Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

২৬ দেশের কারাগারে বন্দি ৯ হাজারের বেশি বাংলাদেশি  

সংসদ
ফাইল ছবি
[publishpress_authors_box]

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কারাগারে নয় হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি আটক রয়েছেন। যার মধ্যে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি বন্দী রয়েছেন সৌদি আরবের কারাগারে।

সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বিদেশের কারাগারগুলোয় বন্দী বাংলাদেশিদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানান।

তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ মুহূর্তে মোট ২৬ দেশের কারাগারে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন ৯ হাজার ৩৭০ প্রবাসী বাংলাদেশি। যার মধ্যে সৌদি আরবের কারাগারে রয়েছেন সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭৪৬ জন। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে তুরস্ক। সেদেশের কারাগারে আটক বাংলাদেশির সংখ্যা ৫০৮ জন।

মন্ত্রী বলেন, “২০২৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ হাজার ২২৬ জনকে লিবিয়া থেকে, ৫১ জনকে ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের জেলখানা থেকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে। এছাড়াও ভারত, মিয়ানমার এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের জেলখানা থেকে আরও প্রায় ১ হাজার ৯৫০ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়েছে।”

ভোলা-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ৮১টি দূতাবাসের মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখছে। প্রাথমিকভাবে দূতাবাসগুলো ভাড়া করা ভবনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে থাকলেও, পরবর্তীতে ২০১৬-২৪ সালব্যাপী তিনটি পর্যায়ে ৩২টি মিশনের জন্য জমি থাকা সাপেক্ষে নিজস্ব ভবন নির্মাণ, অথবা জমিসহ তৈরি ভবন কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন।”

তিনি জানান, বর্তমানে ১৪টি দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের ১৭টি নিজস্ব ভবন রয়েছে। এছাড়া সাতটি দেশে মালিকাধীন জমি রয়েছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে চলেছে বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান মন্ত্রী।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যার ফলশ্রুতিতে প্রতিনিয়ত কক্সবাজার এবং ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সফর করছেন। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ চলমান রাখতে এ ধরনের সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”

বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও সেসব দেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে যোগাযোগ রেখে চলেছে বলেও জানান মন্ত্রী।

আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আট লাখেরও বেশি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যে বসবাস করে দেশটির রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। ব্রেক্সিট-পরবর্তী যুক্তরাজ্য শ্রমবাজারের প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ শ্রমশক্তি প্রেরণের সুযোগ বিদ্যমান বলে মনে করে সরকার। তবে তা অবশ্যই বৈধ ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হতে হবে।

“এই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অভিবাসন ও কর্মসংস্থান সহযোগিতা বাড়াতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।”

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বর্তমান বাংলাদেশে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতে দেশের অর্জিত সাফল্য বিশ্ববাসীকে জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তৎপর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ ও এক্সে (টুইটারের বর্তমান নাম) সক্রিয় ও নিয়মিত উপস্থিতির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার কার্যক্রম চলমান।”

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অসত্য ও অপপ্রচারমূলক সংবাদ বা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে জনকূটনীতি অনুবিভাগ এসব প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল প্রতিবাদলিপি পাঠায় বলেও জানান তিনি।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রচলিত আইন অনুযায়ীও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা এখনো চলমান। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে।”

তবে এ বিষয়ে কার্যক্রম এখনো চলমান থাকায় বিস্তারিত তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত