বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এ এম এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে। সংগঠনের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করায় তার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ।
আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি পেলেও সাবেক সংসদ সদস্য খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে এখনও বহাল রয়েছেন।
রবিবার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে খোকনকে অব্যাহতির কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। বারের নির্বাচনে আরও তিন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারা দলীয় সিদ্ধান্তের আলোকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন।
খোকন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ৬ এপ্রিল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকরা জরুরি বৈঠক বসে।
সেই বৈঠকে সংগঠনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দায়িত্ব গ্রহণ করাকে ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী’ কাজ আখ্যায়িত করে খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
গত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৪টি পদের মধ্যে সভাপতিসহ চারটি পদে জয় পায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। অন্যদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটে। ৯ মার্চ ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের।
ঘোষিত ফলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল থেকে সভাপতি পদে মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং সদস্য পদে সৈয়দ ফজলে এলাহী, ফাতিমা আক্তার ও মো. শফিকুল ইসলাম শফিক বিজয়ী হন।
অন্যদিকে সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ প্যানেল থেকে বিজয়ী হন ১০ আইনজীবী। তারা হলেন সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক, সহসভাপতি রমজান আলী শিকদার ও দেওয়ান মো. আবু ওবাঈদ হোসেন সেতু, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল হুদা আনসারী, সহসম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির ও মোহাম্মদ হুমায়ন কবির।
২৭ মার্চ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী এবং মহাসচিব কায়সার কামাল নির্বাচিতদের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়।
তবে সেই চিঠি আমলে না নিয়ে ৪ এপ্রিল সভাপতির দায়িত্ব নেন মাহবুব উদ্দিন খোকন।
দায়িত্ব গ্রহণের আগে সেদিন দুপুরে মতবিনিময় সভা করেছিলেন ব্যারিস্টার খোকন। এসময় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে চিঠি দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভোট বর্জন করতে দেখেছি, কিন্তু ভোট গণনা বর্জন করার নজির কোথাও দেখিনি।”
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছিলেন, “ভোট গণনার সময় পাহারা দিলে আমরা ১২টার মতো পদে বিজয়ী হতে পারতাম।”