয়ে খেলা সম্ভব হবে না। রাণী হামিদও দ্রুতই চলে আসবেন বাংলাদেশে।
পুরো ঘটনায় হতাশ রানী হামিদ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “আছিয়া তো কোনও অপরাধ করেনি। আমি তাদের অনুরোধ করেছি। তোমরা যদি মনে করো সে নিয়ম লঙ্ঘন করেছে তাহলে ১০০ ডলার বা ২০০ ডলার যাই হোক না কেন জরিমানা করো। কিন্তু তাকে খেলার সুযোগ দাও। সাত দিন থাকার সুযোগ দাও। সে কোনও অপরাধ করেনি। সে তো খুন বা চুরি ডাকাতিও করেনি। তার একটাই অপরাধ সে দাবা খেলেছে।”
দিল্লি দাবা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভারত সিং চৌহান এ বিষয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, “ভিসা ইস্যু বিদেশি দাবাড়ুদের জন্য সাধারণ একটা ব্যাপার। এই ঘটনায় ইমিগ্রেশন তাকে কালো তালিকা করেছে। সম্ভবত সে এর আগে মেডিকেল ভিসায় ভারতে এসে দাবা খেলেছে। এবং সে ঘটনা জেনে অন্য কেউ তার নামে ইমিগ্রেশনে অভিযোগ করেছে। যে কারণে তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এমন বড় মাপের টুর্নামেন্টে এসব চ্যালেঞ্জ হরহামেশায় সামলাতে হয় আমাদের।”