ইসলামিক ধারার পাঁচটি ব্যাংকে তারল্য সংকটের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার পেছনে ভয়ভীতির কোনও বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘‘সেই ভয় থাকলে আমি অর্থসচিবের চাকরি ছেড়ে এখানে আসতাম না।’’
বুধবার ঢাকার মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণার অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন গভর্নর।
একটা সময়ে দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে আর্থিক অবস্থার দিক দিয়ে ভালো ছিল ইসলামিক ধারার ব্যাংকগুলো। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ খাতের কয়েকটি ব্যাংকে স্থায়ী তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেই ব্যাংকগুলোকে নিয়মিতভাবে তারল্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
এ নিয়ে প্রশ্ন করেন একটি ইংরেজি দৈনিকের সাংবাদিক। তার প্রশ্ন- ‘‘দেশের ৫টি ইসলামিক ব্যাংকে গত দুই বছর ধরে তারল্য সংকট চলছে। এই ব্যাংকগুলোর চলতি হিসাবেও ঘাটতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেসব ব্যাংককে প্রতিনিয়ত তারল্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এই সহায়তা কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে?’’
সংকটে থাকা এই ৫টি ব্যাংক একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলছে উল্লেখ করে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘‘এই ব্যাংকগুলোর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে আপনারা (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেননি। আপনি কি এই ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কোনও কারণে শঙ্কিত? যেহেতু বড় একটি গোষ্ঠি এসব ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে। তারা আপনার চেয়ার হয়তো নড়িয়ে-চড়িয়ে দিতে পারে।’’
এ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘‘প্রশ্নগুলো কিছুটা পরিচ্ছন্ন (ডিসেন্ট) হলে ভালো হয়। আমরা সবাই সবার প্রতি সম্মান রেখে প্রশ্নগুলো করি। তাহলে আমার মনে হয় ভালো হয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার বক্তব্য খুব পরিস্কার। আমি অর্থসচিব ছিলাম। আমার চাকরি আরও এক বছর ৩ মাস ছিল। আমি চাকরি ছেড়ে এখানে (বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে) এসেছি।
‘‘এটা একটি চুক্তিভিত্তিক চাকরি। আমি যেকোনো সময় এক মাসের নোটিশ দিয়ে চাকরি ছেড়ে দিতে পারি। সরকারও আমাকে বলতে পারে তুমি চলে যাও। অতএব এখানে চেয়ার ছাড়ার কোনো ভয় নাই। সেই ভয় থাকলে আমি অর্থসচিবের চাকরি ছেড়ে এখানে আসতাম না। এটা আপনারাও (সাংবাদিকরা) খুব ভালো জানেন।’’
‘‘আমি এ সমস্ত ভয়-টয় পাই না। এবং আমাকে অনেকে ভয় দেখালেও কোনও লাভ নাই। ভয় পাওয়ার জিনিসটা আমাদের মধ্যে নাই। কারণ, আমরা ওইভাবে ট্রেইন্ড আপ।’’