ভারতের উড়িশ্যার এক নারী বাংলাদেশের ভোটার হতে গিয়ে আটক হলেন বরিশালের উজিরপুরে। পরিচয় জালিয়াতির মাধ্যমে এনআইডি কার্ড তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছিলেন তিনি। ভোটার করার চেষ্টায় জড়িত থাকায় তার স্বামী ও স্বামীর ভাইকেও আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ এ তথ্য জানান।
আটক ভারতীয় নারীর নাম সাবিত্রী বড়িয়াল। তার বাড়ি উড়িশ্যার বালাঙ্গির জেলার পাট নগর থানায়। সেখানকার বনকা বিহার গ্রামের প্রয়াত শ্যামসুন্দর বড়িয়ালের মেয়ে তিনি।
তার স্বামী এবাদুল হক বরিশালের উজিরপুরের সাতলা গ্রামের প্রয়াত সালাম হাওলাদারের ছেলে। এই ঘটনায় এবাদুলের ভাই এনামুল হককেও আটক করেছে পুলিশ।
ওসি জাফর আহমেদ জানান, এবাদুল সাত বছর আগে চোরাই পথে ভারতে গেলে সেখানেই সাবিত্রীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির পাঁচ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। এবাদুল ভারতের উড়িশ্যা থেকে দুই মাস আগে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চোরাই পথে বাংলাদেশের আসেন।
তিনি জানান, বিয়ের পর সাবিত্রীর নামকরণ হয় হালিমা খাতুন নামে। এই নামেই ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরির প্রচেষ্টা চলছিল। ওই নারী উজিরপুরের ভোটার হওয়ার জন্য পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠি উপজেলার বাসিন্দা বাদশা মিয়া ও আনোয়ারা বেগমেকে বাবা-মা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আবেদনপত্রে তাদের জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করেছেন।
ওসি জানান, ভুয়া পিতামাতা পরিচয় দেওয়া বাদশা মিয়া ও আনোয়ার বেগম এবাদুলের বোনের শ্বশুর-শাশুড়ি।
বরিশাল জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সী জানান, বুধবার উজিরপুর উপজেলায় নতুন ভোটার যাচাই-বাছাই ও ফিঙ্গারিং কার্যক্রম শুরু হয়। বৃহস্পতিবার ওই কার্যক্রম তদারকি করতে তিনি ওই উপজেলায় যান। সাক্ষাৎকারকালে ওই নারীর কথায় সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে সাবিত্রী এদেশের নাগরিক নয় বলে স্বীকার করেন। পরে তাকেসহ তিনজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ওই নারীকে ভোটার করতে উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুন অর রশিদ প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। তবে চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার জানান, নির্বাচনী তথ্য কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য স্বাক্ষর দেওয়ার পরেই তিনি স্বাক্ষর দিয়েছেন।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি জাফর আহমেদ জানিয়েছেন, ভারতীয় ওই নারীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।