রক্ষণ সামলানো তার প্রথম কাজ। তবে সুযোগ পেলে দলের প্রয়োজনে গোল করেন তপু বর্মণ। বাংলাদেশ ২.০ চ্যালেঞ্জ কাপে বসুন্ধরা কিংস ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর একটা গোলের খুবই প্রয়োজন ছিল। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে কাঙ্খিত সেই গোল করে দলকে সমতায় ফেরান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার।
তপুর গোলেই মূলত আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠে পুরো বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। জেগে ওঠে বসুন্ধরা কিংসের সব ফুটবলার। এরপর তো ৩-১ গোলের জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েই মাঠ ছেড়েছে বসুন্ধরা কিংস।
এই একটি গোলের সুবাদে ম্যাচের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন তপু। গোলটা তিনি পেতে চেয়েছিলেন মালদ্বীপের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ থেকেই। কিন্তু গত ১৩ ও ১৬ নভেম্বর দুটো ম্যাচেই গোল পাননি তপু।
অবশেষে ঘরোয়া ফুটবলে পেলেন গোলের দেখা। প্রায় দেড় বছর আগে গত লিগে চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন তপু। শুক্রবার দলের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জ্বলে ওঠার পর সেই গোলটা উৎসর্গ করেছেন এক বছর বয়সী ছেলে সাগ্নিক বর্মণকে। তপুর ছেলের জন্মদিন ছিল ১৫ নভেম্বর। কিন্তু ওই সময়ে গোল পাননি তিনি।
তাইতো মোহামেডানকে হারানোর ম্যাচে গোলের পর পুরস্কার হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত তপু বললেন, “ গত ১৫ নভেম্বর ছিল আমার একমাত্র ছেলের জন্মদিন। আমি চেয়েছিলাম মালদ্বীপের বিপক্ষে ১৩ তারিখ গোল করতে। পারিনি সেদিন। এরপর ১৬ নভেম্বরও পারিনি। আজ গোল করতে পেরেছি। এই গোলটা ছেলেকে উৎসর্গ করেছি।”
ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও কখনও হাল ছাড়েননি তপু, “ পিছিয়ে পড়েও আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে এই ম্যাচে আমরাই জিতব। কারণ দ্বিতীয়ার্ধে আমরা প্রাধান্য ছড়িয়ে খেলেছি। এবং সুযোগ তৈরি করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে যে এটাই বাস্তবতা। যারা ভালো খেলবে তারাই জিতবে।”
একটু চাপে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতায় খুশি তপু, “এটা ফাইনাল । নতুন টুর্নামেন্ট। প্রথম গোল খাওয়ার পর একটু চাপে ছিলাম। তারপরও যেভাবে আমরা ম্যাচে ফিরেছি সেটা টিম ওয়ার্ক। আমরা প্রত্যেককে প্রত্যেকে বিশ্বাস করি। এজন্য আমরা ফিরে এসেছি এবং সুযোগ পেয়ে গোল করেছি।”
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে টানা ৩ ম্যাচ হেরেছিল ভ্যালেরি তিতের বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু ঘরোয়া ফুটবলে এসে জয়ে ফেরায় খুশি কোচ, “যদিও এএফসিতে হেরেছি। কিন্তু সেখানে ভালো খেলেছি। তবে আজ জিতে খুব ভালো লাগছে আমার।”
দর্শকদের মাঠের মধ্যে ছোড়া স্মোক ফ্লেয়ারে ম্যাচে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে মনে করেন তিনি, “স্মোক ফ্লেয়ারের জন্য ম্যাচে কোনও প্রভাব পড়েনি। কারণ এই সময় আমরা প্রাধান্য ধরে রেখে খেলছিলাম।”
জয় দিয়ে মৌসুম শুরু করলেও সব ভুলে সামনে তাকাতে চান রোমানিয়ান কোচ, “আমি আজকের ম্যাচ পুরো ভুলে যেতে চাই। কাল থেকে নতুন করে সব শুরু হবে। লিগ নিয়ে ভাববো। আগে ট্রেবল জিতেছিল এই দল। আমার চেষ্টা থাকবে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা।”
দলের জয়ে বড় অবদান রাখা মিগেল দামাসেনো বলেন, “এটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল। আজ আমি বেশি খুশি । কারণ দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে ২টি অ্যাসিস্ট ও একটা গোল করেছি। এএফসি কাপে বাজে খেলেছিলাম কারণ ব্রাজিলে ছিলাম। এসেই খেলাটা কঠিন ছিল আমার জন্য। অনেক দিন ম্যাচে ছিলাম না। কিন্তু এখন ট্রেনিং করে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।”