দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তৃতীয় ইউনিটটিও বন্ধ হয়ে গেল।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট আগে থেকে বন্ধ ছিল। সচল তৃতীয় ইউনিটটিতে উৎপাদন সোমবার যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায় বলে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানিয়েছেন।
বাংলাদেশে দিনে বিদ্যুতের চাহিদা এখন ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মতো। বড় পুকুরিয়ার তৃতীয় ইউনিট থেকে থেকে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল বলে জানান আবু বক্কর সিদ্দিক।
বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা দিয়ে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল।
তাদের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তি আগামী বছর শেষ হবে। চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদন সচল রাখতে ছোট ধরনের মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও কোম্পানি তা করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।
“যার কারণেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশে প্রায়ই ত্রুটি দেখা দিলেও সঠিকভাবে মেরামত করা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কাজ ব্যাহত হয়েছে,” বলেন এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে প্রয়োজন হয় দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প, যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট থাকায় যেকোনো সময় বন্ধের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প হিসাবে একটি ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প দিয়ে চলে আসছিল এর উৎপাদন কার্যক্রম। ফলে মাঝে মধ্যেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হতো উৎপাদন।
বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে একাধিকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর মেরামতের মাধ্যমে তৃতীয় ইউনিটটি চালু করা হলে দুদিনের মাথায় আবারও সোমবার সন্ধ্যায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায়।
প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। তারা দু’সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। চীন থেকে মেশিন এলেই উৎপাদন শুরু করা যাবে।