Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

বাংলাদেশের শততম জাহাজ হলো ‘জাহান ওয়ান’

এমভি জাহান ওয়ান
এমভি জাহান ওয়ান
[publishpress_authors_box]

সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশের শততম জাহাজ হিসেবে নাম লিখিয়েছে ‘এমভি জাহান ওয়ান’। এর মালিক চট্টগ্রামভিত্তিক কবির গ্রুপ।

ইন্দোনেশিয়ার মেয়ারা ওয়ানতাই বন্দর থেকে প্রায় ৬০ হাজার টন কয়লা নিয়ে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে জাহাজটি। এতে বাঁশখালী সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এসএস পাওয়ারের জন্য কয়লা আনা হয়।

বুধবার সকালে জাহাজটি সরেজমিনে সার্ভে বা জরিপ করতে যান জাহাজ নিবন্ধনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান রেজিস্ট্রার অব শিপস বাংলাদেশের প্রধান ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ।

পরিদর্শন শেষে তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এর মধ্য দিয়ে কবির গ্রুপের জাহাজ এমভি জাহান ওয়ান শততম জাহাজ হিসেবে চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলে। কারণ এটি বাংলাদেশের জলসীমায় আগেই প্রবেশ করেছে, আমরা এটি পরিদর্শনও করেছি। সে হিসেবে এমভি জাহান ওয়ান বাংলাদেশের সমুদ্রগামী জাহাজের বহরে শততম।”

আরও দুটি প্রতিষ্ঠান প্রাক-নিবন্ধন করলেও তাদের জাহাজ এখনও হস্তান্তর হয়নি জানিয়ে ক্যাপ্টেন বলেন, “সেই দুটি জাহাজ যুক্ত হলে জাহাজের সংখ্যা ১০২টিতে উন্নীত হবে।”

এর আগে শততম জাহাজ হিসেবে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল দেশের শীর্ষ তিন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। জাহাজগুলো হলো মেঘনা গ্রুপের ‘মেঘনা সেঞ্চুরি’, কবির গ্রুপের ‘এমভি জাহান ওয়ান’ এবং ভ্যানগার্ড গ্রুপের ‘রয়েল আরাকান’।

শেষ পর্যন্ত শততম জাহাজ হিসেবে চূড়ান্ত নিবন্ধন পায় কবির গ্রুপের জাহান ওয়ান।

এমভি জাহান ওয়ান নামে নিবন্ধনের আগে জাহাজটি ছিল পানামার পতাকাবাহী। তখন নাম ছিল ‘এমভি নর্ড প্যাসিফিক’।

১৯৯ মিটার দীর্ঘ ও প্রায় ৬০ হাজার টন পণ্য পরিবহন সক্ষমতার জাহাজটি তৈরি হয়েছে ২০১৮ সালে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাহাজটি কেনার পর বাংলাদেশি পতাকাবাহী হিসেবে চলাচলের জন্য আবেদন করে কবির গ্রুপ।

কবির গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, “প্রতিযোগিতার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের ১০০টি সমুদ্রগামী জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে লাল-সবুজের পতাকা ওড়াবে। এসব জাহাজের মাধ্যমে দেশি নাবিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে, পণ্য পরিবহন বাবদ ইনস্ট্যান্ট ডলার আয় করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন রিজার্ভে যোগ করেছে।”

রেজিস্ট্রার অব বাংলাদেশ শিপসের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৯৯টি জাহাজ দপ্তরের স্থায়ী নিবন্ধন পেয়েছে। এর বাইরে তিনটি জাহাজ অস্থায়ী নিবন্ধন নিয়েছে। সেগুলো হলো, মেঘনা সেঞ্চুরি, এমভি জাহান ওয়ান ও রয়েল আরাকান।

এই তিনটি চূড়ান্ত নিবন্ধন পেলে দেশে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা ১০২টিতে উন্নীত হবে।

প্রতিষ্ঠানটির তালিকা অনুযায়ী, শিল্প গ্রুপগুলোর মধ্যে আকিজ গ্রুপের ১০টি, এইচআর শিপিংয়ের আটটি, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সাতটি, ভ্যানগার্ড গ্রুপের সাতটি এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ছয়টি জাহাজ পণ্য পরিবহন করছে।

এছাড়া বিএসএ শিপিংয়ের তিনটি, এমআই সিমেন্টের তিনটি, ডুরিয়া শিপিংয়ের দুটি, হানিফ মেরিটাইমের দুটি, ওরিয়ন গ্রুপের একটি, মবিল-যমুনা গ্রুপের একটি, পিএনএন শিপিংয়ের একটি, অ্যাডভান্সড শিপিংয়ের একটি, ডরিন শিপিংয়ের একটিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জাহাজ আছে।

নিবন্ধিত জাহাজের মধ্যে নয়টি কনটেইনারবাহী, যার সবগুলো এইচআর লাইনের। তিনটি এলপিজি, কেমিক্যাল ট্যাংকার পাঁচটি, অয়েল ট্যাংকার সাতটি ও কার্গো জাহাজ ৭৭টি।

বাংলাদেশি পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজের বেশিরভাগই ৫০-৫৫ হাজার টন পণ্য পরিবহন সক্ষমতার। এর বাইরে রয়েছে কন্টেইনারবাহী ফিডার জাহাজ, যা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে কনটেইনার পরিবহনে নিয়োজিত।

তেল পরিবহনকারী অনেক বড় একটি জাহাজ রয়েছে মেরা গ্রুপের; যার পরিবহনক্ষমতা এক লাখ টন। এ ছাড়া রয়েছে এলপিজি পরিবহনকারী বেশকিছু জাহাজ যুক্ত হয়েছে এই বহরে। তারমধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপের জাহাজ অন্যতম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত