প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী নারীর নাম ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তাদের ২০২৪ সালের তালিকায় নাম আছে এক বাংলাদেশিরও।
তিনি রিক্তা আক্তার বানু। পেশায় নার্স।
রিক্তাকে এ বছরের অনুপ্রেরণা জাগানো নারীদের তালিকায় রাখার কারণ হিসেবে বিবিসি বলেছে, “বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করেন তিনি। সেখানে প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিশাপ হিসেবে দেখা হয়।
“নিজের প্রতিবন্ধী এবং সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত মেয়েকে স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে পারেননি বলে নিজের জমি বিক্রি করে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন রিক্তা। নাম দিয়েছেন রিক্তা আক্তার বানু লার্নিং ডিজেবিলিটি স্কুল।”
রিক্তার স্কুলটি প্রতিবন্ধীদের প্রতি সমাজের মনোভাব পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করে বিবিসি। রিক্তা আক্তার বানু লার্নিং ডিজেবিলিটি স্কুলে বর্তমানে ৩০০ শিক্ষার্থী ভর্তি আছে বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, রিক্তার স্কুলটি শুরুতে শেখার প্রতিবন্ধকতা থাকা শিশুদের জন্য নির্মিত হলেও এখন সেখানে বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিমত্তা ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকা শিশুদেরও সেবা দেওয়া হয়।
রিক্তার পাশাপাশি বিবিসির এবারের প্রভাবশালী ও অনুপ্রেরণাদায়ী নারীদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ইরাকের অধিকারকর্মী নাদিয়া মুরাদ, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস, ধর্ষণের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ফরাসি ক্যাম্পেইনার জিজেল পেলিকো, যুক্তরাষ্ট্রের অভিনেত্রী শ্যারন স্টোন, অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণকারী ব্রাজিলিয়ান রেবেকা আন্দ্রাদে, ইংল্যান্ডের গায়িকা রে, যুক্তরাজ্যের ভিজ্যুয়াল আর্টিস্ট ট্রেসি এমেন, নাইজেরিয়ার জলবায়ুকর্মী আদেনিকে ওলাদোসু ও মেক্সিকোর লেখিকা ক্রিস্টিনা রিভেরা গার্জা।
সমাজে প্রভাব ফেলা এই নারীদের কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে বিবিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, “গাজা, লেবানন, ইউক্রেন ও সুদানের প্রাণঘাতী সংঘাত এবং মানবিক সংকট থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক নির্বাচন পরবর্তী সামাজিক বিভাজনের সাক্ষী হওয়ার বাস্তবতায় নিত্যনতুন উপায়ে নারীদের দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হয়েছে।
“উপরোক্ত পরিস্থিতিতে এই ১০০ জন নারীর ওপর সৃষ্ট প্রভাবকে এ বছর স্বীকৃতি দিচ্ছে বিবিসি। তারা বদলে যাওয়া বিশ্বে দৃঢ়তার সঙ্গে পরিবর্তনের পক্ষে কাজ করছেন।
“এছাড়া এ তালিকা জলবায়ু সংকটের প্রভাব পর্যবেক্ষণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। তাই জলবায়ু বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়া নারীদেরও বিবিসি এবার নির্বাচিত করেছে, যারা সমাজকে এর প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করছেন।”