রেকর্ড তাদের নখদর্পনে। আর সব গৌরবের মুহূর্তগুলোকে বসুন্ধরা কিংসের মতো কেউ রাঙাতে পারে না। চারবারের ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নরা ৩০ মার্চ লিগে নিজেদের শততম ম্যাচ খেলতে নামছে রাজশাহী স্টেডিয়ামে। ব্রাদার্সের বিপক্ষে এই ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখতে কিংস ‘শততম ম্যাচ’ নামাঙ্কিত আলাদা জার্সি পরেই নামবে মাঠে।
চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে প্রমোশন পেয়ে বসুন্ধরা কিংস ২০১৮-১৯ মৌসুম থেকে খেলছে দেশের শীর্ষ লিগে। প্রথমবারেই তারা আবাহনীর দাপট খর্ব করে জেতে লিগ শিরোপা। প্রিমিয়ারে আবির্ভাবের পর এখন পর্যন্ত লিগের শ্রেষ্ঠত্ব তাদের হাতছাড়া হয়নি। মাঝে করোনাভাইরাসের একটি লিগ স্থগিত হয়ে গেলেও বাকি চার প্রিমিয়ার লিগের ট্রফিই তাদের দখলে। দেশের সেরা ফুটবলারদের তো বটেই, পাশাপাশি বড় বিদেশি তারকা এনে তারা চমক দিয়েছে ঢাকার ফুটবলে। প্রথমবার এনেছিল কোস্টারিকান দানিয়েল কলিনদ্রেসকে। উদ্দেশ্য ছিল, রাশিয়া বিশ্বকাপ খেলা এই ফুটবলারকে দিয়ে মাঠে দর্শক ফেরানো। সেটা কিছুটা করতে পেরেছে তারা। ওই ধারা বজায় রেখে কিংসের ফুটবল এখন সুরভিত হচ্ছে ব্রাজিলিয়ান রবসন রোবিনহো-দোরিয়েল্তনের পায়ে।
২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংসের প্রিমিয়ার লিগে অভিষেক হয় শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। সেটা জিতেছিল ১-০ গোলে। এ পর্যন্ত প্রিমিয়ারে ৯৯ ম্যাচে তারা ৮৪টি জিতেছে, ১০টি ড্র করেছে। হেরেছে মাত্র ৫টি। এর মধ্যে বিস্ময়কর হলো, ৬ বারের পেশাদার লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী কখনও হারাতে পারেনি কিংসকে। ৯ ম্যাচের ৭টিই হেরেছে আকাশি-নীলরা, ড্র করেছে মাত্র ২টি। আরেক জায়ান্ট মোহামেডানেরও কোনও জয় ছিল না এই মৌসুমের আগে। চলমান লিগে একটি ম্যাচ হারার আগ পর্যন্ত বসুন্ধরা কিংস সাদাকালোর বিপক্ষে ৮ ম্যাচে ৬টি জয় ও ২টি ড্র করেছে।
লিগে শততম ম্যাচ খেলা কিংসের জন্য বড় গৌরবের। বসুন্ধরা কিংস প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান মনে করেন, “শিরোপা হয়তো অনেক বড় ব্যাপার তবে পঞ্চাশ বা শততম ম্যাচ আমাদের ক্লাবের জন্য ছোট ছোট মাইলস্টোন। যাত্রাপথের ছোট অর্জনগুলোকেও আমরা বিশেষভাবে মনে রাখতে চাই। লিগ ছাড়াও কিংসের সব ম্যাচের হিসাব-নিকাশ আমাদের ক্লাবে সংরক্ষিত আছে। শততম ম্যাচে আমাদের আলাদা জার্সি থাকবে এবং সব ম্যাচের ফলাফল দিয়ে একটা বুলেটিন বের করা হবে।”
এরকম উদ্যোগ নেওয়ার কথা ছিল দেশের দুই ঐতিহ্যবাহী দল আবাহনী ও মোহামেডানের। কিন্তু নিজেদের ঐতিহ্যের প্রতি তারা সুবিচার করেনি বলেই ফুটবল আজ পিছিয়ে। কিংস এই ভুল করছে না, তারা মাঠের খেলাকে সময়ের সঙ্গে রাঙিয়ে তুলছে বিশেষভাবে। একুশে ফেব্রুয়ারিসহ বিশেষ জাতীয় দিবসে তারা আলাদা জার্সি পরে মাঠে নামার রীতি চালু করেছে।