পয়েন্ট টেবিলের আরও উঁচুতে নিজেদের তুলে নেওয়ার সুযোগ ছিল বসুন্ধরা কিংসের। তুলনামূলক দুর্বল শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে জয়টাই অনুমিত ছিল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নদের। কিন্তু নাটকীয়তায় ভরা ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে কোনও রকমে ১-১ গোলে ড্র করে মাঠ ছেড়েছে বসুন্ধরা কিংস।
শেখ রাসেলের গোলটি করেছেন কোডাই ইডা। বসুন্ধরা কিংসের গোলটি রাকিব হোসেনের।
শুক্রবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস প্রথমার্ধে একাধিক সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু তা থেকে গোল করতে পারেননি রবসন রবিনহো, দরিয়েলতন গোমেজ, রাকিবদের কেউ। কখনো বাধা হয়ে দাড়িয়েছেন শেখ রাসেলের ডিফেন্ডাররা। কখনও তাদের গোলরক্ষক মিতুল মারমা।
এরই মাঝে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে অহেতুক লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় অস্কার ব্রুজোনের আক্রমণভাগের বড় অস্ত্র দরিয়েলতন গোমেজকে।
রবসনের নেওয়া কর্ণার থেকে বল রিসিভের সময় দরিয়েলতনের সঙ্গে মাথায় ঠোকাঠুকি হয় শেখ রাসেলের গানিউ আতান্দার। গানিউকে অহেতুক বল ছাড়াই আঘাত করেন দরিয়েলতন।
যদিও বিষয়টা শুরুতে নজর এড়িয়ে যায় ম্যাচের প্রধান রেফারি ভূবনমোহন তরফদারের। এরপর তিনি ঘটনাটা সহকারী রেফারির কাছ থেকে জানতে পারেন। ঘটনাটি আরও নিশ্চিত হতে ম্যাচের চতুর্থ রেফারির সঙ্গেও দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন ভূবনমোহন। সহকারী রেফারিদের সঙ্গে প্রায় মিনিট পাঁচেকের আলোচনার পর প্রধান রেফারি লাল কার্ড দেখান দরিয়েলতনকে।
কিন্তু সিদ্ধান্তটি মোটেও মানতে পারেননি বসুন্ধরা কিংসের ফুটবলাররা। বিশেষ করে একটু অবাকই হয়ে যান দরিয়েলতন নিজে। এক পর্যায়ে রবসন, মাসুক মিয়া জনি ও দরিয়েলতন রেফারিকে ঘিরে ধরেন। সোহেল রানা ও রাকিব সহকারী রেফারির সঙ্গে কথা বলতে ছুটে যান। এক সময় সব ফুটবলররা এসে সহকারী রেফারি, রেফারি ও চতুর্থ রেফারিকে ঘিরে ধরেন। দলের ম্যানেজার ওয়াসিম উজ্জামান তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও কিছুতেই মন গলে না রেফারির।
ম্যাচের বাকি ৫১ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছে বসুন্ধরা কিংসকে।
দরিয়েলতনকে লাল কার্ড দেখানোর পাশাপাশি গানিউকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
এরপর অবশ্য গোল খেতে যাচ্ছিল বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ৪৪ মিনিটে সুমন রেজার শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। আর বিরতির আগে রবসনের শট মিতুল মারমা আটকে দেন দারুণ দক্ষতায়।
একে তো ১০ জন নিয়ে খেলছে বসুন্ধরা কিংস। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো গোল খেয়ে বসে তারা। ৪৭ মিনিটে কোডাই ইডার গোলে এগিয়ে যায় শেখ রাসেল। মাঝ মাঠ থেকে রবসন রবিনহোর কাছ থেকে বল কেড়ে নেন সুমন রেজা। এরপর সুমন রেজার থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢোকা কোডাই চলন্ত বলেই পোস্টে বাড়িয়ে দেন। অসাধারণ ফিনিশিংয়ে বল ঢোকে জালে (১-০)।
গোল শোধে তখন মরিয়া বসুন্ধরা কিংস। একের পর এক তেড়েফুড়ে আক্রমণ করতে থাকে। ওই আক্রমণের ফল রাকিবের গোল। ৬৮ মিনিটে রবসনের দারুণ এক ব্যাক হিল থেকে মিগেল দামাসেনো পোস্টে নেন শট। কিন্তু জোরালো শটটি মিতুল মারমার হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। ফিরতি বলে সামনে দাঁড়ানো রাকিব আলতো প্লেসিংয়ে ১-১ করেন। বাকি সময়ে অবশ্য চেষ্টা করেও কেউ গোল পায়নি।
এই ড্রয়ে ৯ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি শীর্ষে রইলো বসুন্ধরা কিংস। ১০ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র।