ফুটবল ম্যাচ, নাকি হলিউড সিনেমার শ্যুটিং! লিসবনের এস্তাদিও দা লুজে হল কোনটা? রোমাঞ্চটা কিন্তু একই। তিনটি পেনাল্টি, আত্মঘাতী গোল, লাল কার্ড, দুই গোলরক্ষকের ভুল, রেফারির বিতর্ক তৈরি করা সিদ্ধান্তের ম্যাচে গোল হল ৯টা। হল একটি হ্যাটট্রিকও।
প্রথম আধা ঘণ্টায় ৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়া বার্সেলোনা ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে রাফিনিয়ার গোলে বেনফিকাকে হারাল ৫-৪ ব্যবধানে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হান্সি ফ্লিকের দল লিখল প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত মহাকাব্য। স্কোর আর নাটকীয় সব মোড়ই বলছে খ্যাতিমান কোন পরিচালকের সিনেমাও হতে পারত এটা।
ফল
লিভারপুল ২ : ১ লিল
বেনফিকা ৪ : ৫ বার্সেলোনা
আতলেতিকো ২ : ১ লেভারকুসেন
বোলোনিয়া ২ : ১ ডর্টমুন্ড
ব্রুগা ০ : ০ জুভেন্টাস
আতালান্তা ৫ : ০ স্টুর্ম গ্রাৎস
মোনাকো ১ : ০ ভিলা
চ্যাম্পিয়নস লিগের অপর ম্যাচে লিলকে ২-১ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। অলরেডদের হয়ে একটি করে গোল মো সালাহ ও হার্ভি এলিয়টের। সালাহর এটা ৫০তম ইউরোপিয়ান গোল। টানা সপ্তম জয়ে শীর্ষ আটে থেকে শেষ ষোল নিশ্চিত করে ফেলেছে তারা।
সেরা আটে থেকে শেষ ষোল নিশ্চিত হয়েছে বার্সারও। তবে মোনাকোর কাছে ১-০ গোলে হেরে অপেক্ষা বেড়েছে অ্যাস্টন ভিলার। লেভারকুসেনকে ২-১ গোলে হারিয়ে তিন নম্বরে উঠে এসেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭ ম্যাচ শেষে লিভারপুলের পয়েন্ট ২১, বার্সার ১৮, আতলেতিকো মাদ্রিদের ১৫, আতালান্তার ১৪।
লিসবনের এস্তাদিও দা লুজে গ্রিসের স্ট্রাইকার ভাঙ্গেলিস পাভলিদিসের হ্যাটট্রিকে বার্সার বিপক্ষে ৩০ মিনিটে ৩-১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বেনফিকা। দ্বিতীয় মিনিটেই গোলের শুরুটা করেন পাভলিদিস।
১৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান রবার্ট লেভানদোস্কি। আলেহান্দ্রো বাল্দে বক্সে ফাউলের শিকার হলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। ২২তম মিনিটে গোলরক্ষক ওজসিচ সেজনির ভুলে বেনফিকাকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেন পাভলিদিস। বক্সের অনেকটা বাইরে এসে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে সতীর্থ বাল্দের পায়ে মেরে বসেন পোলিশ এই গোলরক্ষক!
Yes.
— Did FC Barcelona rob a team today? (@DidUKnow_Futbol) January 21, 2025
Yamal with a generational dive, referee still awards the penalty. Barca scores, making it 4-3 against Benfica and keeping the comeback alive. VAR as usual remains asleep when the Catalans are in action pic.twitter.com/cHcEJzRqrY
গোলরক্ষক ওজসিচ সেজনিই বক্সে আকতুরকোগলুকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বেনফিকা। বল জালে জড়িয়ে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ভাঙ্গেলিস পাভলিদিস। এর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৬ ম্যাচে ৪০২ মিনিট খেলে ১ গোল করা এই ফরোয়ার্ড হ্যাটট্রিক করেন ৩০ মিনিটেই।
৬৪তম মিনিটে বেনফিকার গোলরক্ষক আনাতোলি ত্রুবিনের ভুলে ব্যবধান কমায় বার্সা। তার গোল কিকে বক্সের ঠিক বাইরেই থাকা রাফিনিয়া মাথা পেতে দিলে বল জড়ায় জালে।
৬৮ মিনিটে রোনালদ আরাউহোর আত্মঘাতী গোলে আবারও ৪-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বেনফিকা। বক্সের বাঁ দিক থেকে প্রতিপক্ষের বাড়ানো বল স্লাইড করতে গিয়ে নিজেদের জালে জড়ান তিনি।
৭৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান লেভানদোস্কি। তবে ইয়ামাল বক্সে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন নাকি ডাইভ দিয়েছিলেন বিতর্ক আছে এ নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে অনেকে লিখেন, ‘ডাকাতির শিকার বেনফিকা’।
এরিক গার্সিয়া ৮৬ মিনিটে পেদ্রির ক্রসে দারুণ হেডে ৪-৪ সমতা ফেরান ম্যাচে। ইনজুরি টাইমের পঞ্চম মিনিটে বার্সেলোনার বক্সে বেনফিকার একজন পড়ে গেলে পেনাল্টির জোরাল আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি।
এরপরই ষষ্ঠ মিনিটে রাফিনিয়ার গোলে নাটকীয় জয় বার্সার। ফেররান তরেসের উঁচু করে বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে অসাধারণ গোলটি করেছিলেন রাফিনিয়া। অষ্টম মিনিটে বেঞ্চে থাকা আর্থার কাবরালের লাল কার্ড হতাশাই বাড়িয়েছেন বেনফিকার।