শূন্য হাতেই শেষ পর্যন্ত মৌসুম শেষ করতে হলো আবাহনীকে। আকাশ নীল দলের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতার সম্ভাবনা শেষ হয়েছিল লিগের মাঝ পথে এসে। এর আগে স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালেও আবাহনী হেরেছিল বসুন্ধরা কিংসের কাছে। এবার সেই বসুন্ধরা কিংসের কাছেই আরেকটি সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হলে ফেডারেশন কাপ থেকে।
মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে আবাহনীকে ৩-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠল বসুন্ধরা কিংস। আগামী ২২ মে ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের প্রতিপক্ষ মোহামেডান। এই জয়ে ট্রেবলের মঞ্চেও উঠে গেল বসুন্ধরা কিংস।
বসুন্ধরা কিংসের ১টি করে গোল করেছেন রবসন রবিনহো, দরিয়েলতন গোমেজ ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
এবারের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে দুই বারের দেখায় বসুন্ধরা কিংসকে একবারও হারাতে পারেনি আবাহনী। স্বাধীনতা কাপে হেরেছিল বসুন্ধরা কিংসের কাছে ৪-০ গোলে। ৪ মে প্রিমিয়ার লিগে যাও বা ২-১ গোলের হারের ম্যাচে একটু লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল আবাহনীকে। কিন্তু মঙ্গলবার সেই লড়াইটাও চোখে পড়েনি ম্যাচে।
বরং এক রবসন রবিনহোকে সামলাতেই হিমশিম খেয়েছে আবাহনীর ডিফেন্ডাররা। শুরুর ২০ মিনিটে একটাই মাত্র সফল আক্রমণ ছিল বসুন্ধরা কিংসের। আরও স্পষ্ট করে বললে রবসনের। আর সেই আক্রমণেই পিছিয়ে পড়া আবাহনীর।
মাঝ মাঠ থেকে পাওয়া বল নিয়ে প্রথমে বক্সে ঢোকেন রাকিব। কিন্তু তিনি পোস্টে শট না নিয়ে বাড়িয়ে দেন রবসনকে। এরপরই চিরায়ত ব্রাজিলিয়ান ঝলক দেখালেন রবসন। তিন ডিফেন্ডার সামনে। কিন্তু দারুণ বুদ্ধিমত্তায় এক ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক গলিয়ে বল জড়ান জালে।
আবাহনীর আক্রমণে ওয়াশিংটন ব্রান্ডো, কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট অথবা পাপন সিং- মাঝে মধ্যে দুয়েকবার বল নিয়ে ঢুকেছেন বসুন্ধরা কিংসের বক্সে। কিন্তু নির্বিষ আক্রমণে গোলের দেখা পাননি। বরং প্রতি আক্রমণ থেকে বেশ সফল হয়েছে বসুন্ধরা কিংস।
আবাহনীর মাঝ মাঠ ছিলো এলোমেলো। জামাল ভূঁইয়াকে দীর্ঘদিন পর একাদশে রাখেন কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। কিন্তু জামালও দলের জয়ে কোনও ভূমিকা রাখতে পারেননি। ৬০ মিনিটে তো এই মিডফিল্ডারকে বাধ্য হয়ে তুলেই নিলেন কোচ।
ম্যাচের ৭১ মিনিটে বসুন্ধরা কিংস ব্যবধান দ্বিগুণ করেছেন দরিয়েলতন গোমেজের গোলে। এই গোলের পেছনেও বড় অবদান রবসনের। বাম প্রান্ত থেকে রবসন ক্রস ফেলেন কর্ণারের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা রাকিব হোসেনের উদ্দেশ্যে। আবাহনীর ডিফেন্ডাররা যেন ধরেই নিলেন ওই বলে কোনও গোল হবে না। এরপরই রাকিব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে আরেকটি ক্রস ফেলেন বক্সে। চোখের নিমিষেই দরিয়েলতন দৌড়ে এসে হেডে বল জড়ান জালে। শুধু আবাহনীর ডিফেন্ডাররাই নন, গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলও যেন বোকা হয়ে গেলেন!
ম্যাচের যোগ হওয়া সময়ে বদলি ইব্রাহিম করেছেন তৃতীয় গোল। বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক নেন রবসন। সেই বল প্রথম চেষ্টায় ধরতে পারেননি আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল। ফিরতি বলে প্লেসিংয়ে ৩-০ করেন ইব্রাহিম।